নিউ দিল্লি: ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগরওয়াল-এর অসাধারণ কৃতিত্বের প্রশংসায় সরব বিশ্বমহল। ট্যুইটারের চিফ এক্সিকিউটিভ পদ থেকে জ্যাক ডরসি-এর পদত্যাগের ঠিক পরেই এই পদে নিয়োগ করা হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগারওয়াল-কে। ২৯ নভেম্বর, সোমবার সরকারিভাবে এই ঘোষণা করেছে মাইক্রো ব্লগিং সাইট ট্যুইটার।
জেনে নেওয়া যাক, কোন প্রতিভা থেকে যোগ্যতার বলে বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের সিইও এই ‘ইন্ডিয়ান-আমেরিকান’।
২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ‘ট্যুইটার’ কাজ শুরু করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টের চিফ টেকনোলজি অফিসার পদে নিযুক্ত হন পরাগ। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই পদের দায়িত্ব সামলান তিনি। চিফ টেকনোলজি অফিসার পদে থাকাকালীন তিনি মাইক্রো ব্লগিং প্লাটফর্মের টেকনিকাল স্ট্র্যাটেজি থেকে শুরু করে মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়েও কাজ করেন। প্রযুক্তিগত দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তাঁকে গ্রাহক, কোম্পানির আয়-ব্যয় নিয়েও কাজ করতে হয়। এমনকি সায়েন্স টিমের সঙ্গেও কাজ করেন তিনি।
এদিকে ট্যুইটারের বর্তমান সিইও সম্মন্ধে প্রাক্তন সিইও জানিয়েছেন,’ ট্যুইটারের সিইও হিসাবে আমি পরাগকে গভীরভাবে ভরসা করি। বিগত ১০ বছর ধরে ও যা কাজ করেছে তা ‘ট্রান্সফরমেশনাল’। এবার সময় হয়েছে ওর নেতৃত্ব দেওয়ার।’
কোম্পানি থেকে নতুন সিইও পরাগ আগরওয়ালের এর জন্য বার্ষিক প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ট্যুইটার আরও জানিয়েছে মার্কিন সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে তাঁর জন্য প্রায় ৯৩.৯ কোটি টাকার স্টক ইউনিট বরাদ্দ করেছে।
১৯৮৪ সালে মহারাষ্ট্রের মুম্বই শহরে জন্মগ্রহণ করেন পরাগ আগরওয়াল। তিনি মুম্বই-এর অ্যাটমিক এনার্জি সেন্ট্রাল স্কুল থেকে পঠন-পাঠন শুরু করেন। তাঁর মা একজন শিক্ষিকা ছিলেন এবং তাঁর পিতা অ্যাটমিক এনার্জি সেক্টরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মী ছিলেন।
৩৭ বছর বয়সf পরাগ আগরওয়াল মুম্বই আইআইটি-র ছাত্র ছিলেন। উনি এখানে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয় নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে ২০০৫ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। তারপরেই ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ‘ট্যুইটার’ কাজ শুরু করেন তিনি। কর্মরত অবস্থায় স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তাঁর পিএইচডি করার সময় তাঁকে তাঁর অধ্যাপক, জেনিফার উইডোম জানান যে, পরাগ গণিত বিষয়ে অত্যন্ত পারদর্শী এবং কঠিন ডাটাবেস নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে পরাগ অত্যন্ত প্রভাবশালী।
‘ট্যুইটার’-এ চাকরি করার আগে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য মাইক্রোসফট, ইয়াহু এবং আমেরিকান টেলিফোন এন্ড টেলিগ্রাফ- কোম্পানীগুলিতে কাজ করেছেন। তার কাজগুলি মূলত গবেষণা-মূলক। প্রাথমিকভাবে, ট্যুইটারে পরাগ বিজ্ঞাপন-সম্পর্কিত কাজ গুলির দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু শক্তির পাশাপাশি তিনি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়েও কাজ করেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী বিনীতা আগরওয়াল এবং কন্যা-সন্তান অনামিকা আগরওয়াল নিয়ে ছোট্ট পরিবার তার।
২০১৭ সালে, যখন তার পদোন্নতি হয়, তখন তার কাজ নিয়ে কোম্পানি জানায় যে, সিটিও হিসাবে তিনি যথেষ্ট তৎপরতার সাথে মেশিন লার্নিং এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করেছেন। প্রযুক্তিগত দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তাকে গ্রাহক, কোম্পানির আয়-ব্যয় নিয়েও কাজ করতে হয়। এমনকি সায়েন্স টিমের সঙ্গেও কাজ করেন তিনি।’