AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বিদায়কালে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’, নিজেই নিজেকে সব অপরাধ থেকে ক্ষমা করবেন ট্রাম্প!

২০১৮ সালে টুইট করে তিনি লিখেছিলেন, "আমার নিজেকে ক্ষমা করার সব অধিকার আছে। কিন্তু কেন ক্ষমা করব, যখন কিছু ভুল করিনি।"

বিদায়কালে 'ব্রহ্মাস্ত্র', নিজেই নিজেকে সব অপরাধ থেকে ক্ষমা করবেন ট্রাম্প!
প্রতীকী চিত্র
| Updated on: Jan 08, 2021 | 1:33 PM
Share

ওয়াশিংটন:  বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) হোয়াইট হাউসে আছেন আর মাত্র কয়েকটা দিন। ২০ জানুয়ারি অভিষেক জো বাইডেনের। কিন্তু তার আগে শেষবেলায় তাঁর দিকে ধেয়ে আসছে প্রশ্নচিহ্নের সম্ভার। বুধবার হোয়াইট হাউসের সামনে জড় হয়েছিলেন হাজারো ট্রাম্পভক্ত। হোয়াইট হাউসের বারান্দা থেকে ট্রাম্প ডাক দিলেন, ‘ক্যাপিটল চলো।’

তারপরেই লন্ডভন্ড গোটা ক্যাপিটল। মার্কিন কংগ্রেস রীতিমতো তছনছ করলেন ট্রাম্প সমর্থকরা। স্বাভাভিক ভাবেই এই ঘটনা প্রসঙ্গেও প্রশ্নচিহ্ন উঠতে শুরু করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তাই মসনদ ছাড়ার আগে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিজের উপরই প্রয়োগের ফন্দি এঁটেছেন ট্রাম্প। উপদেষ্টাদের ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নাকি নিজেই নিজের সব অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তিকে ক্ষমা করতে পারেন। এই বিশেষ ক্ষমতা আগেও প্রয়োগ করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু কোনও প্রেসিডেন্ট নিজেই নিজেকে ক্ষমা করেছেন, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প ভাল করেই জানেন তিনি ক্ষমতাচ্যুত হলে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ঘটনার তদন্ত করবে বাইডেন প্রশাসন। তা আন্দাজ করতে পেরেই নিজেকে রক্ষাকবচ পরানোর চেষ্টা করছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

কয়েক দিন আগেই ট্রাম্প ক্ষমা প্রতারণা, হত্যায় অভিযুক্ত ২৬ জনকে করেছিলেন। সেই তালিকায় নাম ছিল তাঁর উপদেষ্টার আবার তাঁর জামাইয়ের বাবারও। ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা বিয়ে করেছেন জেয়ার্ড কুসনারকে। জেয়ার্ড কুসনারের বাবা চার্লস কুসনারেরও সব শাস্তি মুকুব করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তখন প্রশ্ন উঠেছিল, বিচার ব্যবস্থার তোয়াক্কা না করেই ক্ষমা করছেন ট্রাম্প। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলে জোর গুঞ্জন, উপদেষ্টা, পরিবার পর্যন্ত ঠিক ছিল। তা বলে নিজেই নিজেকে ক্ষমা।

ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর ট্রাম্পের উপদেষ্টা প্যাট কিপোলন তাঁকে জানিয়েছেন, প্ররোচনার দায়ে ভবিষ্যতে অভিযুক্ত হতে পারেন ট্রাম্প। তাই ছক বুঝেই ‘ঘোড়ার আড়াই চাল’ দিতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি নিজেই নিজেকে ক্ষমা করলে ভবিষ্যতে ট্রাম্পের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। কিন্তু সেসব থোড়াই কেয়ার! ট্রাম্প আগেই টুইট করে জানিয়েছেন, নিজেকে ক্ষমা করার সব অধিকার তাঁর আছে। ২০১৮ সালে টুইট করে তিনি লিখেছিলেন, “আমার নিজেকে ক্ষমা করার সব অধিকার আছে। কিন্তু কেন ক্ষমা করব, যখন কিছু ভুল করিনি।”

তাহলে কি এবার ট্রাম্প মনে করছেন ভুল হয়েছে। আর সেই ভুলের জন্যই নিজেকে ক্ষমা করার কথা ভাবছেন! এই প্রসঙ্গও তুলছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, হয়ত হোয়াইট হাউসের শেষ দিনে অর্থাৎ ১৯ জানুয়ারি ট্রাম্প এই ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই অন্য কথা বলছেন। হার্ভার্ডের আইন অধ্যাপক মার্ক টুশনেটের মতে, নিজেকে ক্ষমা করা ‘অসঙ্গতিপূর্ণ।’

আরও পড়ুন:‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা টানলেন ভাবী প্রেসিডেন্ট, শান্তির বার্তা ট্রাম্পের

আরেক আইন বিশেষজ্ঞ লুই সিডম্যানের মতে, ক্ষমা একজন অন্য জনকে দেয়। এক্ষেত্রে বিতর্ক দেখা দিতে পারে। অধ্যাপক জেফ পাওয়েল জানান, কোনও প্রেসিডেন্ট কখনও এরকম করেননি। সুপ্রিম কোর্টেরও এরকম রায় আছে বলে তাঁর জানা নেই। তবে ভিন্ন মতও রয়েছে। টার্লির মতে, ট্রাম্পকে ক্ষমাপ্রাপ্তদের তালিকায় নিজের নাম সংযোজনে আটকানোর মত কিছু নেই। আইনজীবীদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও একটা বিষয় স্পষ্ট। ট্রাম্প যদি নিজেকে ক্ষমা করেন, তাহলে ফেডারেল আইন থেকে তিনি পার পেয়ে যাবেন, তবে এই প্রশ্নও উঠবে, প্রেসিডেন্ট কি আইনের ঊর্ধ্বে?