ভারতকে হিংসা করে তেলে-বেগুনে জ্বলছে পাকিস্তান! চেপে রাখতে না পেরে বলেই দিল…

India-Pakistan Relation: পাকিস্তানের গদ্বরে বন্দর তৈরি করছে চিন। আর তাতে নাভিঃশ্বাস উঠেছে ইসলামাবাদের। হিতে বিপরীত হয়েছে আর কী। প্রথমত বন্যার জলের মতো টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। যদিও বন্দর এখনও তৈরি হয়নি। দেউলিয়া হতে বসা পাক সরকার পড়েছে আরও বিপদে।

ভারতকে হিংসা করে তেলে-বেগুনে জ্বলছে পাকিস্তান! চেপে রাখতে না পেরে বলেই দিল...
প্রতীকী চিত্র।Image Credit source: TV9 বাংলা

|

Feb 17, 2025 | 2:42 PM

আরব সাগরে পাশাপাশি দুটো বন্দর। পাকিস্তানে গ্বদর আর ইরানে চাবাহার। একটার সঙ্গে অন্যটার দূরত্ব মাত্র ১৭০ কিলোমিটার। চাবাহার নিয়ে ভারতের আশা যখন বাড়ছে তখন গ্বদরে তলিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাবাহার বন্দরের কথা তোলেনইনি।

সূত্রের খবর,  চাবাহার নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন আপাতত চুপচাপই থাকবে। ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য মধ্য এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে ভারতের সামনে বাধা পাকিস্তান। তাই ইরানের চাবাহারে বন্দর তৈরির কাজ শুরু করে দিল্লি। ইরানের সঙ্গে চুক্তি হয়। সমস্ত কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে, বন্দর চালু হয়ে গিয়েছে অনেকদিনই। গতবছর চাবাহারে জাহাজের সংখ্যা প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। এই বন্দর দিয়ে ইতিমধ্যেই ৮৫ লক্ষ মেট্রিক টন কার্গো পরিবহণ করেছে ভারত।

ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খারাপ, এ কথা অনেকেরই জানা। ইরানের সঙ্গে কোনও দেশ যোগাযোগ রাখলে আমেরিকা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাইডেন জমানায় এক্ষেত্রে ভারতকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসতেই এই ছাড় তুলে নেওয়া হয়। চাবাহারে বহু কোটি টাকা লগ্নি করেছে ভারত। এই রাস্তায় এখন এশিয়া থেকে রাশিয়া পর্যন্ত ব্যবসা করছে। বাজেটের আগে এবারের আর্থিক সমীক্ষায় মুম্বই-চাবাহার রুটে বাণিজ্যের কথা বলা হয়। এই অবস্থায় আমেরিকা স্যাংশন করলে কিছুটা হলেও সমস্যা হত। তবে বিষয়টা নিয়ে দিল্লি-ওয়াশিংটনের কথা হয়েছে। স্যাংশন হয়ত কাগজে-কলমে থাকবে। কিন্তু, আমেরিকা সেটাকে এক্সিকিউট করবে না। তাই, ট্রাম্প বৈঠকে এই প্রসঙ্গটা আনেনইনি। আর তার ফলে, আগামীদিনে চাবাহার বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসা করতে ভারতকে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের গদ্বরে বন্দর তৈরি করছে চিন। আর তাতে নাভিঃশ্বাস উঠেছে ইসলামাবাদের। হিতে বিপরীত হয়েছে আর কী। প্রথমত বন্যার জলের মতো টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। যদিও বন্দর এখনও তৈরি হয়নি। দেউলিয়া হতে বসা পাক সরকার পড়েছে আরও বিপদে। দ্বিতীয়ত, গ্বদর বন্দর বালুচদের বিদ্রোহী সত্ত্বাকে আরও জাগিয়ে তুলেছে। কারণ বন্দর নির্মাণে স্থানীয় মানুষেরা কাজ পাননি। চিন নিজেদের লোক এনে কাজ করাচ্ছে। উপরন্তু বন্দর তৈরির জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বালুচ বিদ্রোহ পাক প্রশাসনের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে।

আরও চিন্তার বিষয়, ভূ-বিজ্ঞানীরা বলছেন ওই এলাকায় সমুদ্র দ্রুত সমস্তকিছু খেয়ে নিচ্ছে। ভাঙনের ফলে অদূর ভবিষ্যতে গোটা গ্বদর এলাকাটাই আরব সাগরে তলিয়ে যেতে পারে। আর তাহলে আক্ষরিক অর্থেই পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখার সলিল সমাধি হয়ে যাবে। এরকম একটা অবস্থায় ভারতের চাবাহার আমেরিকার গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে যাওয়ায় পাকিস্তান খুব চটেছে। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে মোদী-ট্রাম্প যৌথ বিবৃতি। বিবৃতিতে মুম্বই হামলায় জড়িত তাহাউর হুসেন রানাকে আমেরিকা থেকে ভারতে ডিপোর্ট করার কথা বলা আছে। আর সেই সূত্রেই সেখানে বলা হয়েছে যে সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য চেষ্টা করতে হবে পাকিস্তানকে। তাদের মাটি ব্যবহার করে জঙ্গিরা যাতে হামলা চালাতে না পারে পাকিস্তানকেই তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব দেখে রেগেমেগে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাক বিদেশমন্ত্রক বলেছে ভারত-আমেরিকার যৌথ বিবৃতিতে তাদের দেশের নাম আসা একেবারেই ঠিক হয়নি। মোদী-ট্রাম্পের বিবৃতি একতরফা, বিভ্রান্তিকর এবং কূটনৈতিক নিয়ম-কানুনের পরিপন্থী। তবে, পাকিস্তানের নালিশে পাত্তাই দিচ্ছে না আমেরিকা। কারণ, নিক্সন জমানা এখন অতীত। ভারত মহাসাগরে ভারতকে ছাড়া চলবে না আমেরিকার। তাই দিল্লির সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স পার্টনারশিপের পথেই হাঁটছে ওয়াশিংটন।