Where to Keep Gold: দাম পেরিয়েছে ১ লক্ষ ২৮ হাজার, নিরাপদে কোথায় রাখবেন সোনা?
Gold Price Hike: দাম বেড়েছে সোনার। বাড়িতে সোনা রাখলেও একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। এক তো থাকে চোর, ডাকাতের ভয়। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাহলে কী উপায়?

ঐতিহাসিক ভাবে সোনা এমন এক জিনিস যা ভারতীয় ও বাঙালি পরিবারগুলোর কাছে শুধুমাত্র অলঙ্কার নয়। সোনা আসলে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ও আগামীর ভরসা। আবার অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে চড়চড়িয়ে বেড়েছে সোনার দাম। এমনকি চলতি বছরে ভারতের বাজারে ইতিমধ্যেই প্রায় ৬২ শতাংশ বেড়েছে সোনার দাম। আর এখানে উঠছে একটা বড় প্রশ্ন। সোনা কি আদৌ বাড়িতে রাখা নিরাপদ? কিন্তু সোনা যদি বাড়িতে না রাখি তাহলে রাখব কোথায় বলুন তো?
বাড়িতে সোনা রাখলেও একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। এক তো থাকে চোর, ডাকাতের ভয়। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাহলে কী উপায়?
বাড়িতে সোনা রাখার ঝুঁকি
অনেকেই সাধারণ ব্যবহারের জন্য কিছু গয়না বা অল্প সোনা বাড়িতে রাখেন। তবে, অনেক বড় বিনিয়োগ বাড়িতে রাখা, একেবারে নিরাপদ নয়। চুরি-ডাকাতি বা কোনও প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার ফলে আপনার সঞ্চয় নষ্ট হতে পারে। বিশেষত সোনার এমন চড়চড়িয়ে দাম বাড়ায় বাড়ছে চুরি বা ছিনতাইয়ে চিন্তা। ফলে, সোনা হারিয়ে যাওয়ার ভয় থেকে তৈরি হতে পারে দুশ্চিন্তা যার বাড়তে পারে মানসিক চাপ।
ব্যাঙ্কের লকার: পুরনো কিন্তু নির্ভরযোগ্য বিকল্প
ভারতীয়দের কাছে সোনা রাখার সবচেয়ে জনপ্রিয় আর বিশ্বস্ত ক্ষেত্র হল ব্যাঙ্কের লকার। কারণ, ব্যাঙ্কে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা, সিসিটিভি নজরদারি ও নিয়ন্ত্রিত প্রবেশ। আর সেই কারণেই ব্যাঙ্কের লকারে সুরক্ষিত থাকে সোনা। তবে, এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। যেমন ব্যাঙ্কের লকার কিন্তু ব্যাঙ্কিং আওয়ারের বাইরে গিয়ে ব্যবহার করা যায় না। এ ছাড়াও লকার নেওয়ার সময় যে ফর্ম ফিলআপ করতে হয়, সেখানে একাধিক শর্তের কথাও লেখা থাকে।
বেসরকারি ভল্ট: আধুনিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি
ব্যাঙ্কের লকারের বদলে অনেকেই প্রাইভেট লকারে বা প্রাইভেট ভল্টেও সোনাদানা রাখেন। এই ধরনের ভল্টে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি বা বায়োমেট্রিক অ্যাক্সেসের মতো সুরক্ষা ব্যবস্থাও থাকে। এই ধরনের ভল্টে সোনা রাখা হলে সেই সোনার সম্পূর্ণ মূল্যের উপর বিমা করা থাকে। যদিও এই বেসরকারি ভল্টের পরিষেবা খরচ ব্যাঙ্কের তুলনায় কিছুটা বেশিই। তবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও যখন তখন সোনা বার করা ও সেই সোনাকে আবার ভল্টে রেখে দেওয়ার মতো সুবিধা কেউ চাইলে এই বেসরকারি ভল্ট একটি দারুণ বিকল্প।
গয়নার জন্য ডিজিটাল বিনিয়োগ!
অনেকেই আগামীতে ছেলে-মেয়ের বিয়ের জন্য বা কোনও অনুষ্ঠানের জন্য সোনা কিনে রাখেন। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে কী করণীয়, এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। আপনি একটা কাজ করতে পারেন। যদি ৩ বা ৪ বছর কিম্বা তার বেশি সময়ের জন্য সোনা এই ভাবে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে প্রথমে ডিজিটালি সেই টাকায় সোনা কেনা সবচেয়ে ভাল। আর তারপর সময় মতো সেই ডিজিটাল সোনা বিক্রি করে ফিজিক্যাল সোনা কিনে নিতে হবে। মাঝের সময়টায় লকারের খরচ বা সোনা রাখার দুশ্চিন্তা, দুই থেকেই বাঁচা যাবে।
সোনায় বিনিয়োগ: ঝুঁকিমুক্ত বিকল্প
এতক্ষণ তো গেল সোনার গয়না, সোনার কয়েন বা সোনার বার কীভাবে রাখতে পারেন সেই বিষয়ে আলোচনা। কিন্তু যদি শুধুমাত্র বিনিয়োগের জন্য সোনা কেনেন, তখন? সোনায় বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প সম্ভবত ডিজিটালি সোনা কেনা। যার মধ্যে রয়েছে সোভেরেইন গোল্ড বন্ড, গোল্ড ইটিএফ, গোল্ড ফান্ড বা ডিজিটাল গোল্ড। তবে, বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে লাভজনক হল সোভেরেইন গোল্ড বন্ড। কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জারি করা গোল্ড বন্ডে বিনিয়োগ করলে সোনার দাম বৃদ্ধির সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি বার্ষিক ২.৫ শতাংশ হারে সুদও পাওয়া যায়। তবে, বর্তমানে সোভেরেইন গোল্ড বন্ড ইস্যু না হওয়ায় সরাসরি তা কিনতে পাওয়া যাবে না। ফলে, অনেকেই সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে সোভেরেইন গোল্ড বন্ড কেনেন। এ ছাড়াও গোল্ড ইটিএফ বা গোল্ড বন্ডেও বিনিয়োগ করা যেতে পারে। আর এইক্ষেত্রে যেহেতু সোনা রাখার কোনও ঝামেলা থাকে না, তাই ঝুঁকিও কম। অনলাইনেই এই ধরনের বিষয়গুলোয় বিনিয়োগ করা যায়।
আপনি সোনা কোন কারণে কিনছেন? কীভাবে কিনছেন তার উপর নির্ভর করছে আপনি সোনা কীভাবে রাখবেন। তাই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সোনার সঠিক বিকল্প বেছে নেওয়া জরুরি। অল্প কিছু গয়না বাড়িতে রেখে বাকি গয়না আপনি ব্যাঙ্কের লকারে রাখতে পারেন। আবার সোনার কয়েন বা বার যদি বিনিয়োগের কথা ভেবে কিনে থাকেন, তাহলে তাও ব্যাঙ্কের লকারে রাখতে পারেন। আর দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ নিয়ে যদি ভাবেন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই ক্ষেত্রে সোভেরেইন গোল্ড বন্ড বা গোল্ড ইটিএফের মতো ডিজিটাল বিকল্পগুলোই সেরা।
কোথাও বিনিয়োগ করতে চাইলে সেই বিষয়ে যথাযথ তথ্যানুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করুন। এই লেখা শুধুমাত্র শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে। TV9 বাংলা বিনিয়োগের কোনও উপদেশ দেয় না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যে কোনও বিনিয়োগে বাজারগত ঝুঁকি রয়েছে। ফলে, আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি সাবধানে পড়ে নেবেন। তারপর বিনিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
