নয়া দিল্লি: আর কয়েক মাস বাদেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। ইতিমধ্যই জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছে শাসক ও বিরোধী দলগুলি। এরই মাঝে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। তিনি দাবি করেছিলেন, তার সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম (Instagram) অ্যাকাউন্ট হ্যাক (Hack) করা হচ্ছে। অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন সরকারের দিকেই। প্রিয়ঙ্কার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই এবার ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের (Electronics & Information Technology Ministry) তরফে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল।
ঘটনার সূত্রপাত হয় রবিবার। শনিবার সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব(Akhilesh Yadav)-র তিন ঘনিষ্ঠ নেতার বাড়িতে আয়কর বিভাগ হানা দেয়। সেই সময়ই অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেছিলেন, এই অভিযানের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আয়কর বিভাগকে ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, “নির্বাচন আসছে, তাই এইসব হচ্ছে। এখন তো সবে আয়কর বিভাগ এসেছে, এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আসবে, সিবিআই আসবে। কিন্তু সাইকেল (সমাজবাদী পার্টির প্রতীক) চলতেই থাকবে। এর গতি আটকানো যাবে না। উত্তর প্রদেশ থেকে ধুয়ে মুছে যাবে বিজেপি। রাজ্যের মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। রাজীব রাইয়ের বাড়িতে একমাস আগে তল্লাশি চালানো হল না কেন? এখনই কেন অভিযান? সামনে নির্বাচন বলে?”
রবিবার সকালেও ফের একবার শাসক দল বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “দলের সমস্ত নেতাদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছ্। রোজ বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সেই রেকর্ডিং শোনেন।” অখিলেশের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন প্রিয়ঙ্কাও।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা দাবি করেছিলেন, “ফোন ট্য়াপ তো সামান্য বিষয়। সরকার আমার সন্তানদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টও হ্যাক করেছে এবং ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই নজরদারি করার চেষ্টা করছে। সরকারের কি কোনও কাজ নেই আর?”
অখিলেশের অভিযোগের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, “সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন হয়তো এই কাজ করত। সেই কারণেই তাঁর মনে হয়েছে সরকার ফোন ট্যাপ করে কথা শুনছে।” যদিও প্রিয়ঙ্কার অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও জবাবই দেননি তিনি। কিন্তু জনগণের সামনে ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার দাবি তোলায় কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকই তদন্তের নির্দেশ দিল।
মন্ত্রকের এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাকের যে দাবি করেছেন, তার ভিত্তিতেই তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Indian Computer Emergency Response Team) এই তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে।
সরকারি সূত্রের দাবি, প্রিয়ঙ্কার এই অভিযোগে সরকার বিস্মিত। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এখনও অবধি ইন্সটাগ্রাম কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি। তবে সরকার অভিযোগটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখায়, তদন্তে সহযোগিতার জন্য তারা ইন্সটাগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, বিগত এক মাসে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সন্তানদের ইন্সটাগ্রামে সন্দেহজনক কোনও পোস্টই দেখা যায়নি। তাই অভিযোগের সত্যতা জানতেই দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদি এই অভিযোগ অসত্য প্রমাণ হয়, তবে আসন্ন নির্বাচনের আগে এই ইস্যুটি কংগ্রেসকে আক্রমণ করার বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে বিজেপির কাছে।