নুর সুলতান : গত মাসের ২৪ তারিখ ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। আর এরপর থেকেই প্রাক্তন সোভিয়েত দেশগুলিতে মতভেদ তৈরি হয়েছে এই হামলা নিয়ে। এরই মাঝে এই হামলা নিয়ে তর্ক চলাকালীন ফেসবুকে ‘ইউরোপা প্লাস’ রেডিয়ো স্টেশনের এক সঞ্চালক মন্তব্য করে বসেন, “বেশি কথা বললে আঙ্কেল ভোভাকে (ভ্লাদিমির পুতিন) ডাকব (কাজাখস্তান দখল করতে)।” এই মন্তব্যের পরই লিউবভ প্যানোভা নামক সেই সঞ্চালককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে রেডিয়ো স্টেশনটি। পাশাপাশি তাঁর এই মন্তব্য থেকে রেডিয়ো স্টেশনটি নিজেদের দূরত্ব তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, প্রাক্তন সোভিয়েত রিপাবলিক কাজাখস্তান নিজেদের সবচেযে বেশি সীমান্ত ভাগ করে রাশিয়ার সঙ্গে। এমনকি রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক এবং সামরিক অক্ষ বা ‘ব্লক’-এর অংশ কাজাখস্তান। দেশটিতে প্রচুর রুশ বসবাস করেন। এই আবহে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হতেই জনগণ দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। এক অংশ এই যুদ্ধকে যুক্তিসঙ্গত বলছে তো অন্য অংশ এর বিরোধিতা করছে। এই আবহে রেডিয়ো হোস্ট ফেসবুকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তর্ক করছিলেন। সেই সময় রুশ সমর্থনকারীদের উদ্দেশে তিনি মন্তব্য করেন, “বেশি কথা বললে আঙ্কেল ভোভাকে (ভ্লাদিমির পুতিন) ডাকব।” এরপরই সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে লিউবভ প্যানোভার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনার পর ডেপুটি চিফ প্রসিকিউটর বুলাত ডেমবায়েভ একটি বিবৃতি জারি করে দেশবাসীকে সতর্ক করে দেন যাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কোনও ধরনের জাতি বিদ্বেষ বা উস্কানিমূলক মন্তব্য না করেন। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘে সরাসরি রাশিয়াকে সমর্থন না করলেও ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে পুতিন প্রশাসনের সমালোচনা এড়িয়ে গিয়েছে কাজাখস্তান। কতকটা ভারতের ভাষাতেই কাজাখ দূতের তরফে বলেছিলেন, “সব দেশের উচিত রাষ্ট্রসংঘের সনদ ও নিয়ম নীতি কঠোরভাবে পালন করা।” এদিকে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার উপর জারি নিষেধাজ্ঞাকেও কাজে লাগাতে চাইছে কাজাখস্তান। এই আবহে এক জার্মান সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সেদেশের উপ-বিদেশমন্ত্রী বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে যেসকল সংস্থা রাশিয়া ত্যাগ করেছে, তাদের কাজাখস্তান এই দেশে আসতে আহ্বান জানায়।” পাশাপাশি তিনি এও মন্তব্য করেন কাজাখস্তান ‘আইরন কার্টেনের’ ভুল দিকে থাকতে চায় না।