Kolkata Municipal Corporation Election 2021: ‘দিদিমণি পুলিশতন্ত্র চালাচ্ছেন, আমরা সংসদে যা বলার বলব’
Arjun Singh On Kolkata Municipal Election 2021: রবিবার অর্জুন অভিযোগ করেন, তাঁকে ঘিরে রাখা হয়েছিল। বেরতে দেওয়া হয়নি। অথচ, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। কেন আটকানো হয়েছে তা প্রশ্ন করতে গেলে পাল্টা দায়িত্বরত পুলিশকর্তা অর্জুনকে পুলিশস্কোয়াডে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ।
কলকাতা: রবিবাসরীয় ভোটে (Kolkata Municipal Corporation Election 2021) সকাল থেকে দিনভর উত্তপ্ত কলকাতা। দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভোট লুঠের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের এজেন্টরা বুথে বসতে পারছেন না বলে অভিযোগ। বেলা বাড়তে সামনে এল আরও বিস্ফোরক অভিযোগ। বিধায়কদের আবাসন বা এমএলএ হস্টেলের গেটে বাইরে থেকে তালা দেওয়া হয়েছে, আর ভিতরে আটকে রয়েছেন অন্তত ১২ জন বিজেপি বিধায়ক। তাঁদের বেরতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। পাশাপাশি তিনি এও জানান, কলকাতা আসার পথে আটকানো হয়েছে বিজেপি বিধায়কদের। সেই একই অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়েরও (Arjun Singh)।
রবিবার অর্জুন অভিযোগ করেন, তাঁকে ঘিরে রাখা হয়েছিল। বেরতে দেওয়া হয়নি। অথচ, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। কেন আটকানো হয়েছে তা প্রশ্ন করতে গেলে পাল্টা দায়িত্বরত পুলিশকর্তা অর্জুনকে পুলিশস্কোয়াডে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের কথায়, “দিদিমণি রাজ্যে গণতন্ত্র নয়, পুলিশতন্ত্র চালাচ্ছেন। তিনি কেবল পুলিশকে বিশ্বাস করেন। গুন্ডাদের বিশ্বাস করেন। আর কাউকে বিশ্বাস করেন না।” তাঁর আরও সংযোজন, “এই বিষয়টা আমি সংসদে পেশ করব। আগামিকালই আমাদের অধিবেশন রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ভোটের দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, একাধিক জায়গায় বিজেপি বিধায়কদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা আসার পথে দুজন বিজেপি বিধায়ককে রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি জানান, ১২ জন বিধায়ককে এমএলএ হস্টেলের ভিতরে আটকে রাখা হয়েছে।
এমএলএ হস্টেলেও সেই ছবিই দেখা গিয়েছে। শিকল বেঁধে গেটে তালা লাগানো রয়েছে। ভিতরে রয়েছেন একাধিক বিজেপি বিধায়ক। আটকে থাকা ওই বিধায়কেরা জানাচ্ছেন, রবিবার সকালে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরই তাঁদের হস্টেলের গেটে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। কোনও ভাবেই তাঁদের বাইরে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। বিধায়কদের বক্তব্য, কলকাতার বাইরে থেকে এলে বিধায়কদের আটকানো যেতেই পারে, কিন্তু তাই বলে কলকাতার বিধায়কদের আবাসনে যাঁরা রয়েছেন তাদের কী ভাবে আটকাচ্ছে পুলিশ? গেটের বাইরে রয়েছে পুলিশি প্রহরা। পুলিশ কর্মীরা এ ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে মুখ খুলে না চাইলেও, তাঁদের দাবি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই বন্ধ রাখা হয়েছে গেট।
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এ দিন হাওড়া ব্রিজ থেকে নীলাদ্রি জানা নামে এক বিজেপি বিধায়ককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিবেদিতা সেতু দিয়ে আসার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে দুর্গাপুরের বিধায়ককেও। তিনি আরও জানান, ভোটের দিন বিজেপি বিধায়কেরা যাতে কলকাতায় না থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য পুলিশ। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র ও রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস, যৌথভাবে এই সব কাজ করছেন।
তৃণমূল দাবি করছে, যেহেতু ওই বিধায়কেরা কলকাতার বাইরে থেকে এসেছেন, তাই ১৪৪ ধারা অনুযায়ী তাদের হস্টেলের ভিতরেই থাকতে হবে। অন্যদিকে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, শুধু বিধায়কদের আবাসনেই নয়, বিধাননগরের শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনেও রয়েছে পুলিশি প্রহরা। বিধান নগরে এই মুহূর্তে রয়েছেন একাধিক বিজেপি বিধায়ক। সেই বাড়ির চারপাশ পুলিশ ঘিরে রেখেছে বলে দাবি জয়প্রকাশ মজুমদারের। পুলিশ ও প্রশাসন একসঙ্গে হাত মিলিয়ে এমনটা করছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, রাজ্যে স্বৈরাচারী শাসন চলছে।
কেন এ ভাবে বিজেপি বিধায়কদের আটকে রাখা হল? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কলকাতায় যে কয়েকজন বিধায়ক আছে তারা সবাই তৃণমূলের, তাই বিজেপি বিধায়কের কেন আটকে রাখা হবে? আমরা কি উন্মাদ? কুণাল ঘোষের দাবি, এমএলএ হস্টেলে একটিমাত্র গেট নেই, রয়েছে একাধিক গেট। তাই এই অভিযোগ অবান্তর বলেই দাবি তাঁর। শুধু তাই নয়, ভোট মিটতেই বিধায়ক হোস্টেলের তালা খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে তৃণমূল।