নয়া দিল্লি: সম্প্রতি বিজেপি বিরোধিতার রাশ কার হাতে থাকবে এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের মধ্যে তীব্র চাপান উতর চলছে। বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস ভাঙিয়ে নেতাদের দলে নিচ্ছে তৃণমূল। বারবার বিভিন্ন মঞ্চ থেকে কংগ্রেসকে নানা ইস্যুতে আক্রমণ করে চলেছেন মমতা। কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোট নিয়ে প্রকাশ্যেই আপত্তি জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেও নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতার এই ভূমিকা কংগ্রেস যে ভাল চোখে নিচ্ছে না বেশ কিছু কংগ্রেস নেতাদের মন্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার মমতার পাল্টা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকেই ব্যবহার করতে চাইছে কংগ্রেস, সূত্র মারফত এমনটাই খবর।
নানা ইস্যুতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যখন আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল তৃণমূল, তখন তুলনামূলকভাবে নরম অবস্থান নিয়েছিল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের মতে পরিকল্পিতভাবেই এই রাস্তা হেঁটেছিল শতাব্দী প্রাচীন দলটি। মমতার বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কাকে মুখ হিসেবে তুলে আনার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে গোয়াতে যখন লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল, সেখানেই প্রিয়াঙ্কা গিয়ে স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, এমনকি আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে নাচের তালে পা মিলিয়েছেন। খোলা চোখে এই ঘটনা কাকতালীয় বলে মনে হলেও এর পিছনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে বলেই সূত্রের খবর।
চলতি বছরে বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের জন্য বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব বাড়াতে অসম, ত্রিপুরা, হরিয়ানা, মেঘালয়, ও গোয়ার মত রাজ্যগুলিতে পা ফেলেছে তৃণমূল। বেশিরভাগ রাজ্যেই কংগ্রেস থেকে আসা নেতাদের দ্বারই সম্বৃদ্ধ হয়েছে তৃণমূল। আগামী দিনে স্বয়ং মমতাও যে রাজ্যগুলিতে দলের প্রচারে যাবেন সেই ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতি তৃণমূল নতুন করে যে কটি রাজ্যে পা ফেলেছে, সবকটি রাজ্যেই দলের হয়ে মাঠে নামতে চলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে মমতা অন্যতম বড় মহিলা মুখ, তাই রাজীব কন্যাকে দিয়ে মমতার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে চাইছে কংগ্রেস।
ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বরাবরই স্বীকার করেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রিয়াঙ্কা, রাহুলের তুলনায় ভাল বিকল্প। সেই মমতা-প্রিয়াঙ্কা দ্বৈরথের সম্ভবনাই এবার প্রকট হচ্ছে। মমতা বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা অস্ত্র প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এটা গণতান্ত্রিক দেশ। কেউ যেকোনও জায়গায় প্রচার করতে পারে। কিন্তু কার সঙ্গে কার তুলনা হচ্ছে? মমতা তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী, চার বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাতবারের সাংসদ, আর তার বিরুদ্ধে যাঁর কথা বলা হচ্ছে, তিনি?”
আরও পড়ুন Petrol-Diesel: পেট্রোল-ডিজেলের কর থেকে কত টাকা আয় হল কেন্দ্রের? হিসেব দিলেন অর্থমন্ত্রী