Watch: সিনেমার কায়দায় বিমানবন্দরে তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবকের, দেখুন ভিডিয়ো

Auckland airport: এভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কারণ হিসাবে ভারতীয়-বংশোদ্ভূত যশরাজ বলেন, "রিয়া খুবই শক্ত মনের মানুষ। তাই আমি এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যাতে রিয়া চমকে যায়।"

Watch: সিনেমার কায়দায় বিমানবন্দরে তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবকের, দেখুন ভিডিয়ো
বিমানবন্দরে অভিনব কায়দায় তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব যুবকের।Image Credit source: Instagram
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2023 | 5:30 AM

অকল্যান্ড: প্রেম-ভালবাসা ভৌগোলিক দূরত্ব মানে না। একথা বহুবার প্রমাণিত। প্রেমের টানে তরুণীর এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে আসার ঘটনাও কম নয়। তবে একেবারে বলিউড সিনেমার (Bollywood movie) কায়দায় বিমানবন্দরে মাইকে ঘোষণা করে প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা সচরাচর শোনা যায় না। এবার বাস্তবে এমনটাই ঘটনার সাক্ষী হলেন ভারতীয় তরুণী রিয়া শুক্লা। অকল্যান্ড বিমানবন্দরে (Auckland airport) ঢুকতেই মাইকে দীর্ঘদিনের বন্ধুর কাছে তাঁদের নানা মুহূর্তের কথা শুনতে পান রিয়া। এদিক-ওদিক তাকাতেই চোখে পড়ে, প্রেম নিবেদনের নানান প্ল্যাকার্ড। তারপরই মাইকে ভেসে আসে বিয়ের প্রস্তাব। যা শুনে হতবাক হয়ে যান রিয়া। এই কণ্ঠস্বর যে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রেমিক যশরাজ ছাবড়ার, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রিয়ার। বিমানবন্দরে সকলের সামনে এভাবে বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে অভিভূত হয়ে যান ভারতীয়-বংশোদ্ভূত এই তরুণী।

আদতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিয়া শুক্লা অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের বাসিন্দা। চাকরি সূত্রে থাকেন অকল্যান্ডে। ব্যাঙ্কিং স্পেশালিস্ট যশরাজ ছাবড়াও ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং চাকরির সূত্রে অকল্যান্ডে থাকেন। বিগত ৮ বছর ধরে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হয়েছে। কিন্তু, যশরাজ দীর্ঘদিন ধরে চাইলেও রিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারছিলেন না। আর রিয়া ফলে তাঁদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ কমে গিয়েছিল। তবে ভৌগোলিক দূরত্ব বাড়লেও যে মনের দূরত্ব বাড়ে না, তারই নজির দিলেন রিয়া-যশরাজ।

গত ১৮ অগস্ট মেলবোর্নে ছুটি কাটিয়ে অকল্যান্ডে আসেন রিয়া। তাঁকে চমক দিতে চেয়েছিলেন যশরাজ। তাই অভিনব কায়দায় বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। যদিও বিমানবন্দরে এভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কাজ সহজ ছিল না। বিমানবন্দরের কর্তা–ব্যক্তিদের রাজি করাতে যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত ভালবাসার কাছে হার মানে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও। তাই যশরাজের প্রস্তাব মেনে নেন। এরপর মেলবোর্নের বিমান থেকে নেমে রিয়া অকল্যান্ড বিমানবন্দরে পা রাখতেই যেন সিনেমার দৃশ্য শুরু হয়।

রিয়া বিমানবন্দরে ঢুকতেই আড়াল থেকে মাইকে কথা বলতে শুরু করেন যশরাজ। সেই সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী ভালবাসার প্রস্তাব-সহ প্ল্যাকার্ড হাতে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর আত্মীয়রা। রিয়ার সঙ্গে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন যশরাজ। যা শুনে থমকে যান রিয়া। এগুলি যে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু যশরাজের কথা, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রিয়ার। এরপর হঠাৎ করেই দেখেন, সামনে এগিয়ে আসছেন যশরাজ। তাঁর সামনে এসেই যশরাজ হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন এবং পকেট থেকে একটি আংটি বের করে রিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সেই সময় যশরাজের পিছনে ‘তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে তাঁর আত্মীয়েরা।

যশরাজের এই অভিনব কায়দায় বিয়ের প্রস্তাবে রিয়া কিছুটা হতবাক হলেও নাকচ করতে পারেননি। তিনিও যশরাজের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন এবং যশরাজ তাঁকে আংটি পরিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত যশরাজের আত্মীয় থেকে অন্যান্য যাত্রী, কর্মীবৃন্দের করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে বিমানবন্দর চত্বর। এ যেন সিনেমার দৃশ্য! রিয়াকে আংটি পরিয়ে দেওয়ার পরই যশরাজের সঙ্গে তাঁর বিয়ের বাগদান সম্পন্ন হয়।

রিয়া বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করায় আপ্লুত যশরাজ। এভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কারণ হিসাবে তিনি বলেন, “রিয়া খুবই শক্ত মনের মানুষ। তাই আমি এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যাতে রিয়া চমকে যায়।” তাঁর সেই প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। অন্যদিকে, এভাবে বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে হতবাক রিয়া। আবেগের সুরে তিনি বলেন, “সেই সময় কয়েক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল, বোধহয় শুধু আমরা দুজনেই আছি। তারপর দেখি, আমাদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুরাও এসেছে। তাঁরা আমাকে জড়িয়ে ধরল। সেদিনের সেই মুহূর্তটি ছিল সত্যিই স্বপ্নের মতো।”

সিনেমার মতো অভিনব কায়দায় যশরাজের ভারতীয়-বংশোদ্ভূত তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার মুহূর্ত ওই বিমানবন্দরে উপস্থিত অনেকেই মোবাইলে বন্দি করেছেন। পরে সেই মুহূর্তের ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ভারতে এসেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই যুগল।