AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

তালিব নেতাকে বুক চিতিয়ে বলেছিলেন ‘আমাদের অধিকার দিতে হবে’, প্রাণভয়ে দেশ ছাড়া সেই মহিলা সাংবাদিকও!

দেশ ছাড়লেও এখনও আশা ছাড়তে নারাজ বেহেস্তা। তিনি বলেন,"তালিবানরা যা বলেছে, সত্যিই যদি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং দেশের পরিস্থিতি শুধরে যায়। তবে আমি দেশে ফিরে আসব।"

তালিব নেতাকে বুক চিতিয়ে বলেছিলেন 'আমাদের অধিকার দিতে হবে', প্রাণভয়ে দেশ ছাড়া সেই মহিলা সাংবাদিকও!
সাক্ষাৎকারের সেই মুহূর্ত। ছবি: টোলো নিউজ।
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2021 | 1:49 PM
Share

কাবুল: তালিবানরা যখন কাবুল দখল নিল, সকলের মুখেই ছিল একটাই প্রশ্ন, দেশের ভবিতব্য কী হতে চলেছে। নারী সুরক্ষা ও স্বাধীনতা নিয়ে যখন আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন তুলছিল, সেই সময়েই তালিবান শীর্ষ নেতার মুখোমুখি বসে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের এক মহিলা সাংবাদিক। তালিবান নেতাকে ভয় না পেয়ে, উল্টে তাঁর দিকেই ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তীক্ষ্ণ প্রশ্ন। সেই সাংবাদিকই আজ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেন প্রাণ ভয়ে।

গত ১৫ অগস্টই কাবুলের দখল নেয় তালিবানরা। এর দুদিন পরই তালিবানের এক শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎকার নেন টোলো নিউজের মহিলা সাংবাদিক বছর ২৪ এর বেহেস্থা আরগান্দ। এটিই প্রথম তালিবান নেতার সাক্ষাৎকার ছিল, যা নিয়েছিলেন কোনও মহিলা সাংবাদিক। কয়েকদিন বাদে মালালা ইউসুফজাইয়ের সাক্ষাৎকারও নেন তিনি। অকুতোভয় ভাবা হয়েছিল যাকে, সেই সাংবাদিকই দেশ ছাড়লেন কেন?

বেহেস্থা জানান, তাঁর সাংবাদিক জীবনের অন্যতম উচ্চতায় ছিলেন তিনি। মাত্র ৯ বছর বয়স থেকে তিনি সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিতে হয় একটিই কারণে, তালিবান।  দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার পর তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাকি লক্ষাধিক মানুষের মতো আমিও তালিবানদের ভয়েই দেশ ছেড়েছি। যেভাবে বাড়ি বাড়ি ঘুরছে তালিবানরা, তাকে যে কোনও দিন খুন হয়ে যেতে পারতাম।”
দেশ ছাড়লেও এখনও আশা ছাড়তে নারাজ বেহেস্তা। তিনি বলেন,”তালিবানরা যা বলেছে, সত্যিই যদি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং দেশের পরিস্থিতি শুধরে যায়। তবে আমি দেশে ফিরে আসব। যদি আমার মনে হয় যে, আমি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত, তবে দেশের জন্য, আমার প্রিয় মানুষদের জন্য ফের আফগানিস্তানেই ফিরে আসব।”

তালিবানের ভয়ে একের পর এক সাংবাদিক কাজ ছেড়ে দেওয়ায় অসহায় বোধ করছেন টোলো নিউজের মালিক সাদ মোহসেনি। তিনি বলেন, “বেহেস্থা বা বাকি সাংবাদিকদের কাজ ছাড়ার সিদ্ধান্তই প্রমাণ যে বাস্তবে আপগানিস্তানে কী হচ্ছে। সমস্ত পরিচিত ও ভাল সাংবাদিকরা কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা যে কজন রয়েছি, তারা পাগলের মতো কাজ করছি। পুরনো লোকজনদের জায়গায় নতুন লোক নিয়োগ করার চেষ্টা চলছে। একদিকে, প্রাণভয়ে সাংবাদিকরা বাইরে যেতে চাইছেন না, অন্যদিকে আমাদের উপর চ্যয়ানেলকে সচল রাখার দায়িত্বভারও রয়েছে।”

কীভাবে তালিবানি নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তিনি, এই প্রশ্নের জবাবে বেহোস্থা বলেন,, “আমি আফগান মহিলাদের জন্য কাজটি করেছিলাম।” নিজেদের অধিকার তুলে ধরতে তিনি তালিবানি নেতাকে বলেছিলেন, “আমরা নিজেদের অধিকার চাই। আমরা কাজ করতে চাই, সমাজের অংশ হিসাবে থাকতে চাই। এটাই আমাদের অধিকার।”

তালিবানের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদের ভাষা সম্পর্কে তিনি বলেন, “যদি আমরা ভয়ে বাড়িতে বসে থাকি বা কাজে না যাই, তবে ওরাই বলবে যে মহিলারা কাজ করতে চায় না। ”

তালিবানদের তরফে শরিয়া আইন মেনে  নারী শিক্ষা ও সুরক্ষার কথা বলা হলেও বাস্তবে ঠিক উল্টো ঘটনাটিই ঘটতে দেখা যাচ্ছে আপাতত। তার উপর সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও আফগান সেনার উপর হামলার ঘটনা তো লেগেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে পরালানোই শরেয় মনে করছেন অনেকেই।   আরও পড়ুন: পাততাড়ি গোটাচ্ছে মার্কিন বাহিনী, বিমানবন্দর দখল নিতে প্রস্তুত তালিবানও! নতুন সরকারের নিয়োগ শুরু