Dawood Ibrahim: পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ পদে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ দাউদ ইব্রাহিম?

ISI: পাক সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, আইএসআই অফিসার নিজের দায়িত্বে অনুমতি ছাড়া ২৫ লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। আর অনুমতি নিয়ে যে কোনও অঙ্কের টাকা খরচ করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই দাউদ ইব্রাহিম আইএসআইয়ের শীর্ষপদে আসীন হওয়ায় অনেক সুবিধা পাবেন।

Dawood Ibrahim: পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ পদে 'মোস্ট ওয়ান্টেড' দাউদ ইব্রাহিম?
দাউদ ইব্রাহিম। ফাইল ছবি।Image Credit source: ANI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 03, 2023 | 8:07 AM

করাচি ও নয়া দিল্লি: ভারতের একাধিক নাশকতার সঙ্গে যুক্ত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তালিকাতেও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’। সেই দাউদ ইব্রাহিম (Dawood Ibrahim) বর্তমানে পাকিস্তান সরকারের শীর্ষপদে আসীন। একেবারে পাক গোয়েন্দা সংস্থার ISI -এর স্পেশাল অ্যাডিশনাল ডিজি। শুনতে অবাক লাগছে! এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যম। শুধু তাই নয়, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, একেবারে নিয়োগপত্র দিয়ে ISI-এর শীর্ষপদে নিয়োগ করা হয়েছে দাউদকে। করাচিতে ফ্লিনটচফ রোডের দাউদের বাসভবনেই নাকি তাঁর অফিস। নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। আইএসআই প্রধান নদিমানজুমের কাছে রিপোর্ট করছেন তিনি। সবমিলিয়ে বলা যায়, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাভক্ত, মুম্বই হামলা-সহ অনেক বিস্ফোরণের মূল চক্রীকে একেবারে জামাই আদরে রেখেছে পাকিস্তান।

যদিও পাকিস্তান সরকারের তরফে দাউদের আইএসআইয়ের শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। একেবারে দাউদের সে দেশে থাকার কথাই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। যদিও পাক পুলিশের বিশেষ বাহিনী ২৪ ঘণ্টা দাউদকে ঘিরে রাখে বলে সূত্রের খবর। এমনকি দাউদের মদতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা পাকিস্তানে বসে মাদক কেনা-বেচার কারবার এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে।

কিন্তু, কী এমন হল যে একেবারে গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পদে মোস্ট ওয়ান্টেড ডন? পাক কর্তারা এই বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও এমন প্রশ্ন উঠছে। এব্যাপারে বলা যায়, সুদূরপ্রসারী ভাবনা থেকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তা পেতেই এই পদক্ষেপ পাক সরকারের। ডিসেম্বরেই বড় দুটি পরীক্ষা রয়েছে পাকিস্তানের। প্রথমত, আন্তর্জাতির আর্থিক তহবিল (IMF)-এর দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (FATF)-এর বার্ষিক মূল্যায়ণ। FATF যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার প্রমাণ পায়, তাহলে ফের ধূসর তালিকায় যাবে এই দেশ। সেক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তা পাবে না। তাই জঙ্গি নেতাদের সরকারি পদে বসিয়ে, তাদের কালো টাকা সাদা করিয়ে, জঙ্গি মদতের অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

পাক সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, আইএসআই অফিসার নিজের দায়িত্বে অনুমতি ছাড়া ২৫ লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। আর অনুমতি নিয়ে যে কোনও অঙ্কের টাকা খরচ করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই দাউদ ইব্রাহিম আইএসআইয়ের শীর্ষপদে আসীন হওয়ায় অনেক সুবিধা পাবেন।

এদিকে, ভারতে দাউদের নেটওয়ার্ক এখনও সক্রিয়। এখনও মুম্বই, সুরাট, আহমেদাবাদ, দিল্লিতে দাউদের নেটওয়ার্ক রয়েছে। সম্প্রতি ডি কোম্পানির নামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে বলেও খবর মিলেছে। ভারতের তরফে অবশ্য বেশ কয়েকবার দাউদ ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, কোনবার সফল হননি গোয়েন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানিয়েছেন, দাউদকে গ্রেফতারির ব্যাপারে একবার সব ঠিক হয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে কোনও অজানা কারণে অনুমতি তুলে নেওয়া হয়। এরকম ধারণা জনমানসেও রয়েছে।

এদিকে, দাউদের করাচিতে অবস্থানের কথা পাকিস্তান অস্বীকার করলেও তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বীকার করে নিয়েছেন। ২০১৭ সালে দাউদের ভাই ইকবাল কাসকারকে গ্রেফতার করে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা। দাউদ-ঘনিষ্ঠ খালিদ উসমান শেখের দাদা দাউদের বাল্যবন্ধু ছিলেন। খালিদ উসমান এখন ইডি-র অন্যতম সাক্ষী। সে জানিয়েছে, দাউদ প্রতি মাসে ভারতে তাঁর পরিবারকে টাকা পাঠান। কাসকর নিজে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা পায়। আবার দাউদের বোন হাসিনা পার্কারের দেহরক্ষী সেলিম প্যাটেলের কাজ ছিল, মুম্বইয়ে দাউদের নাম করে টাকা তোলা। সেই হাসিনার ছেলে আলি শাহ জানিয়েছে, ডন পাকিস্তানে গোপনে রয়েছে। ইদ, দেওয়ালিতে দাউদ তাঁর স্ত্রী ও ভারতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করেন।