রিয়াধ : এক নজিরবিহীন রায়ের সাক্ষী থাকল সৌদি আরব। একইদিনে একসঙ্গে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল সৌদি আরবে। যা আদতে নজিরবিহীন। মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত দোষী সাব্য়স্তরা প্রত্যেকেই একাধিক ঘৃণ্য অপরাধ, এবং জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে লিপ্ত বলে জানা গিয়েছে। সৌদি আরবের ইতিহাসে এই ঘটনা প্রথম। এই প্রথম সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হল। এমনকি ১৯৮০ সালের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে এদিনের এই রায়। ১৯৮০ সালে এক সঙ্গে ৬৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে দখল করার জন্য় অভিযুক্ত ছিলেন এই ৬৩ জন। তাঁদের মুণ্ডচ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
সৌদি প্রেস এজেন্সির তরফে আজ এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার খবর জানানো হয়েছে। বিভিন্ন দোষে অভিযুক্ত এই ৮১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ শিশু, নারী বা পুরুষের হত্যাকারী। আবার কেউ অন্য কোনও অপরাধ করায় দোষী সাব্যস্ত। এই মৃতদের মধ্যে রয়েছে আল কায়দা, আইএস এবং ইয়েমেনের হাইথি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের সরকারি সংবাদ সংস্থা সূ্ত্রে খবর, মৃতদের ৮১ জনের মধ্যে ৭৩ জনই সৌদি আরবের বাসিন্দা। বাকি আট জনের মধ্যে সাতজন ইয়েমেনের এবং একজন সিরিয়ার নাগরিক।
এদিন এই পদক্ষেপের মাধ্য়মে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না সৌদি আরব। সন্ত্রাসবাদ দমনে যে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে তার আভাস মিলেছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালেও সৌদি আরবে একইসঙ্গে ৪৭ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। তারপর থেকে একইসঙ্গে এতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কোনও নজির পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে ৩৭ জন সৌদি নাগরিকের মুণ্ডচ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। করোনা মহামারির সময় থেকে সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিমাণও কমে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার ২০১৬ সালের পর ২০২২ সালে আবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে নিজেদেরই রেকর্ড ভাঙল সৌদি আরব। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই আহমদাবাদের এক আদালত ৩৮ জন জঙ্গিকে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ কাণ্ডে (২০০৮ সালের আমদাবাদ বিস্ফোরণ) সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে। একইসঙ্গে ৩৮ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে গুজরাটের বিশেষ আদালত।