
ওয়াশিংটন: ‘বন্ধু’ ভারতকে হারিয়ে ফেলেছে আমেরিকা? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) নিজেই সে কথা স্বীকার করে নিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টে এখন হইচই। কী লিখেছেন তিনি? ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ভারত ও রাশিয়াকে চিনের কাছে হারিয়ে ফেললাম’।
ট্রাম্পের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছেন তিন রাষ্ট্রনেতার ছবি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একসঙ্গে দাঁড়ানো।সেই পোস্টের নীচে তিনি লিখেছেন, “মনে হচ্ছে ভারত, রাশিয়াকে চিনের কাছে হারিয়ে ফেলেছি। আশা করি ওদের দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ হোক!”
রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপরে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছিল আমেরিকা। যা বিশ্বের মধ্যে প্রায় সর্বোচ্চ হার। ট্রাম্পের দাবি ছিল, ভারত সর্বোচ্চ শুল্ক নেয়, তার কারণে আমেরিকা ভারতে বিশেষ ব্যবসা করতে পারে না। ভারত সেই হুমকির সামনে মাথা নত করেনি। এখনও রাশিয়ার কাছ থেকে ক্রুড তেল কিনছে।
ট্রাম্পের পোস্ট।
আমেরিকা যখন ভারতের উপরে শুল্ক চাপিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, সেখানেই ভারতের পাশে দাড়িয়েছে চিন ও রাশিয়া। সম্প্রতিই চিনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সামিটে যোগ দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন। তিন রাষ্ট্রনেতার এই সাক্ষাৎ ও আলোচনা নিয়ে গোটা বিশ্বে চর্চা যে আমেরিকাকে একঘরে করতে ভারত-চিন-রাশিয়া মিলে ত্রি-শক্তি তৈরি করছে।
এদিকে, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সচিব পিটার ন্যাভারোও ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন।বলেছিলেন, ‘রাশিয়া নয়, ভারতের দরকার আমেরিকাকে’। আবার ইউক্রেনের যুদ্ধকে মোদীর যুদ্ধ বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। আজ, ৫ সেপ্টেম্বর ন্যাভারোর সেই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “মিস্টার ন্যাভারোর করা মন্তব্য আমরা দেখেছি এবং তা খারিজ করছি। আমরা এই বিষয় নিয়ে কথাও বলেছি। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশই অংশীদারিত্বের সম্পর্ক ভাগ করে যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মিলিত আগ্রহ ও সম্পর্কের উপরে নির্ভরশীল। বহু পরিবর্তন, প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই সম্পর্ক। পারস্পরিক সম্মান ও মিলিত আগ্রহের উপরে ভিত্তি করেই এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য। বর্তমানে আলাস্কায় দুই দেশের মিলিত সামরিক প্রশিক্ষণ চলছে। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”