Parle-G: ব্রিটিশ আমল থেকে লড়াই চালাচ্ছে Parle-G, কীভাবে মেলে এখনও ৫ টাকায়, জানুন গল্প

FMCG Product: ১৯৬০ সালে কড়া প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে পার্লে-জি। ব্রিটানিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকতে নতুন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করে পার্লে-জি। আনা হয় প্যাকেজিংয়ে পরিবর্তন। ছোট চুলের এক বাচ্চা মেয়ের ছবি জোড়া হয় বিস্কুটের পাশে। ধীরে ধীরে ওই বাচ্চা মেয়েটিই পার্লে-জির 'আইকন' বা পরিচিতি হয়ে ওঠে। পরে পার্লে-জির 'জি'তেও পরিবর্তন আনা হয়। গ্লুকজের বদলে "জি ফর জিনিয়াস" বলে প্রচার শুরু করা হয়।

Parle-G: ব্রিটিশ আমল থেকে লড়াই চালাচ্ছে Parle-G, কীভাবে মেলে এখনও ৫ টাকায়, জানুন গল্প
পার্লে-জি এখনও সস্তা কীভাবে?Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Dec 22, 2023 | 5:36 PM

নয়া দিল্লি: শৈশবে বিস্কুট বলতেই প্রথমেই যে ব্রান্ডের নাম মনে আসত, তা হল পার্লে-জি (Parle-G)। বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে, পার্লে-জির জনপ্রিয়তা বা প্রাসঙ্গিকতায় একটুও ভাঁটা পরেনি। ভারতের প্রতিটি ঘর বা পরিবারই পার্লে-জির নামের সঙ্গে পরিচিত। এদিকে, এই বিস্কুটের ব্রান্ডের কিন্তু খুব একটা বিজ্ঞাপন বা প্রচার দেখা যায় না। তাহলে কয়েক দশক পরও পার্লে-জি কীভাবে তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে একজনের নাম উঠে আসবে সবার প্রথমে। তা হল, মোহনলাল দয়ালের। কীভাবে ছোট্ট একটি কারখানা থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য গড়ে তুললেন, জানলে অবাক হবেন।

বিনা প্রচার বা বিজ্ঞাপনে ভারতে পার্লে-জির মতো ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি করতে পেরেছে খুব কমই সংস্থা। পার্লে-জির এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে অতি সাধারণ পরিকল্পনা ও কার্যকরী ব্রান্ডিং, এমনটাই মনে করেন পার্লে-জির প্রতিষ্ঠাতা মোহনলাল দয়াল। ১৯২৮ সালে মুম্বই থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল পার্লে-জির। লজেন্সের ব্যবসা থেকে শুরু করেছিলেন তিনি। পথে-ঘাটে, দোকানে লজেন্স বিক্রি করতে করতেই তাঁর নজরে পড়েছিল যে চায়ের সঙ্গে বিস্কুট সাধারণত ব্রিটিশরাই খান। এছাড়া অভিজাত ভারতীয় পরিবার যারা, তাদের ঘরে বিস্কুট পৌঁছলেও, সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষদের কাছে বিস্কুট অধরাই রয়ে গিয়েছে। আমজনতার জন্য বিস্কুট বানাতেই ১৯৩৮ সালে তিনি লজেন্সের ব্যবসা বদলে বিস্কুটের ব্যবসা শুরু করেন।

পার্লে-জি উত্থান-

পার্লে-জির নাম এসেছিল পার্লে থেকে, যা কোম্পানির মুম্বই থেকে উত্থানকেই বোঝায়। জি এসেছিল গ্লুকোজ থেকে। বিস্কুটে গ্লুকোজ রয়েছে, এই প্রচারই শুরু করে ব্রান্ড। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে। বিশেষ করে, স্বদেশি আন্দোলনের সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় পার্লে-জি। দেশে তৈরি বিস্কুট হিসাবেই সাধারণ মানুষ পার্লে-জিকে নিত্যদিনের সঙ্গী বানিয়ে নেন।

১৯৬০ সালে কড়া প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে পার্লে-জি। ব্রিটানিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকতে নতুন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করে পার্লে-জি। আনা হয় প্যাকেজিংয়ে পরিবর্তন। ছোট চুলের এক বাচ্চা মেয়ের ছবি জোড়া হয় বিস্কুটের পাশে। ধীরে ধীরে ওই বাচ্চা মেয়েটিই পার্লে-জির ‘আইকন’ বা পরিচিতি হয়ে ওঠে। পরে পার্লে-জির ‘জি’তেও পরিবর্তন আনা হয়। গ্লুকজের বদলে “জি ফর জিনিয়াস” বলে প্রচার শুরু করা হয়। তবে পার্লে-জির এত বছর ধরে বাজারে টিকে থাকার পিছনে আসল কারণ ছিল তার কম দাম। প্রতিযোগিতার বাজারে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেখানে বাকি সব বিস্কুটের কোম্পানিই দাম বাড়িয়েছিল, সেখানে পার্লে-জি বরাবরই তাদের দাম গরিব মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছে।

১৯৯৪ সাল অবধি পার্লে-জির ছোট প্যাকেটের দাম ছিল ৩ টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ৪ টাকা করা হয়। ২০২১ সাল অবধি এই দাম অপরিবর্তিতই ছিল। বর্তমানে, ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েও মাত্র ৫ টাকায় পার্লে-জির ৫০ গ্রামের প্যাকেট পাওয়া যায়।

পার্লে-জির ব্রান্ডের অধীনে আরও তিনটি বিস্কুটের ব্রান্ড রয়েছে। এগুলি হল মোনাকো, ক্রাকজ্যাক ও হাইড অ্যান্ড সিক। পার্লে-জিই প্রথম ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস বা এফএমসিজি ব্রান্ড, যা রিটেল মার্কেটে ৫০০ কোটির বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিল। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৮ হাজার কোটি টাকার পার্লে-জি বিস্কুট বিক্রি হয়েছিল।