Asansol Municipal Election 2022: ‘চালাকির রাজনীতি! ওঁ মন রাখছেন আর পিসি ভোট করাচ্ছেন’

Dilip Ghosh on Abhishek Banerjee: এই প্রথম নয়, পুরভোট নিয়েও আগে বরাবর শাসকদলকে আক্রমণ করেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা।

Asansol Municipal Election 2022: 'চালাকির রাজনীতি! ওঁ মন রাখছেন আর পিসি ভোট করাচ্ছেন'
অভিষেককে নিশানা দিলীপের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 12, 2022 | 11:02 AM

পশ্চিম বর্ধমান: সামনেই রাজ্যের চার পুরসভায় নির্বাচন। প্রচারে বেরিয়ে মঙ্গলবার আসানসোলে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। ফের বুধবার সকালে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তাঁকেই দেখা গেল আসানসোলে পুরপ্রচারে। এদিন সকালে, ‘চায়ে পে চর্চায়’ ফের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন দিলীপ (Dilip Ghosh)।

কিছুদিন আগেই অভিষেক তাঁর ‘ব্যক্তিগত মত’ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে এই মুহূর্তে যা কোভিড পরিস্থিতি তাতে কোনওরকম উৎসব-অনুষ্ঠান, মেলা-জমায়েত হওয়া উচিত নয়। তবে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেওয়ার তিনি নন বলেই উল্লেখ করেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। অভিষেকের এই মন্তব্যকে নিশানা করেই দিলীপ এদিন বলেন, “যতসব চালাকির রাজনীতি! চালাকির রাজনীতি চলছে এখানে। অভিষেকবাবু তাঁর ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করে বলছেন ভোট হওয়া উচিত নয়, আর তাঁর পিসি ভোট করাচ্ছেন। আসলে লোকের মনও রাখবেন! আর ভোটও খোয়াবেন না! ফাঁকতালে কারচুপি করে ভোট টা করাতে হবে।”

তবে, এই প্রথম নয়, পুরভোট নিয়েও আগে বরাবর শাসকদলকে আক্রমণ করেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা। কিছুদিন আগেই নির্বাচন প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য ছিল,  “এতদিন ধরে বলেও ভোট করানো গেল না। খেপে খেপে ভোট করা হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে কেন রাজ্যের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ভোট একেবারে করা গেল না? বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলই  কোভিড বাড়ছে বলে চিৎকার জুড়েছিল।  এখন, যখন সত্যিই বাড়ছে তাহলে ভোট কেন আগে মেটানো হচ্ছে না! তাহলে তো আর ভোট লুঠ করা যাবে না! তাই খেপে খেপে ভোট হচ্ছে। কোর্টের কানমলা খেয়েও নির্বাচন ক্লিয়ার করছে না।”

পুরভোট নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। একদিকে যখন বিরোধীরা ভোট পিছোনোর পক্ষে সওয়াল করেছেন, তখন শাসক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কমিশন যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, “ভোট দিলীপ ঘোষ বা বিজেপির কথায় হবে না। হবে নির্বাচন কমিশনের কথায়। তাই কমিশন ও আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই চূড়ান্ত।”

চলতি মাসেই চারটি পুরসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যের উত্তরোত্তর করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই মামলা দায়ের করা হয়। যদিও কমিশন পুরভোট করার পক্ষেই সওয়াল করে। মঙ্গলবারই, মামলার শুনানিতে,  চার পুরসভার বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে  প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। বিস্তারিত এই প্রশ্নের উত্তর কমিশন জানালেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।আপাতত এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ জানুয়ারি। সেদিনই নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয়টি জানাতে হবে আদালতকে।

ওইদিন  সওয়াল জবাব চলাকালীন পুরভোট পিছনোর মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “যেভাবে করোনা বাড়ছে তাতে নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।”  গত শুক্রবারই এই মামলার শুনানিতে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য সওয়াল করেছিলেন, “কোন রাজনৈতিক দল বলবে না ভোট হোক। শুধু সল্টলেকেই ২৩ কন্টেন্টমেন্ট জোন। কমিশনের উচিৎ নিজে এগিয়ে এসে ভোট বন্ধ করা।” বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আরও সওয়াল করেছিলেন, “বিধাননগরেই ২৩টি কনটেইনমেন্ট জোন। এই সময় না ঠিকভাবে প্রচার করা যাচ্ছে, না ভোটাররা বাইরে আসতে পারছেন না। ভোটটা দেবেন কীভাবে? এই পরিস্থিতিতে ভোট করাটা কি একান্ত জরুরি?”

পরবর্তীতে মঙ্গলবার, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব প্রশ্ন করেন, “কতজন আক্রান্ত হচ্ছেন, তার হিসেব কি আছে কমিশনের? চার পুরসভার ভোট যেখানে, সেখানে করোনার কী পরিস্থিতি?” প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, ” কমিশনের ক্ষমতা আছে নির্বাচন স্থগিত করার। কমিশন কি স্বাধীনভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে?” এরপর কমিশনের আইনজীবী জানান, তিনি এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে তবেই আদালতকে জানাতে পারবেন। এরপরই ১৩ জানুয়ারি সমস্ত তথ্য বিস্তারিত আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও  পড়ুন: ‘সনাতনী হিন্দু টা কী?’, দিলীপের ব্যক্তিগত সচিবের পোস্টে বিতর্ক!