Dawood Ibrahim: পুলিশ কনস্টেবলের ছেলে থেকে ডন, দাউদের সম্পত্তির পরিমাণ জানলে চোখ কপালে উঠবে!

Dawood Ibrahim: পুলিশ কনস্টেবলের ছেলে হয়েও ছোট থেকেই চুরি, তোলাবাজি-সহ নানান অপরাধমূলক কাজে হাত পাকিয়েছিলেন দাউদ। ধীরে-ধীরে তিনি অপরাধ জগতে একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। গড়ে তোলেন নিজস্ব কোম্পানি, যার নাম দেন 'ডি কোম্পানি'। মুম্বইয়ে ডি কোম্পানির সূত্রপাত হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাকিস্তান, দুবাই-সহ বিশ্বের প্রায় অর্ধ শতাধিক দেশে জাল ছড়িয়েছিল। তারপর কালো ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলে দাউদ হয়ে ওঠেন আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন।

Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2023 | 7:27 PM

করাচি: আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমকে নাকি বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাকিস্তানের করাচিতে এক হাসপাতালে ভর্তি। এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে। আবার অনেক সোশ্যাল মিডিয়ায় দাউদের মৃত্যুর খবরও রটে গিয়েছে। এই সকল জল্পনা যখন তুঙ্গে তখন স্বাভাবিকভাবেই দাউদের উত্তরসূরী, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আলোচনায় উঠে এসেছে মুম্বইয়ের ডোংরি বস্তি থেকে ডন হয়ে ওঠার কাহিনি। দাউদের ডন হয়ে ওঠা থেকে বিপুল সম্পত্তির পরিমাণ একনজরে দেখে নেওয়া যাক…

১৯৫৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর মুম্বইয়ের রত্নগিরিতে জন্ম দাউদের। ‘বড়দিন’-এর পরদিন জন্মানো দাউদের অল্প বয়স থেকেই বড় হওয়ার আকাঙ্খা ছিল। তাই পুলিশ কনস্টেবলের ছেলে হয়েও ছোট থেকেই চুরি, তোলাবাজি-সহ নানান অপরাধমূলক কাজে হাত পাকিয়েছিলেন দাউদ। ধীরে-ধীরে তিনি অপরাধ জগতে একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। গড়ে তোলেন নিজস্ব কোম্পানি, যার নাম দেন ‘ডি কোম্পানি’। মুম্বইয়ে ডি কোম্পানির সূত্রপাত হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাকিস্তান, দুবাই-সহ বিশ্বের প্রায় অর্ধ শতাধিক দেশে জাল ছড়িয়েছিল। তারপর কালো ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলে দাউদ হয়ে ওঠেন আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন।

বিপুল অর্থের মালিক দাউদ ইব্রাহিম

আন্ডারওয়ার্ল্ডের একটি নাম হল, দাউদ ইব্রাহিম। অপরাধজগতের এমন কোনও ব্যবসা নেই, যার সঙ্গে দাউদের নাম জড়িত নয়। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে দাউদ পতিতাবৃত্তি, জুয়া এবং মাদকের মতো ব্যবসা থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেছিলেন। অবৈধ মদ ও চোরাচালান সবই তাঁর নির্দেশেই হয়েছে। কোনও একটি ব্যবসায় লেগে থাকা দাউদের স্বভাব ছিল না। পরে রিয়েল এস্টেটের দিকেও তাঁর ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান থেকে শুরু করে ব্রিটেন, সৌদি আরব-সহ অন্যান্য দেশেও তাঁর সম্পত্তি রয়েছে। মুম্বইয়ের রিয়েল এস্টেটে তাঁর একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকেই কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে দাউদের অনেক ফ্ল্যাট, হোটেল, রেস্তোরাঁ রয়েছে। দাউদের অন্যতম শখ দামি-দামি গাড়িতে চড়া। তাঁর কাফেলায় রয়েছে বিলাসবহুল গাড়ির সমাহার।

দাউদ ইব্রাহিমের ব্যবসা কত বড়?

আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের ব্যবসা কত বড় তা কেউ সঠিকভাবে অনুমান করতে পারেনি। ২০১৫ সালের ফোর্বসের মতে, দাউদের মোট সম্পদ ৬৭০ ডলার কোটি (৫৫,৬১০ কোটি টাকা)। তাঁর আয়ের প্রধান উৎস হিসাবে বলা হয়েছে, খুন, চোরাচালান, মুক্তিপণ, পতিতাবৃত্তি, মাদক, জুয়া, অবৈধ মদ, চোরাচালানের মতো অবৈধ ব্যবসা। ডি কোম্পানির লোকজন ছাড়াও দাউদের ব্যবসা প্রধানত তাঁর মেয়ে ও জামাই সামলান বলে খবর। যদিও বর্তমানে দাউদের ছেলে তাঁর ব্যবসার তত্ত্বাবধান করছেন। দাউদের মোট সম্পদের ৪০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও ব্রিটেনে তাঁর ৫০টির বেশি সম্পত্তি রয়েছে।

নিলাম করা সম্পত্তি

ভারত সরকার কয়েক দফায় দাউদের সম্পত্তি নিলাম করেছে। ২০১৭ এবং ২০২০ সালে ভারত সরকার দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তি নিলাম করে ডনকে হতবাক করেছিল। ২০১৭ সালে ডনের যে সম্পত্তি নিলাম করা হয়েছিল, সেগুলি মধ্যে মুম্বই-ভিত্তিক সাইফি বুরহানি আপলিফমেন্ট ট্রাস্ট দ্বারা কেনা হয়েছিল। দিল্লিতে জাইকা নামে পরিচিত তাঁর রৌনক আফরোজ রেস্তোরাঁটি ৪.৫৩ কোটি টাকায় কেনা হয়েছে। দামারওয়ালায় দাউদের সম্পত্তি বিক্রি হয়েছে ৩.৫৩ কোটি টাকায়। শবনম গেস্ট হাউস নিলামে উঠেছে ৩.৫২ কোটি টাকায়। একইভাবে ২০২০ সালে ভারত সরকার দাউদের আরও ৬টি সম্পত্তি বিক্রি করেছে। এই নিলাম থেকে ২২.৭৯ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে।