ওয়াশিংটন: নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) যখন প্রথম দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, আমেরিকায় তখন প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন বারাক ওবামা (Barak Obama)। সেই সময় দুই রাষ্ট্রনেতার বন্ধুত্ব নজর কেড়েছিল গোটা বিশ্বের। মোদীর আমন্ত্রণের প্রজাতন্ত্র দিভসের অতিথি হয়ে ভারতে এসেছিলেব ওবামা। প্রোটোকল ভেঙে মোদী নিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে ছুটে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে। সেই বন্ধুত্বের ছবি দেখা যায় ডোনাল্ডা ট্রাম্পের (Donald Trump) আমলেও। আমেরিকার টাইম স্কোয়্যারের অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে এক মঞ্চে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর গত বছর আমেরিকায় পালাবদলের পর প্রেসিডেন্ট পদে এসেছেন জো বাইডেন (Joe Biden)। তাঁর সঙ্গে কেমন হবে প্রধানমন্ত্রীর সমীকরণ, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। তবে গতকাল হোয়াইট হাউসের (White House) বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার পাশাপাশি খোশ মেজাজেই দেখা গেল দু’জনকে।
এ দিন একদিকে যেমন করোনা পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় নিয়ে কথা বললেন তাঁরা, তারই পাশাপাশি কিছুটা হালকা মেজাজে দেখা গেল দু’জনকেই। ভারতের সঙ্গে কি যোগ রয়েছে বাইডেনের? মজা করে এমন আলোচনাতেও মাতলেন দু’জনের। ছকের বাইরে বেরিয়ে কার্যত হাসাহাসি করতে দেখা গেল দু’জনকেই।
ভারতে নাকি থেকে থাকতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আত্মীয়। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর নতুন করে সেই তথ্য নিয়ে চর্চা হয়েছিল। এ দিন মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফের আলোচনায় উঠে আসে সেই প্রসঙ্গ। প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বাইডেন নিজেই। ২০১৩ সালে তিনি যখন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন মুম্বইতে এক অনুষ্ঠানে এসে সেই ভারতীয় বাইডেনদের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৭২ সালের একটি চিঠি আজও বাইডেনের স্মৃতিতে উজ্জ্বর। সেই স্মৃতি হাতড়ে এ দিন বাইডেন বলেন, ‘২৯ বছর বয়সে আমি যখন প্রথম সেনেটর নির্বাচিত হয়েছিলাম, তখন শপথ নেওয়ার আগে আমি একটি চিঠি পাই। যিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাঁর পদবী ছিল বাইডেন। যদিও পরে আর খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।’ পরে সংবাদমাধ্যম থেকে তিনি জানতে পারেন, ভারতে বসবাস করেন এমন পাঁচজনের পদবী বাইডেন। পরে মুম্বই সফরে এসে সে কথাই উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
এরপর বাইডেন আরও বিশদে ব্যাখ্যা করেন জানান, তাঁর এক পূর্ব পুরুষ ইস্ট ইন্ডিয়া টি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ক্যাপ্টেন জর্জ বাইডেন নামে সেই পূর্ব পুরুষ সম্ভবত এক ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেন। মজার ছলেই বাইডেন ব্যাখ্যা করতে চান, হয়ত তারপর থেকে ভারতে রয়ে গিয়েছেন বাইডেনরা। তবে এই প্রসঙ্গে মোদীর উত্তর শুনে আর হাসি চাপতে পারেননি বাইডেন। মোদী বলেন, ‘আমি তো আজ পর্যন্ত ব্যাপারটা খুঁজে বের করতে পারিনি। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যই হল সেটা খুঁজে বের করা। এ কথা শুনেই উচ্চৈস্বরে হেসে ওঠেন বাইডেন।
লবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোয়াড জোটের গুরুত্ব সহ একাধিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে কথা হয়। ভারত মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে আরও মজবুত করা যায়, তা নিয়ে নতুন দিশা দেখাতে পারে এই বৈঠক। মহাত্মা গান্ধীর কথাও এ দিন তোলেন বাইডেন।