লখনউ: ব্যক্তিগত সচিব থেকে শুরু করে ঘনিষ্ঠ নেতাদের বাড়িতে আয়কর হানার (Income Tax Raid) পরেই বেজায় চটেছেন অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনছেন সরকারের বিরুদ্ধে। শনিবারই তিনি দাবি করেছিলেন, সমাজবাদী পার্টি(Samajwadi Party)-র তিন নেতার বাড়িতে আয়কর হানার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এদিন তিনি বলেন, “দলের সমস্ত নেতার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।”
শনিবার সকালেই সমাজবাদী পার্টির নেতা তথা মুখপাত্র রাজীব রাই(Rajiv Rai), অখিলেশ যাদবের ব্যক্তিগত সচিব জৈনেন্দ্র যাদব (Jainendra Yadav) ও অপর নেতা মনোজ যাদব(Manoj Yadav)-র বাড়িতে আয়কর বিভাগ হানা দেয়। বারাণসী থেকে সকালেই আয়কর বিভাগের একটি দল উত্তর প্রদেশের মৌ জেলায় রাজীব রাইয়ের বাড়িতে হানা দেয়। জানা গিয়েছে, কর্নাটকে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালান রাজীব রাই। সেই সংক্রান্ত তদন্তেই আজ আয়কর বিভাগ হানা দেয়। অখিলেশ যাদবের আরেক ঘনিষ্ঠ নেতা মনোজ যাদবের মইনপুরীর বাড়িতেও একইভাবে তল্লাশি অভিযান চালান আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা। মনোজ আরসিএল গ্রুপ অব কম্পানির প্রোমোটার বলে জানা গিয়েছে।
গতকাল আয়কর হানার পরই সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, “নির্বাচন আসছে, তাই এইসব হচ্ছে। এখন তো সবে আয়কর বিভাগ এসেছে, এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আসবে, সিবিআই আসবে। কিন্তু সাইকেল (সমাজবাদী পার্টির প্রতীক) চলতেই থাকবে। এর গতি আটকানো যাবে না। উত্তর প্রদেশ থেকে ধুয়ে মুছে যাবে বিজেপি। রাজ্যের মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। রাজীব রাইয়ের বাড়িতে একমাস আগে তল্লাশি চালানো হল না কেন? এখনই কেন অভিযান? সামনে নির্বাচন বলে?”
এ দিন সকালেও ফের একবার শাসক দল বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “দলের সমস্ত নেতাদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছ্। রোজ বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সেই রেকর্ডিং শোনেন।” গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ(Yogi Adityanath)-কে “উপযোগী” বলে যে অ্যাখ্য়া দিয়েছিলেন, সেই বক্তব্যকেও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “উনি উপযোগী নন, বরং অনুপযোগীই।”
গতকালই অখিলেশ যাদব দাবি করেছিলেন, কংগ্রেসের দেখানো পথেই তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। তিনি বলেছিলেন, “বিজেপি কংগ্রেসের দেখানো পথেই হাঁটছে। আগে কংগ্রেস যখন কাউকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করত, তখন তারা এই কৌশল অনুসরণ করত। এখন বিজেপি, কংগ্রেসের দেখানো পথেই হাঁটছে। ঠিক নির্বাচনের আগেই কেন তল্লাশি অভিযান চালানো হয়? মনে হচ্ছে আয়কর বিভাগও নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে।”
আগামী বছরই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের কিছুটা আন্দাজ এই নির্বাচন থেকেই করা যাবে, সেই কারণে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছেই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে বিজেপির ডবল ইঞ্জিনের সরকার যেখানে একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করছে, সেখানেই বিরোধী দলের নেতা হিসাবে অখিলেশ যাদবের দাবি, পূর্ববর্তী সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পকেই নিজের নামে চালানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে তাঁর সরকারের কল্পনাপ্রসূত, অন্যদিকে, গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ মায়াবতীর সরকার থাকাকালীনই শুরু হয়েছিল।