লখনউ: প্রচার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সবুজ সংকেত মিলতেই উত্তর প্রদেশে প্রতি বাড়িতে গিয়ে প্রচার শুরু করল বিজেপি (BJP)। একইসঙ্গে যোগীরাজ্যে প্রথম প্রচার সারলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)-ও। উত্তর প্রদেশের কাইরানা থেকেই তিনি প্রচার শুরু করেন। “জয় শ্রীরাম” ও “ভারত মাতা কি জয়” এই স্লোগানের মাঝেই বিজেপি নেতাকে দেখা যায় বাকি পাঁচটা নেতার মতোই নির্বাচনী প্রচারপত্র সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিতে। তবে অধিকাংশ নেতার মুখেই মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকায়, করোনাবিধি ভঙ্গেরও (COVID Norms Violation) অভিযোগ উঠেছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মাঝেই উত্তর প্রদেশ, পঞ্জাব সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। গতকালই নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্বাচনী প্রচারে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি অবধি করে দেওয়া হয়। তবে প্রচারের নিয়মে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে শাহি প্রচারে সেই নিয়মবিধি অনুসরণ হয়নি বলেই অভিযোগ।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর এটিই প্রথম নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠান ছিল অমিত শাহের। তাৎপর্য্যপূর্ণভাবে তিনি প্রচার শুরুর জন্য কাইরানাকেই বেছে নেন। সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন এই কাইরানা থেকেই বহু হিন্দুকে উৎখাত করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির অন্যতম হাতিয়ারও ছিল কাইরানার ঘটনা।
শনিবারের নির্বাচনী প্রচারে শাহকে দেখা যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন মেজাজে। যে রাশভারী ব্যক্তিত্বের জন্য় তিনি পরিচিত, তা দূরে সরিয়ে রেখেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে তিনি কথা বলেন। বিগত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার রাজ্যে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, সেই সংক্রান্ত প্রচারপত্র সমর্থকদের হাতে তুলে দিতে দেখা যায়।
সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সমস্ত হিন্দু পরিবারকে অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল এবং ঘরছাড়া হতে হয়েছিল, সেই সমস্ত পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন অমিত শাহ। বিজেপি নেতাকে দেখতে উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতেই হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশদের।
যোগীরাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু হতেই বিজেপির অন্যতম প্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে গুন্ডারাজ দমন। শাসক দলের দাবি, অখিলেশ যাদব মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যজুড়ে যে গুন্ডারাজ চলছিল, তা বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই শেষ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে রাজ্যে আবার আই শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অমিত শাহও এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার কথাই তুলে ধরেন। ডবল ইঞ্জিন সরকার কীভাবে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে, সে সম্পর্কেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান অনেকে। শোনা যায় “মোদী-মোদী” ধ্বনিও।
প্রচার শেষে অমিত শাহ বলেন, “বিগত ৫ বছরেই অনেক উন্নয়ন হয়েছে উত্তর প্রদেশে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসাকর পর রাজ্যের সবথেকে বড় ইস্যু ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা। বর্তমান সরকার রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে সুশাসন স্থাপন করেছে।”