আমাদের দৈনন্দনি জীবনের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া এখন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই নিজের প্রাণাধিক প্রিয় স্মার্টফোন হাতে নিয়ে মনের অজান্তেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম খুলে ‘আপডেটেড’ হওয়াই দস্তুর। অনেকেই হয়তো সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া সম্পূর্ণ অচল। এখন ভেবে দেখুন হঠাৎ করেই যদি এই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর আইনি খাঁড়া নেমে আসে, যদি বলা হয় এখন থেকে এই জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে কেমন হবে? ভাবতেই অবাক লাগছ তো? তবে বাস্তব অনেকটাই এইরকমই। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর আদালত সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) ব্যবহারের রাশ টানতে রীতিমতো ফতোয়া জারি করেছে।
মস্কোর আদালত জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট ফেসবুক (Facebook) ও ইনস্টাগ্রাম (Instagram) ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মার্কিন সংস্থা মেটার আওতায় রয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকেই এই সোশ্যাল সাইটগুলিকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে রাশিয়া। মার্চ মাসের শুরু থেকেই রাশিয়াতে ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এক সপ্তাহ আগে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মস্কোর টেভরস্কই জেলা আদালতে ফেসবুক ও ইনস্টগ্রামে ‘চরমপন্থী কার্যকলাপ’-এর বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়েছিল। সেই আবেদনেই সীলমোহর দিয়েছে আদালত। তবে আদালত জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না কারণ এটার মাধ্যমে প্রকাশ্যে কোনও মতামত দেওয়া যায় না।
এখনও অবধি মেটার তরফে এর কোনও জবাব মেলেনি। সোমবার আদালতে শুনানি চলার সময় রাশিয়ার এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিস মেটাকে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করা অভিযোগ অভিযুক্ত করেছিল। এফএসবির প্রতিনিধি ইগর কোভালেভস্কি আদলতকে জানিয়েছিল মেটার কার্যকলাপ সরাসির রাশিয়া ও রুশ সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করছে। ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছিল অবিলম্বে দেশে মেটার যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধ করা হোক। ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে রাশিয়া এমনিতেই চাপে রয়েছে। পশ্চিমী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার ওপর আর্থিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর কোর্টের খাঁড়া নেমে আসায় রাশিয়ার কোনও ক্ষতি হয় কি না, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: ন্যাটো কি রাশিয়াকে ভয় পায়? কিসের ইঙ্গিত দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট?