AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Iran Israel War: সত্যিই শুরু হয়ে গেল তৃতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ!

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে এবার তারা পশ্চিম এশিয়ার মার্কিন সেনাঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করেও হামলা চালাবে। পশ্চিম এশিয়ায় ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ঘাঁটিতেও হামলা হবে। পারসিয়ান গাল্ফ থেকে রেড সি পর্যন্ত এই অঞ্চলে বাহরিন, মিশর, ইরাক, জর্ডন, কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে প্রায় ২০টা মিলিটারি বেস রয়েছে আমেরিকার। এর একটাতেও যদি ইরানের মিসাইল গিয়ে পড়ে তাহলে কী হবে ভাবুন।

Iran Israel War: সত্যিই শুরু হয়ে গেল তৃতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 17, 2025 | 2:09 PM

ইরান-ইজরায়েলের এই লড়াই কি সীমিত সংঘর্ষেই আটকে থাকবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের চেহারা নেবে। যুদ্ধ লম্বা হলে কী হবে? ভারতের ওপর কি কোনও প্রভাব পড়বে? প্রশ্ন হলো, আরও একটা উপসাগরীয় যুদ্ধ। থার্ড গাল্ফ ওয়ার কি শুরু হয়ে যেতে পারে? আমেরিকা যখন আগাগোড়া বিষয়টার মধ্যে আছে, তখন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ডোনাল্ড ট্রাম্প এদিকে বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ ভালো নয়। আর অন্যদিকে, ইজরায়েলকে তিনি ইরানে মিসাইল ছোঁড়ায় উত্‍সাহ দিচ্ছেন। ইরানও বলছে যে শুধু ইজরায়েল নয়। আমরা এবার আমেরিকাকেও মারব। ফলে আরেকটা উপসাগরীয় যুদ্ধের কথা উঠেই আসছে।

১৯৮০ সাল। প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ। সাদ্দাম হুসেন ইরান আক্রমণ করলেন। সাদ্দামের অভিযোগ ছিল, ইরাকের শিয়া গোষ্ঠীগুলোকে উত্‍সাহ দিয়ে তাঁর বাথ পার্টির সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে ইরান। ৮ বছর পর ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ থামে। ততদিনে দুনিয়াজুড়ে তেলের দাম আগুন হয়ে গেছে। ২ বছর পরেই সাদ্দাম হুসেন আবার কুয়েত দখল করে নিলেন। শুরু হয়ে গেলো সেকেন্ড গাল্ফ ওয়ার। সাদ্দামের বিরুদ্ধে আমেরিকা তার বন্ধু দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করল অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম। ৬ মাস পর যুদ্ধ থামল। হার মানতে বাধ্য হলেন সাদ্দাম। তেলে আবার লাগল আগুন। সেদিন ভারতের কী অবস্থা হয়েছিল ভাবুন। ১৯৮৫ সালে যখন ফার্স্ট গাল্ফ ওয়ার চলছে তখন থেকেই তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। রাজীব গান্ধী তখন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের সময় দাম আরও বাড়ে। আর ৯১’ সালে চন্দ্রশেখর যখন প্রধানমন্ত্রী তখন ভারতের কাছে আর মাত্র ৩ সপ্তাহের আমদানি খরচ মেটানোর মত বিদেশি মুদ্রা আছে। নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেই ক্রাইসিস থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য তাঁর অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। মনমোহন সিংয়ের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় নতুন ভারতের। গাল্ফ ওয়ারের সময় তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি বিল এত বেড়ে গিয়েছিল যে ভারত চরম ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট ক্রাইসিসে পড়ে যায়।

আজ তাই ইরান-ইজরায়েলের লড়াই দেখে কারও যদি ভুরু কুঁচকে যায়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর কেন বলছি থার্ড গাল্ফ ওয়ারের আশঙ্কার কথা। আমেরিকার সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি ভেস্তে গেল। কাল শেষদফার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ওমানের রাজধানী মাস্কটে। ইরান জানিয়ে দিয়েছে যে তারা সেই বৈঠকে যাচ্ছে না। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিক সম্মেলনে খোলাখুলি বলেছেন যে তিনি ইরানকে তাদের পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে ষাট দিন সময় দিয়েছিলেন। ইরান শোনেনি। ৬১ দিনের মাথায় ইজরায়েল মেরেছে। বেশ করেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মার্কিন প্রশাসনের একদম ওপরের স্তর থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে লিখেছে যে ইরান আক্রমণের আগে নেতানিয়াহু ফোন করেন ট্রাম্পকে। ট্রাম্পের ষোলো আনা সম্মতি মেলার পরই তেল আভিভ থেকে তেহরানে উড়ে যায় মিসাইল।

ওয়াশিংটন পোস্ট আবার লিখেছে, ইজরায়েলের মিসাইল হামলায় ইরানের একাধিক পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে, যেগুলো ছিলো মাটির অনেক নীচে। ইজরায়েল নিজেদের অস্ত্রে এগুলো ধ্বংস করতে পারত না। আমেরিকা শক্তিশালী বোমা দিয়েছে বলেই তারা কাজ হাসিল করতে পেরেছে। ফলে, এরকম একটা অবস্থায় ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে এবার তারা পশ্চিম এশিয়ার মার্কিন সেনাঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করেও হামলা চালাবে। পশ্চিম এশিয়ায় ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ঘাঁটিতেও হামলা হবে। পারসিয়ান গাল্ফ থেকে রেড সি পর্যন্ত এই অঞ্চলে বাহরিন, মিশর, ইরাক, জর্ডন, কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে প্রায় ২০টা মিলিটারি বেস রয়েছে আমেরিকার। এর একটাতেও যদি ইরানের মিসাইল গিয়ে পড়ে তাহলে কী হবে ভাবুন। ২০২০ সালে বাগদাদ এয়ারপোর্টে মার্কিন হামলায় নিহত হন ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের তত্‍কালীন প্রধান কাসেম সোলেমানি। সোলেমানির মৃত্যুর পর ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ছোট আকারে হামলা চালিয়েছিল ইরান। আর এবার তারা আরও বড় আকারে হামলার হুমকি দিচ্ছে। সেবার না হয় ধরে নিলাম আমেরিকা তাদের পয়লা নম্বর শত্রুকে হত্যা করার পর কিছুটা হলেও হালকা মেজাজে ছিল। কিন্তু, এবার। তেহেরান আরও জানিয়ে দিয়েছে যে পরমাণু চুক্তি না হওয়ায় তারা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট চালিয়ে যাবে। ফলে, পশ্চিম এশিয়ার মাটিতে যে কোনও দিন বড় আকারে মার্কিন সেনার বুটের দাপাদাপি শুরু হয়ে যেতে পারে। ইরানের মার ইজরায়েলের গায়ে গিয়ে খুব বেশি লাগতে শুরু করলে ট্রাম্পের চুপ থাকা কঠিন হবে। তাই থার্ড গাল্ফ ওয়ারের আশঙ্কা কিছুতেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।