
বাংলাদেশের সেনাকর্তারা মুখ খুললেই যেন হাসির পাত্রে পরিণত হন। এর আগে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের যে প্রাক্তন সেনাকর্তারা রাস্তায় নেমে কয়েক পা হাঁটতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠছিলেন, তাঁরাই আবার ক্যামেরার সামনে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, বাংলাদেশ নাকি ৭ দিনে ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যই দখল করে নেবে। এবার আরও এক প্রাক্তন বাংলাদেশি সেনাকর্তা, যিনি আবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস ঘনিষ্ঠ, হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের নর্থ ইস্টের সাত রাজ্য দখলের। আলম ফজলুর রহমান, বাংলাদেশের প্রাক্তন মেজর জেনারেল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভারত যে মুহূর্তে পাকিস্তানকে আক্রমণ করবে, সেই সুযোগে বাংলাদেশ উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যে আক্রমণ চালিয়ে দখল নেবে। এর জন্য প্রয়োজনে চিনের সাহায্য নেবে বাংলাদেশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনটাই লিখেছেন ফজলুর রহমান।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহলগাঁওতে নারকীয় হামলা চালিয়ে ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় পর্যটককে পাক জঙ্গিরা হত্যা করার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারত প্রত্যাঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর তিন বিভাগেই চূড়ান্ত তৎপরতা। উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে লাগাতার যুদ্ধবিমানের মহড়া চলছে। আরবসাগরে পাক নৌসেনার থেকে মাত্র ৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের ব্রহ্মস মিসাইল বোঝাই নৌবাহিনীর একাধিক রণতরী। রাজস্থানে দিনরাত মহড়া চালাচ্ছে ট্যাঙ্কবাহিনীও। এই যুদ্ধের আবহেই এবার আলপটকা মন্তব্য ভেসে এল বাংলাদেশের সেনার অন্দর থেকে। ফজলুর রহমান কিন্তু শুধুই একজন প্রাক্তন মেজর জেনারেল নন। গতবছর ইউনূস সরকার তাঁকে বেশ ভারী পদ দিয়েছে। বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রাক্তন প্রধান (এখন যা বোর্ডের গার্ড বাংলাদেশ) রহমান এখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গড়া ৭ সদস্যের একটি কমিটির প্রধান। এই কমিটি পিলখানা গণহত্যার তদন্তে করছে।
যদিও এই মন্তব্য করেও বেশ ফেঁসে গেছেন রহমান সাহেব। তাঁর এই মন্তব্যের দায় অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম স্পষ্ট জানিয়েছেন, ফজলুর রহমানের বক্তব্যের দায় সরকারের নয়। এটা তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য। প্রেস বিবৃতিতে শফিকুল আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এই ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যকে সমর্থন করে না। বাংলাদেশ সকল রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে ও সেইরকমই আচরণ আশা করে।’ ফজলুর রহমানের এই বক্তব্য সম্প্রতি মহম্মদ ইউনূসের চিন সফর থেকেই অনুপ্রাণিত বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, ইউনূস নিজেই বেজিংয়ে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যকে ‘ল্যান্ড লকড’ বলে মন্তব্য করে ভারতের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। বিদেশমন্ত্রকের তরফে ইউনূসের ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় কূটনৈতিক স্তরে।