দীপাবলিতে ৫০ হাজার কোটির লোকসান হতে পারে চিনের
ক্যাট আরও জানিয়েছে, এই বছর রাখীবন্ধন উৎসব চলাকালীন চিনের প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে আর গণেশ চতুর্থতে ৫০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। আর এই প্রবৃত্তি দীপাবলির সময়ও দেখতে পাওয়া যেতে পারার কারণে স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে যে, শুধু ব্যবসায়ীরাই যে চিনা দ্রব্য বর্জন করছেন তা নয় বরং উপভোক্তারাও চিনা দ্রব্য কিনতে ইচ্ছুক নন।
করোনা অতিমারীর পর থেকে লাগাতার চিনা দ্রব্য বর্জনের আহ্বান করা ব্যবসায়ীরা অনুমান করছেন এবার বড় ধাক্কা খেতে পারে চিন। দেশজুড়ে ব্যবসায়ীরা কোভিড মহামারীর কারণে আগেই যথেষ্ট চাপে ছিলেন, কিন্তু এখন দীপাবলি উৎসবের মরশুমে দেশের বাজারে গ্রাহক সংখ্যা বাড়ার কারণে তারা ব্যবসা ভাল হওয়ার অনুমান করছেন। শুধু তাই নয় ব্যবসায়ীদের মতে এবার দেশে স্বদেশী দীপাবলি পালিত হবে।
কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (CAIT)-এর বক্তব্য দীপাবলি উৎসবের বিক্রিবাট্টা চলাকালীন গ্রাহকদের খরচা করা টাকার মাধ্যমে দেশের অর্থব্যবস্থায় প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ হতে পারে। ক্যাট জানিয়েছে, গত বছরের মতো এবছরও তারা ‘চিনা দ্রব্য বর্জনের’ আহ্বান জানিয়েছে আর তারা আশা করছে নিশ্চিতভাবে দেশের ব্যবসায়ী আর আমদানিকারীরা চিন থেকে জিনিসপত্র আমদানি করা বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে এ বছরের দীপাবলির উৎসবের মরশুমে চিনের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়ীক লোকসান হতে চলেছে। এছাড়াও আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, গত বছর থেকেই উপভোক্তারাও চিনা দ্রব্য কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, যে কারণে ভারতীয় দ্রব্যের চাহিদা বাড়ার পুরো সম্ভবনা রয়েছে।
ক্যাটের জাতীয় সভাপতি বিসি ভরতিয়া আর জাতীয় মহামন্ত্রী প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেছেন, ক্যাটস রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেড ডেভলপমেন্ট সোসাইটির তরফে সম্প্রতিই বিভিন্ন রাজ্যের ২০টি শহর, যেগুলিকে তারা বিতরণ শহরের তকমা দিয়েছেন, সেগুলিতে একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এ বছর এখনও পর্যন্ত ভারতীয় ব্যবসায়ী এবং আমদানীকারকদের তরফে দীপাবলির জিনিসপত্র, বাজি বা অন্যান্য জিনিসপত্রের কোনও অর্ডার চিনকে দেওয়া হয়নি। ফলে এ বছরের দীপাবলি বিশুদ্ধভাবে ভারতীয় দীপাবলি হিসেবে পালন করা হবে। ক্যাট যে কুড়িটি শহরে এই সমীক্ষা চালিয়েছে সেগুলি হল নতুন দিল্লি, আহমেদাবাদ, মুম্বই, নাগপুর, জয়পুর, লখনউ, চণ্ডীগঢ়, রায়পুর, ভুবনেশ্বর, কলকাতা, রাঁচী, গুয়াহাটি, পাটনা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, মাদুরাই, পণ্ডিচেরী, ভোপাল এবং জম্মু।
ক্যাটের তরফে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক বছর রাখীবন্ধনের সময় থেকে নতুন বছর পর্যন্ত ৫ মাসের উৎসবের মরশুমে ভারতীয় ব্যবসায়ী আর আমদানীকারকেরা চীন থেকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার জিনিসপত্র আমদানী করে থাকে। ক্যাটের এই বছর চিনা দ্রব্য বহিষ্কারের আহ্বান চিনের ব্যবসায় বড় ধাক্কা দিতে পারে আর এবছর চাহিদা পূরণের জন্য দেশজুড়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ভারতীয় জিনিসের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন। ক্যাট আরও জানিয়েছে, এই বছর রাখীবন্ধন উৎসব চলাকালীন চিনের প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে আর গণেশ চতুর্থতে ৫০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। আর এই প্রবৃত্তি দীপাবলির সময়ও দেখতে পাওয়া যেতে পারার কারণে স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে যে, শুধু ব্যবসায়ীরাই যে চিনা দ্রব্য বর্জন করছেন তা নয় বরং উপভোক্তারাও চিনা দ্রব্য কিনতে ইচ্ছুক নন। এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া এবং আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর একটি শক্তিশালী যোগদান।
আরও পড়ুন: Enforcement Directorate: আর্থিক তছরুপের মামলায় হেলিকপ্টার বাজেয়াপ্ত করল ইডি