নয়া দিল্লি: ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) নিলেই যে করোনা থেকে ১০০ শতাংশ সুরক্ষা পাওয়া যায় না, সেটা আগেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এত বেশি সংখ্যক মানুষ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও আক্রান্ত হয়েছেন, যা গবেষকদের কাছেও অপ্রত্যাশিত। তবে সেই হার ঠিক কতটা, সেই পরিসংখ্যান সামনে আসেনি। যারা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের থেকে অন্যরা কতটা আক্রান্ত হতে পারেন, সেটাও স্পষ্ট নয়। তবে সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, আগে যেমনটা ভাবা হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি অসুস্থ হচ্ছেন টিকাপ্রাপ্তরা।
তবে সঠিক পরিসংখ্যা দেওয়ার মতো গবেষণা এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের প্রাক্তন ডিরেক্টর টম ফ্রাইডেন জানিয়েছেন, ‘আমরা এখনও অনেক কিছুই জানি না। আর সেটা আমাদের মানতেই হবে।’ অনেক ক্ষেত্রে টিকাপ্রাপ্তরা মাস্কা পরছেন না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপিকা মনিকা গান্ধী বলেন, ‘ব্রেকথ্রু ইনফেকশন অনেকটাই বেড়েছে।’ এক উদাহরণ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ম্যাসাচুসেটসে একটি পার্টিতে জড় হন বহু মানুষ, তাদের মধ্যে অনেকেই টিকাপ্রাপ্ত। একসঙ্গে নাচ-গান করার পর নতুন করে ছড়ায় করোনা। ওই পার্টি থেকে মোট ৪৬৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ ভ্যাকসিন প্রাপ্ত বলে জানা গিয়েছে।
নিউ ইয়র্কের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই টিকাপ্রাপ্ত। ডেল্টার জন্যই এই সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অনয় এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলোরাডোতে মেসা নামে একটি জায়গায় এই ধরনের সংক্রমণের মাত্রা বেশি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন বুস্টার শট এ ক্ষেত্রে নিষ্কৃতি দিতে পারে।
ভারতেও ছবিটা খুব একটা সুখকর নয়। দেশে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়ার আগেই টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও সেকেন্ড ওয়েভে ধরা পড়ে ভয়াল ছবি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় করোনা আক্রান্ত হন অনেকে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর করোনা হলেও তার তীব্রতা অতটা বেশি থাকবে না, তবে সম্প্রতি কেরলের যে ছবি সামনে এসেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, শুধুমাত্র কেরলে ৪০ হাজার মানুষ ব্রেক-থ্রু সংক্রমণের শিকার হয়েছেন অর্থাৎ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ় নেওয়ার পরও তাদের করোনা হয়েছে।
এই রিপোর্ট সামনে আসার পর কেরলের স্বাস্থ্য দফতরকে জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর সমস্ত রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট দেখেই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্তে আসবেন ঠিক কি কারণে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও করোনা সংক্রমণ এত বেশি হয়েছে। ডেল্টা ভারিয়েন্টের জন্যই এই সংক্রমণ কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। আরও পড়ুন: ১২ বছরের উর্ধ্বে কাদের প্রথম দেওয়া হবে ভ্যাকসিন?