
ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের (Bangladesh Interim Government) অন্দরেও তুমুল অস্থিরতা। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল দুই উপদেষ্টাকে। তবে তারা এখনই পদ ছাড়তে নারাজ। এদের নাম চমকে দেওয়ার মতো। সরকারি সূত্রে খবর, এই দুই উপদেষ্টা, যাদের পদ ছাড়তে বলা হয়েছে, তাঁরা হলেন মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের পদ থেকে মাহফুজ আলম ও সজীব ভুঁইয়াকে গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আরও সময় চেয়েছেন। মাহফুজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা। আসিফ মাহমুদ সজীব হলেন সরকার উপদেষ্টা।
জানা গিয়েছে, মাহফুজ আলম আগামী বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এখনও পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তিনি এই অন্তর্বর্তী সরকারেই থাকতে চান। তবে আসিফ মাহমুদ ইস্তফা দিতে পারেন। তিনি গত ১৪ অগস্ট সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, নির্বাচন তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করবেন। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই উপদেষ্টা নিজেদের প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে মাহফুজ আলম বলেছিলেন, ‘দুই মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি যে আমি কখন নেমে যাই। মানে আমি কখন নামব, আমি জানি না।’
সূত্রের খবর, ছাত্র উপদেষ্টারা চাইছেন ছাত্র প্রতিনিধিদের যে কেউ শেষ পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদে থাকুক। তাঁরা মনে করছেন, না থাকলে উপদেষ্টা পরিষদে কেউ কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ৫ অগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পড়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ সরকারের পতন হয়। তারপর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস, তার সঙ্গে আরও ২২ জন উপদেষ্টা রয়েছেন, যার মধ্য়ে দুইজন ছাত্র প্রতিনিধি। আগে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। পরে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেন এবং তার আহ্বায়ক হন। আগেই উপদেষ্টা হিসাবে শপথ নিলেও, নাহিদের ইস্তফার পর মাহফুজ আলম তথ্য উপদেষ্টার পদ পান।
সূত্রের খবর, এই দুই উপদেষ্টাই এনসিপির ঘনিষ্ঠ বলে তাদের ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। এনসিপি নেতাদের বক্তব্য, বিভিন্ন দলের কাছ থেকে নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে কেন শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরকার থেকে সরে যেতে বলা হচ্ছে? প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও এনসিপি এই বিষয়টি তুলেছে।
আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে। তার আগেই এই টালমাটাল পরিস্থিতি অন্তর্বর্তী সরকারের অন্দরে।