লখনউ :‘এবার বিজেপি ৩০০ পার’, উত্তরপ্রদেশে দোরে দোরে ঘুরে প্রচার করে এই বার্তাই দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন উত্তরপ্রদেশের কাইরানাতে গিয়ে বিজেপির হয়ে প্রচার করেন অমিত শাহ। সেখানে তিনি অনেক পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এই পরিবারগুলি এককালে দুষ্কৃতীদের তোলাবাজির জেরে বেঘর হয়েছিল। সেই সময় উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় ছিল সমাজবাদী পার্টি। সমাজবাদী পার্টির সময়কালে দুষ্কৃতীদের এই বাড়বাড়ন্তকেই বড় ইস্যু করে ২০১৭ সালে বড় সাফল্য পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবং সেই নির্বাচনে বিজেপিকে গোবলয়ের রাজ্যে জেতানোর ছক কষেছিলেন অমিত শাহ নিজে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম উত্তর প্রদেশে তুলনামূলকভাবে অখিলেশ যাদবের দলের শক্তি বেশি। পাশাপাশি জাঠ অধ্যুষিত এই এলাকাগুলিতে কৃষকরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিগত একবছর ধরে আন্দোলন করেছিল। তাই এই অঞ্চলে কৃষকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপিকে পিছনে ফেলতে মরিয়া সমাজবাদী পার্টি। এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহ আইনশৃঙ্খলা ইস্যুকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। এদিন অমিত শাহ সাধু মিষ্টির দোকানের মালিক রাকেশ গর্গের সঙ্গেও দেখা করেন। এই রাকেশ গর্গের কাছে ২০১৪ সালে দুষ্কৃতীরা ২০ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছিল। পরবর্তীতে রাকেশ গর্গ দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার আম্বালাতে চলে গিয়েছিলেন। পরে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় এলে তিনি নিজের ভিটেতে ফিরে এসে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন। অমিত শাহ এদিন কাইরানায় বসাবসরত মিত্তল পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এদিন এই পরিবারের ১১ জন সদস্য একসুরে বলেন যে তাঁদের এখন আর আগের মতো ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় না।
বিভিন্ন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তবে রাজ্যের সবথেকে বড় ইস্যু ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা। সেই বিষয়ে বিশেষ উন্নতি করেছে বর্তমান সরকার।’ অমিত শাহ আরও জানান যে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের শামলি জেলার এই এলাকায় অমিত শাহ ২০১৪ সালের পর প্রথমবার এসেছেন। এবং তিনি দাবি করেন, গত সাত বছরে এই এলাকার চেহারার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। আর তা দেখে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। এদিন অমিত শাহ কাইরানার বিজেপি প্রার্থী মৃগাঙ্ক সিংকে নিয়ে দোরে দোরে গিয়ে প্রচার সারেন। উল্লেখ্য, এই আসনের প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত হুকুম সিংয়ের কন্যা হলেন মৃগাঙ্ক। অমিত শাহ এদিন মৃগাঙ্ককে পাশে নিয়ে দাবি করেন যে ২০১৪ সাল থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদী উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। শাহের আরও দাবি, ২০১৭ সালে যোগী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই রাজ্যে উন্নয়নের গতি আরও বেড়ে যায়।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘এখন এই মানুষগুলো নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারছেন। আমি তাঁদের বলতে চাই যে আমরা এখানে শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। গোটা উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে আমাদের সরকার। নির্দিষ্ট কোনও জাতি বা সম্প্রদায়কে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা কাজ করব না।’ তিনি আরও দাবি করেন যে এবারও বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ৩০০-র বেশি আসনে জিতবে।
আরও পড়ুন : Punjab Election 2022 : প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজালেন ক্যাপ্টেন, বেছে নিলেন নিজের রণক্ষেত্র