ভারতকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ মনে করছে তালিবান! ‘চিন্তার কোনও কারণ নেই’, দিচ্ছে আশ্বাসও
চিন্তিত হওয়ার কারণ না থাকলেও, নিশ্চিন্ত থাকারও কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
নয়া দিল্লি: আফগানিস্তানের নতুন শাসক তালিবানের সঙ্গে ভারত আলোচনার পথে হাঁটবে, নাকি একরোখা মনোভাব নিয়ে বিরোধিতার অবস্থানে অনড় থাকবে, সেই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি নয়া দিল্লি। বর্তমান পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। সেই কারণে এখনই এই বিষয়ে পাকাপাকি কোনও সিদ্ধান্তে না এসে ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’, অর্থাৎ ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে। তালিবান অবশ্য মুখে মুখে উদরতা দেখাতে কোনও মতেই পিছপা হচ্ছে না। আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তালিবানের থেকে বিন্দুমাত্র চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই ভারতের।
যদিও তালিবানের মুখের কথা এবং বাস্তবের কাজ করার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তবে কাশ্মীর নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার পর তালিবানের এই দ্বিতীয় মন্তব্য যে কূটনৈতিক চাপানউতোরে কিছুটা বিরাম দেবে, তা আশা করা যায়। আপাতত তালিবানকে নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ না থাকলেও, নিশ্চিন্ত থাকারও কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ একাধিকবার ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন, একই সঙ্গে তাঁর সাফ দাবি, তালিবানের থেকে ভারতের ভয়ের কোনও কারণ নেই। ইদানীং একাধিক আশঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছিল যে তালিবান নাকি পাকিস্তানকে সমর্থনের মাধ্যমে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে। জাবিউল্লাহ এই সমস্ত দাবিকে নস্যাৎ করেছে।
তাঁকে বলতে শোনা যায়, “তালিবান কখনই চায় না যে অন্য কোনও দেশ আমাদের জন্য বিপদের সম্মুখীন হোক। আমরা ভারতকে আশ্বাস দিতে চাই যে আমাদের কারণে তাদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।” এখানেই থেমে না থেকে তালিবানি মুখপাত্র আরও বলে চলেন, “আমরা চাই যাতে অন্যান্য দেশের দূতাবাস আফগানিস্তানে থাকুক। আফগানিস্তানে (উচ্চস্তরীয়) প্রতিনিধিদের উপস্থিতি কাম্য। আমরা তাঁদের নিরাপত্তা দিয়েছি। আমরা চাই যেন সব দেশের সম্পর্ক আমাদের সঙ্গে ভাল থাকে।”
যদিও বন্দুকের নলের জোরে দেশ শাসন করে কী ভাবে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব, সেই ব্যাখ্যার পথে তিনি যাননি। তবে ভারতে যে তালিবানের জন্য় মধ্য এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। এবং এই দেশের সঙ্গে আপাতত কোনও ধরনের শত্রুতার পথে হাঁটার ইচ্ছে বা মানসিকতা যে তালিবানের নেই, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে কাবুলে দখল নেওয়ার পর যখন তালিবান প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন করেছিল, তখন ভারত এবং কাশ্মীর সমস্যার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। সেই সময় তালিবানের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিষয়টি ভারতে অভ্যন্তরীণ এবং এই নিয়ে তাদের কোনও বক্তব্য নেই। যদিও মাঝে পাকিস্তানের শাসকদলের এক নেত্রী দাবি করেন, তালিবান নাকি কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে। সেই এই বক্তব্যই নস্য়াৎ করলেন তালিবানি মুখ্যপাত্র। আরও পড়ুন: তালিব নেতাকে বুক চিতিয়ে বলেছিলেন ‘আমাদের অধিকার দিতে হবে’, প্রাণভয়ে দেশ ছাড়া সেই মহিলা সাংবাদিকও!