নয়া দিল্লি: তালিবানের তাবেদারি করতে গিয়ে শালীনতার কার্যত সমস্ত সীমা-পরিসীমা লঙ্ঘন করে ফেলল পাকিস্তান। চরমপন্থী ইসলামিক সংগঠন তালিবানকে স্বীকৃতি না দেওয়া হলে দ্বিতীয় ৯/১১-র সমতূল্য জঙ্গি হামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন খোদ পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। মইদ ইউসুফ নামক এই শীর্ষস্তরীয় পাক আমলা মূলত পশ্চিমী দেশগুলির উদ্দেশ্যে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দেওয়ার কায়দায় এই বক্তব্য রাখেন। এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এহেন বিস্ফোরক মন্তব্য তিনি করেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে মন্তব্যের দায় নিতে অবশ্য অস্বীকার করেছেন। কিন্তু শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়?
বিখ্যাত ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য সানডে টাইমস-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মইদ ইউসুফ বলেন, “পশ্চিমী দেশগুলির অবিলম্বে তালিবানের সঙ্গে আলোচনার রাস্তায় আসা উচিত। নয়তো যে কারণে ৯/১১ ঘটেছিল, সেই একই ভুলের ঝুঁকি নিতে হবে। ক্রিস্টিনা ল্যাম্ব নামক সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাক নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, “আমার কথাগুলো লিখে রাখুন। যদি ১৯ দশকের ভুলের পুনরাবৃত্তি এ বারও করে আফগানিস্তানকে একঘরে করে দেওয়া হয়, তাহলে এ বারও একই ঘটনা (৯/১১) ঘটবে।” পাক নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে এই কথাগুলিই লেখা হয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদপত্রে।
এই সাক্ষাৎকার ঘিরে গোটা বিশ্বে হইচই শুরু হতেই ভুল বুঝতে পেরে টনক নড়ে পাকিস্তানের। তড়িঘড়ি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাক নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওই সাক্ষাৎকারকেই ভুয়ো বলে দাবি করেন। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের কোনও মন্তব্যই নাকি তিনি করেননি। এই কথপোকথন সম্পূর্ণরূপে মনগড়া। ওই সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর কথা হলেও এই ধরনের কোনও বক্তব্য তিনি পেশ করেননি। পাক নিরাপত্তা উপদেষ্টার দফতর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির দাবি, একবারের জন্যও মইদ ইউসুফ পশ্চিমী দেশগুলিকে তালিবানকে স্বীকৃতি দিতে বললেননি। ৯/১১-র বিষয়েও কোনও প্রসঙ্গের উত্থাপন তাঁর তরফে করা হয়নি বলেই দাবি।
যদিও এই সাক্ষাৎকার যে সাংবাদিক নিয়েছেন, অর্থাৎ ক্রিস্টিনা ল্যাম্ব পালটা পাক নিরাপত্তা উপদেষ্টার দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, পুরো সাক্ষাৎকারটি রেকর্ড করা রয়েছে। এতে একটিও বর্ণ ভুল বা মিথ্যে নেই।
Interviews is recorded – nothing is misquoted
— christinalamb (@christinalamb) August 29, 2021
গোটা বিতর্ক ফের একবার অস্বস্তি বাড়িয়েছে পাকিস্তানের। একই সঙ্গে পড়শি দেশই যে সন্ত্রাসের সবচেয়ে বড় মদতদাতা, সেই প্রমাণও যেন পরোক্ষে সামনে নিয়ে আসছে। কারণ দিনকয়েক পাকিস্তানের শাসকদলের এক নেত্রী দাবি করেন, তালিবান নাকি কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে খোদ পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জঙ্গি সংগঠন তালিবানের স্বীকৃতির দাবিতে সুর চড়ালেন। ফলে দুয়ে দুয়ে চার করতে এবং পাকিস্তানের আসল ভূমিকা বুঝতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না কূটনৈতিক মহলের। আরও পড়ুন: ভারতকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ মনে করছে তালিবান! ‘চিন্তার কোনও কারণ নেই’, দিচ্ছে আশ্বাসও