সিডনি: করোনার দাপট বাড়তেই বাসিন্দাদের যথাসম্ভব বাড়িতে থাকার অনুরোধ করা হয়েছিল, জারি করা হয়েছিল লকডাউনও। কিন্তু সংক্রমণের উর্ধ্বমুখী হার বলছে অন্য কথা। এই পরিস্থিতিতে সিডনিতে আরও চার সপ্তাহের জন্য লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হল। বিধিনিষেধ ভাঙলে কড়া শাস্তি জুটবে, এ কথা বলেও সতর্ক করেছে পুলিশ প্রশাসন।
জুলাইয়ের শুরুতে লকডাউন ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, তিনদিনের মধ্যেই বিঘিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। কিন্তু ডেল্টা ভ্য়ারিয়েন্টের দাপটে ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ। নিরুপায় হয়েই তিনদিনের পরিকল্পনা জলে দিয়ে আরও চার সপ্তাহ অর্থাৎ আগামী ২৮ অগস্ট অবধি লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হল।
মঙ্গলবারই সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলসে নতুন করে ১৭৭ জন করোনা আক্রান্ত হন। সোমবারও এই শহরে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৭২ জন। শুরুর দিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিমানবন্দর থেকে করোনা আক্রান্ত এক কেবিন ক্রুতে নিয়ে আসার পরই ওই গাড়ির চালকের শেষে জুনের মাঝামাঝি সময়ে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে। সেই সংক্রমণই বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এরমধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে গোষ্ঠী সংক্রমণ। বহু করোনা আক্রান্তই উপসর্গহীন হওয়ায় তারা বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন। পরে করোনা পরীক্ষা করা হলে কমপক্ষে ৪৬ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলে, যারা সম্পূর্ণরূপে উপসর্গহীন ছিলেন। এই আক্রান্তদের মাধ্যমেই আরও মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা।
স্টেট প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান জানান, যা পরিকল্পনা ছিল, তার সম্পূর্ণ বিপরীত হয়েছে। ক্রমশ বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে আরও কঠোরভাবে লকডাউন, সামাজিক দূরত্ববিধি অনুসরণ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লকডাউনের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতেও। আর্থিক ক্ষতি যথাসম্ভব কম করতে নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এ দিকে, ধীরগতিতে টিকাকরণের জন্য প্রশাসনকেই দোষারোপ করছে সাধারণ মানুষ। লকডাউন ঘোষণার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে বলেও দেখা গিয়েছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, “সংক্রমণ এড়ানোর কোনও সহজ উপায় নেই। আমাদের বিধিনিষেধ মেনেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সমালোচনা তো হবেইষ কিন্তু আমাদোর নিজের কাজ জারি রাখতে হবে।” আরও পড়ুন: দুটি ডোজ়ের পরও শরীরে বাসা বাঁধছে করোনা, আমেরিকায় ফিরল মাস্ক পরার নিয়ম!