ইসলামাবাদ: দেশের শাসন ক্ষমতা যে হাতছাড়া হতে চলেছে, তা আগে থেকেই আন্দাজ করতে পারছেন পাকিস্তানের (Pakistan) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)। সেই কারণেই অনাস্থা ভোট (No Confidence Motion) হওয়ার আগেই দেশবাসীকে পথে নামার আহ্বান জানালেন তিনি। রবিবারই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটগ্রহণ রয়েছে। দেশবাসীকে নিজের পক্ষে টানতেই ফের একবার বিদেশি চক্রান্তের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। এই চক্রান্ত রুখতেই তিনি দেশবাসীদের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতেও বলেন।
পাকিস্তানের কোনও প্রধানমন্ত্রীই আজ অবধি মন্ত্রিত্বের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তার আগেই কোনও কারণে তাদের গদি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন ইমরান খানও। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দেশের অর্থনীতির সামাল দিতে না পারা ও সঠিক বিদেশনীতি গ্রহণ না করার। করোনাকাল ও পরবর্তী সময়ে দেশের যে দূর্বিষহ অবস্থা হয়েছিল, তার জন্যও ইমরান খানকেই দায়ী করেছেন বিরোধীরা। তার উপরে আবার পাক সেনার সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হয়েছে তাঁর। এই পরিস্থিতিতেই সংসদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে বিরোধী দলগুলি। ইতিমধ্যেই ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের অন্যতম জোটসঙ্গী এমকিউএমও বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। শুধু বিরোধীরাই নয়, দলের একাধিক সাংসদও ইমরানের বিরুদ্ধেই ভোট দিতে পারেন বলে আশঙ্কা।
অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার আগেই শনিবার ইমরান খান বলেন, “আমি চিন্তাভাবনা করছিলাম যে কীভাবে ওদের (বিরোধী নেতারা) মুখোমুখি হব। ইনশাহ আল্লাহ, আপনারা আগামিকালই দেখতে পাবেন কীভাবে ওদের মুখোমুখি হব আমি। আমি চাই আমার মানুষেরা সতর্ক থাকুক, জীবিত থাকুক। যদি অন্য কোনও দেশ হত, তবে এতক্ষণে সাধারণ মানুষ পথে নেমে পড়ত বিক্ষোভ দেখাতে।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আমি আপনাদের সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি যে আপনারাও আজ ও আগামিকাল পথে নামুন। দেশের স্বার্থে, নিজের ইচ্ছায় এই কাজটা করা উচিত। কোনও দল আপনাদের জোর করবে না। তবে আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য পথে নামা উচিত। আপনাদের সকবের যাওয়া উচিত এবং দেখানো উচিত যে আপনারা সতর্ক।”
গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। ৩৪২ সদস্যের মধ্যে ইমরানের ঝুলিতে ১৫৫টি ভোট থাকলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা হল ১৭২। সেখানেই বিরোধী শিবিরের সঙ্গে এমকিউএম যোগ দেওয়ায় তাদের মোট সংখ্যা ১৭৭-এ পৌঁছেছে। ফলে বিরোধীরাই এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ।
তবে হাল ছাড়তে নারাজ ইমরান খান। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ জয় করেছিল। এখনই লড়াইয়ের ময়দান ছাড়ছেন না, সেই বার্তা দিয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগামিকালের জন্য আমার পরিকল্পনা রয়েছে। আপনাদের চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। আমি ওদের সঠিক জায়গা দেখিয়ে দেব সংসদে হারিয়ে।”