কাবুল: দখল হয়েছে বাকি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি। বাকি রয়েছে শুধু কাবুলই। শুক্রবার আফগানিস্তানের কান্দাহার, হেরাত সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করার পর কাবুলের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল তালিবানরা।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশই দখল করে নিয়েছে তালিবানিরা। শুরু হয়েছে নিরাপরাধদের উপর অত্যাচারও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে জঙ্গিদের সঙ্গে বিয়ে করতে বা তাদের যৌনদাসী হয়ে থাকতে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের তরফে তাদের প্রতিনিধিদেরও ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের প্রায় কয়েক হাজার নাগরিককে এয়ারলিফ্ট করে উদ্ধার করে আনার পরিকল্পনা চলছে। আমেরিকার তরফে তিন হাজার সেনা পাঠানো হচ্ছে কাবুলে মার্কিন দূতাবাসে আটকে থাকা আধিকারিকদের উদ্ধারের জন্য। অন্যদিকে, ব্রিটেনের তরফেও ৬০০ সৈন্য পাঠানো হচ্ছে ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য। গতকালই কাবুলের বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় মার্কিন বিমান। আজই উদ্ধারকার্য শেষ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও জানিয়েছেন, আফগানিস্তানকে সবরকমভাবে সমর্থন জানানো হলেও বাইরে থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি শোধরানো নিয়ে বিশেষ কিছু করা সম্ভব নয়।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই আফগানিস্তানে ক্ষমতা প্রদর্শন শুরু করেছে তালিবান গোষ্ঠী। সম্প্রতিই পেন্টাগনের তরফে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, যে হারে শক্তি প্রদর্শন করছে তালিবানরা, তাতে ৯০ দিনের মধ্যেই আফগানিস্তান দখল করে নেবে। কিন্তু এত দ্রুত যে গোটা দেশ জুড়ে বিস্তার করবে তালিবানরা, তা কল্পনাও করতে পারেনি আফগান বা মার্কিন সেনা।
বর্তমানে শেষ ধাপের মার্কিন সেনা প্রত্যাহার চলছে আফগানিস্তানে। তারই আগে তালিবান জঙ্গিরা চারদিক থেকে মার্কিন ও আফগান সেনাকে ঘিরে ফেলায় বাধ্য হয়ে আত্মসমর্প করে জওয়ানরা। তালিবানরা অস্ত্রশস্ত্র, মিলিটারি সামগ্রী ও গাড়ি দখল করে নেয় তালিবানরা। এর জেরে তালিবানিদের ক্ষমতা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার লোগহার প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-আলম শহরও দখল করে নেয় তালিবানরা, যা কাবুল থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। খইরদ্দিন লোগারি শহরের বাসিন্দারাও বুঝতে পারছেন না যে তারা তালিবানদের দখলে চলে গিয়েছেন কিনা। গতকালই কান্দাহারের বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন আফগান সেনাদের শহর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। তালিবানের তরফেও জানানো হয়, কান্দাহার সম্পূর্ণরূপে দখল করা হয়েছে।
কয়েক ঘণ্টা বাদেই তালিবানদের তরফে জানানো হয়, তারা হেলমন্দ প্রদেশের লস্কর গাহ শহরও দখল করে নিয়েছে। শহরের নিরাপত্তা বাহিনীরাও এই খবরকে নিশ্চিত করেন। জানান, তালিবানদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে হারের পরই আফগান সেনারা শহর ছেড়ে চলে গিয়েছে। হেরাতের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তি ইসমাইল খানকেও গতকাল অপহরণ করে তালিবানিরা। যদিও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আরও পড়ুন: ‘দানিশের ভুল ছিল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করা’, ভারতের অবস্থান নিয়েও কড়া বার্তা তালিবানের