কিয়েভ: ১৮ দিনে পা রাখতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ (Russia-Ukraine War)। টানা দুই সপ্তাহ ধরে ধ্বংসলীলা চালানোর পর কি ধীরে ধীরে মন গলছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-র? শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি (Volodymyr Zelensky) তেমনটাই ইঙ্গিত দিলেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধ থামাতে রাশিয়া আলোচনার ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছে”। তিনি জানান, বিগত আলোচনার তুলনায় এবারে রাশিয়ার আলোচনার পদ্ধতি বেশ কিছুটা আলাদা। আগে মস্কোর তরফে কেবল সতর্কবার্তা বা শর্তই দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়ার থেকে নমনীয় ইঙ্গিত পেয়ে তিনি খুশি হয়েছেন বলেও জানান জ়েলেনস্কি।
শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দেশের আলোচনার ভালদিকে পরিবর্তন লক্ষ্য করার কথা জানানোর পরই রাশিয়ার তরফে যে ইঙ্গিত মিলেছে, তাতে তিনি খুশি। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে তিনি জানান। সেখানেও রাশিয়ার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এবং জ়েলেনস্কি যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রাজি, সেই কথাও জানান।
তবে রাশিয়া যে এখনও হামলা থামায়নি, সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কিয়েভে আক্রমণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি আমাদের সবাইকে মেরে ফেলা হয়, তবেই কিয়েভ দখল করা সম্ভব। আর সেটাই যদি তাদের (রুশ সেনা) লক্ষ্য হয়, তবে আসুক তারা। যদি তারা লাগাতার বোমাবর্ষণ করে কিয়েভের ইতিহাস, ইউরোপের ইতিহাস মুছে ফেলতে চায়, তবে তারা কিয়েভে প্রবেশ করতে পারে, কিন্তু সেখানে আমরা কেউ আর থাকব না। আমাদের নিশ্চিহ্ন করে তবেই প্রবেশ সম্ভব। যদি রাশিয়ার তরফে ১০ লক্ষ সেনা আনা হয়, তবুও তারা ইউক্রেন দখল করতে পারবে না।”
ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রীও গতকাল জানান, রাশিয়ার সেনাবাহিনী মারিউপোলের এক মসজিদে হামলা চালিয়েছে, যেখানে মহিলা, শিশু সহ কমপক্ষে ৮০ জন নাগরিক আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাশিয়ার রকেটের আঘাতে কিয়েভের ভাসিলকিভ শহরের এয়ারবেসও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খারকিভ, ডনবাসেও নতুন করে হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী।
প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও অবধি ১৩০০-র কাছাকাছি ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। এই প্রথম ইউক্রেনের তরফে তাদের বাহিনীতে হতাহতের খবর জানানো হল। অন্যদিকে, গত ২ মার্চ রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছিল, যুদ্ধে তাদের ৪৯৮ জন যোদ্ধা মারা গিয়েছে। গতকাল প্রেসি়ডেন্ট জ়েলেনস্কি জানান, মৃতের আসল সংখ্যাটি ১২ হাজারের কাছাকাছি।