কাবুল: ইন্টারনেট থেকে রাতারাতি উধাও তালিবানের অস্তিত্ব। শুক্রবার রাতেই ইন্টারনেট থেকে কার্যত গায়েব হয়ে যায় তালিবানের ওয়েবসাইট। সঠিক কারণ এখনও অবধি জানা না গেলেও প্রযুক্তিগত কোনও সমস্যার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাস্তো, দারি, আরবিক, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় পরিচালিত হয় তালিবানের ওয়েবসাইটগুলি। কিন্তু শুক্রবার থেকে পাঁচটি ওয়েবসাইটেরই দেখা মিলছে না ইন্টারনেটে। ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রের নজরেই পড়ে প্রথম এই বিষয়টি। তালিবানের ওয়েবসাইটগুলিকে সুরক্ষাদাতা ক্লাউডফ্লেয়ারের কাছে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারাও কোনও জবাব দেয়নি।
আফগান তথা সারা বিশ্বের উদ্দেশ্যে তালিবানি কার্যকলাপ থেকে শুরু করে যাবতীয় গতিবিধি বা সিদ্ধান্তের আপডেট এই ওয়েবসাইটগুলিতেই দেওয়া হত। কিন্তু শুক্রবার থেকেই আচমকা অকেজো হয়ে পড়ে তালিবানদের পাঁচটি ভাষার ওয়েবসাইট। এমনকি ইন্টারনেটে তাদের অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ দিকে,শুক্রবারই হোয়াটসঅ্যাপের তরফেও তালিবানি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নম্বর সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে একটি অনলাইন মাধ্য়মের সাহায্যে। সরকার গঠন বা সাংগঠনিক রদবদলের জন্য কিছু সময়ের জন্য ওয়েবসাইট বন্ধ রাখা হলেও ফেসবুকে তালিবানের উপর ব্যান ঘোষণার পর হোয়াটসঅ্যাপ থেকেও তাদের গ্রুপ সরিয়ে দেওয়া তালিবানদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় ধাক্কা দেবে।
মঙ্গলবারই ফেসবুক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, তালিবানরা আমেরিকার আইন অনুযায়ী, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। তাই সংস্থার নিয়ম মেনেই তালিবান সংক্রান্ত যাবতীয় পোস্টের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। তালিবানের নিজস্ব যাবতীয় অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সময়ই জানানো হয়েছিল, হোয়াটসঅ্যাপেও সক্রিয় তালিবানরা। তারা যাবতীয় যোগাযোগ এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্য়মেই রাখে। হোয়াটসঅ্যাপও নিজেদের নীতি পর্যালোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও এখনও অবধি হোয়াটসঅ্যাপের তরফে এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পরই তালিবানরা গোটা দেশে নিজেদের আধিপত্য ঘোষণা করে। এরপরই একের পর এক সোশ্যাল মাধ্যম থেকে তালিবানের অস্তিত্ব মুছে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের তরফে যাবতীয় অ্যাকাউন্ট ও পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে তালিবানি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি টুইটার।
ইন্টারনেটের যুগে সোশ্যাল মাধ্যমগুলির সাহায্যেই বিশ্বের কাছে নিজেদের জেহাদি চিন্তাভাবনা তুলে ধরে তালিবান, আল কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠন। সেখানেই তাদের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হলে সন্ত্রাসবাদ দমনেও কিছুটা সাহায্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: তালিবানের ভাষাতেই পাল্টা জবাব! ৩ জেলার দখল নিল বিরোধী গোষ্ঠী, সংঘর্ষে খতম বহু তালিবানি