ওয়াশিংটন: মাস কয়েক আগে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে আনার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রায় ২০ বছর সে দেশে থাকার পর একে একে সরিয়ে আনা হচ্ছে আমেরিকার বাহিনীকে। আর সেই ঘোষণার পর থেকেই নতুন উদ্যমে একের পর এক শহরে দখলদারি শুরু হয়েছে তালিবানের। তালিবানি চোখ রাঙানিতে জেরবার সে দেশের বাসিন্দারা। শিশু, মহিলাদের ওপর চলছে নির্মম অত্যাচার। শহরে শহরে জয়ের আনন্দে গাড়ি ছোটাচ্ছে, গুলি চালাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীরা। এই অবস্থাতেও সেনা সরানোর সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন জো বাইডেন। তবে মার্কিন আধিকারিকদের ফেরাতে পাঠানো হচ্ছে কয়েক হাজার সৈন্য।
এর আগে ৩ হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আমেরিকা। সেই সংখ্যা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫ হাজার। আমেরিকার সব নাগরিক, যাঁরা আফগানিস্তানে রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনাই বাইডেনের মূল লক্ষ্য। আর আমেরিকার সেই উদ্যোগে যদি তালিবান কোনও বাধা দেয়, তাহলে ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, মার্কিন সেনাকে ওই মিশনে যদি বাধা পেতে হয়, তাহলে কড়া জবাব দেবে আমেরিকা। তালিবান কাবুলের আরও কাছাকাছি এগোতেই সৈন্য সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন।
মার্কিন সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে শনিবার ফোনে কথা হয়েছে আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানির। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী ভাবে আনা যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পেন্টাগনের তরফে জানা গিয়েছে ৩১ অগস্টের মধ্যে ৩০ হাজার মার্কিনিকে ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য। অন্যদিকে, ব্রিটেনের তরফেও ৬০০ সেনা পাঠানো হচ্ছে ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য।
এ দিকে, রাতারাতি আফগানিস্তানের পূর্বের শহর জালালাবাদের দখল নিয়েছে তালিবান। মাজার-ই-শরিফ দখল করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জালালাবাদ চলে গিয়েছে তালিবানের দখলে। এই মুহূর্তে আফগান সরকারের হাতে পড়ে রয়েছে শুধুমাত্র কাবুল। কাবুল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই অপেক্ষা করছে তালিবান। রাজধানী যেন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, এমনটাই দাবি সন্ত্রাসবাদীদের। জানা গিয়েছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই মাজার-ই-শরিফ দখল করেছে তালিবান। সেখানে শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের গাড়ি, বাইক। শূন্যে গুলি চালাচ্ছে তারা।
গতকালই আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি আফগানবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন। দেশবাসীকে বলেছেন, বিগত ২০ বছরে ফিরে পাওয়া গৌরব হারাতে দেবেন না তিনি। দেশের সেনাবাহিনীকে নিজেদের অবস্থানে ফেরানোই যে মূল লক্ষ্য, সে কথাও সাফ জানিয়েছেন ঘানি। আফগানবাসীকে আর মরতে দেবেন না, এমন কথাও বলেছেন। আর তারপর কয়েক ঘণ্টা পরই আরও এক শহর চলে গেল তালিবানি দখলে। আরও পড়ুন: সাত সকালে হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে, দুই মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ