‘দানিশের ভুল ছিল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করা’, ভারতের অবস্থান নিয়েও কড়া বার্তা তালিবানের
তালিবানরা ভারতে মিত্র মনে করে কিনা, এই প্রশ্ন করা হলে জবাবে মুহাম্মদ সোহেল শাহিন বলেন, "আপনাদের উচিত ভারত সরকারকে প্রশ্ন করা যে তারা আমাদের শত্রু মনে করেন নাকি মিত্র।"
নয়া দিল্লি: আফগানিস্তানের সংঘর্ষের চিত্র তুলতে গিয়েই গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। সেই সময় তালিবানের তরফে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হলেও শুক্রবার তালিবান মুখপাত্র কার্যত দানিশের উপরই তাঁর মৃত্যুভার চাপিয়ে দিলেন। আফগান সেনা ও তালিবানের গুলির লড়াইয়ে মৃত দানিশের ভুল ছিল যে সে তালিবানদের সঙ্গে আগে থেকে এই বিষয়ে কথা বলেনি।
গতকালই খবর মেলে কান্দাহার, হেরাতের মতো আফগানিস্তানের বড় বড় শহর দখল নিয়েছে তালিবানিরা। একটি সাক্ষাৎকারে তালিবান মুখপাত্র মুহাম্মদ সোহেল শাহিন বলেন, “তালিবানরা আফগানিস্তানের ৯০ শতাংশই দখল করে নিয়েছে।” দানিশের মৃত্যু প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের সেনার হাতে ওনার মৃত্যু হয়েছে, এ কথা বলতে পারেন না। উনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি কেন? আমরা বহুবারই ঘোষণা করেছিলাম যে সাংবাদিকরা আমাদের এলাকায় এলে তারা যেন সেই বিষয়ে আমাদের অবগত করেন। আমরা তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। কিন্তু দানিশ কাবুলের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ছিল। কে পুলিশ, কে সেনা আর কে সাংবাদিক, কোনও ফারাকই বোঝা যাচ্ছিল না। দুই পক্ষের গুলির লড়াইয়ের মাঝে তাঁর মৃত্য়ু হয়, সুতরাং কার গুলি লেগে মৃত্য়ু হয়েছে, এ কথা বলা সম্ভব নয়।”
সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয় যে, তালিবানরা দানিশ সিদ্দিকির পরিচয় জানা সত্ত্বেও তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে খুন করে এবং গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁর শরীর। এই রিপোর্টকে সম্পূর্ণ অসত্য দাবি করে তিনি বলেন, “এই নিয়ে দুই-তিনবার খুনের অভিযোগকে অসত্য বলে জানিয়েছি আমরা। আমাদের নীতি এরকম নয়। হয়তো আফগান সেনাই আমাদের কালিমালিপ্ত করতে এই ধরনের কাজ করেছে। কোনও দেহকে বিনষ্ট করা ইসলাম বিরোধী।”
সাংবাদিকরা সরাসরি তালিবানিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র জানান, বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে সাংবাদিকরা এসে বাস্ত চিত্র নিয়ে প্রতিবেদন লিখতেই পারেন। ওনারা আমাদের অঞ্চলে এসে সত্যিটাও নিজের চোখেই দেখতে পারেন।
মার্কিন সেনা প্রত্য়াহার শুরু হতেই আফগানিস্তানে ফের একবার আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে তালিবানরা। ইতিমধ্যেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি তালিবানদের দখলে চলে গিয়েছে। আফগানিস্তানের হাতে রয়েছে কেবল রাজধানী কাবুল ও হাতে গোনা কয়েকটি শহর। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কাছ থেকেও সাহায্য চেয়েছে আফগান প্রশাসন।
তালিবানরা ভারতে মিত্র মনে করে কিনা, এই প্রশ্ন করা হলে জবাবে মুহাম্মদ সোহেল শাহিন বলেন, “আপনাদের উচিত ভারত সরকারকে প্রশ্ন করা যে তারা আমাদের শত্রু মনে করেন নাকি মিত্র। যদি ভারত বন্দুক, অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আফগান সেনাকে সাহায্য করে এবং অশান্তির সৃষ্টি করে, তবে তা শত্রুর পরিচয়ই হবে। কিন্তু যদি ভারত দেশের শান্তি ও মঙ্গলকামনায় কাজ করে, তবে তাকে শত্রু বলে ভাবা হবে না। পুরোটাই ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।” আরও পড়ুন: বাদ গেল না ৩ বছরের মেয়েটা, এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ৫ জনকে ঝাঁঝরা করল বন্দুকবাজ