
ঢাকা: এক মাস ধরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা। শেষ পর্যন্ত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। তারপর তৈরি হয়েছে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরল না বাংলাদেশ। এবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল মহম্মদ ইউনুসকেও। সোমবার থেকে, সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩১ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার দাবিতে ফের ঢাকার রাজপথে নতুন করে শুরু হল আন্দোলন। জুলাই-অগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি বাংলাদেশ। তার মধ্যেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে।
সোমবার সকালে ঢাকার শাহবাগে, জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে মিন্টো রোডে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সরকারি বাসভবন, ‘যমুনা’র দিকে পদযাত্রা করে তারা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সভা-সমাবেশে করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশি পুলিশ। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ‘যমুনা’ প্রাঙ্গণ দখল করার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। মিছিল এগোতে থাকলে, সেখানে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রবারের বুলেট ছোড়ে পুলিশ।
সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে বাংলাদেশে এর আগেও বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছে। তখন ক্ষমতায় ছিল শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকার। সেই সময়, এই ধরনের বেশ কয়েকটি আন্দোলন হয়েছিল। হাসিনা সরকার অবশ্য তাদের দাবি কখনই মানেনি। তবে, এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। মাস দুই আগে সেই দেশে যে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল, তা থেকে এখনও বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। সোমবারই, ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত আশুলিয়ায়, বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান পোশাক শ্রমিকরা। ওই এলাকায় দোকানপাট ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। এই হিংসাত্মক আন্দোলন দমন করতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং আরও ৫০ জনের মতো আহত হয়েছেন।