তালিবানের ভাষাতেই পাল্টা জবাব! ৩ জেলার দখল নিল বিরোধী গোষ্ঠী, সংঘর্ষে খতম বহু তালিবানি
শুক্রবারই কাবুলের উত্তরে পঞ্জশীর উপত্যকার কাছেই অবস্থিত পোল-ই-হেসার জেলার দখল নেয় সাধারণ মানুষ। তালিবানদের পতাকা সরিয়ে আফগানিস্তানের পতাকা লাগানো হয় আবার।
কাবুল: ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল অবধি সহ্য করতে হয়েছিল তালিবানি শাসন। তার বিভীষিকা এখনও মনে রয়ে গিয়েছে। তাই এ বার মাথা নত করে নয়, বরং তালিবানের চোখে চোখ রেখেই কথা বলছে বহু আফগানবাসী। খইর মুহাম্মদ আন্দারাবি গোষ্ঠীর অধীনে একদল সাধারণ মানুষই তালিবানদের হাত থেকে মুক্ত করল আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশের পোল-ই-হেসার, দেহ সালাহ ও বানু জেলা।
সূত্র অনুযায়ী, জেলাগুলি পুনর্দখল করা ঘিরে ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬০ জন তালিবানি আহত বা নিহত হয়েছে। ওই গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়েছে, মাত্র তিনটি জেলা দখল করেই তারা থেমে থাকবেন না। ধীরে ধীরে বাকি জেলাগুলি দখলের জন্যও তারা অগ্রসর হবেন। তালিবানের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “সকলকে ক্ষমা করে দেওয়ার যে বুলি বলছে তালিবান, তা মোটেও অনুসরণ করছে না তারা।”
শুক্রবারই কাবুলের উত্তরে পঞ্জশীর উপত্যকার কাছেই অবস্থিত পোল-ই-হেসার জেলার দখল নেয় সাধারণ মানুষ। তালিবানদের পতাকা সরিয়ে আফগানিস্তানের পতাকা লাগানো হয় আবার। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিয়ো। এছাড়াও দেহ সালাহ ও বানু জেলাও তালিবানদের হাত থেকে কেড়ে দখল নেয় ওই গোষ্ঠী, এমনটাই জানা গিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। তবে বিনা যুদ্ধে পিছু হটেনি তালিবানরা। দীর্ঘক্ষণ সংঘর্ষ চলার পরই ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে না পেরে এলাকা ছেড়ে পালায় তালিবানিরা। সংঘর্ষে আহত বা মৃত কমপক্ষে ৬০ তালিবানি।
Public’s Resistance Forces under Khair Muhammad Andarabi claim that they have captured Pol-e-Hesar, Deh Salah and Banu districts in #Baghlan and advancing towards other districts. They are saying that the Taliban did not act in the spirit of a general amnesty. #Taliban pic.twitter.com/AS8isXlwNC
— Aśvaka – آسواکا News Agency (@AsvakaNews) August 20, 2021
পঞ্জশীর উপত্যকাই হল আফগানিস্তানের একমাত্র জায়গা, যেখানে এখনও দখল নিতে পারেনি তালিবানরা। সূত্রের দাবি, ঘানির পালিয়ে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ এই অঞ্চলেই লুকিয়ে রয়েছেন এবং সাধারণ মানুষদের উৎসাহিত করছেন তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে।
সম্প্রতিই তিনি এই পঞ্জশির থেকেই দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন যে, কোনও প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব থেকে সরে গেলে, পদত্যাগ করলে বা তাঁর মৃত্যু হলে ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্টই দেশের প্রেসিডেন্ট হন। প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তিনি যেহেতু আফগানিস্তানে আছেন, তাই তিনিই এখন প্রেসিডেন্ট। আর তিনি কখনওই কোনও পরিস্থিতিতেই তালিবানের সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নত করবেন না।
জানা গিয়েছে, তালিবান বিরোধী গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রয়াত আফগান রাজনীতিক আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ। তাঁর নেতৃত্বেই নর্দান অ্যালায়েন্সে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে আফগানদের। আফগান সেনার যে সকল সদস্যরা কোনওমতে তালিবানদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচেছেন, তাঁরা একে একে পৌঁছচ্ছে পঞ্জশিরে। আহমেদ মাসুদ সেখান থেকেই দেশ স্বাধীন করার ডাক দিয়েছেন। অন্যদিকে, তালিবানের তরফেও জানানো হয়েছে, শীঘ্রই তাদের প্রতিনিধি আহমেদ মাসুদের সঙ্গে দেখা করবে। আরও পড়ুন: ‘ইতিহাসে অন্যতম কঠিন কাজ’, মার্কিনবাসীদের সুরক্ষিতভাবে ঘরে ফেরা নিয়ে অনিশ্চিত বাইডেনও