নয়া দিল্লি ও দেরাদুন : সম্প্রতি হরিশ রাওয়াতের (Harish Rawat) রাজনৈতিক গতিবিধি বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল কংগ্রেসের (Congress) হাই কমান্ডকে। ভোটের আগে কি কংগ্রেসের তরী ডোবাবেন তিনি? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী (Former Uttarakhand Chief Minister) হরিশ রাওয়াতের সব মান-অভিমানে আপাতত ইতি টানতে পেরেছে গান্ধী পরিবার। শুক্রবার নয়া দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সঙ্গে তাঁর দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে তিনি জানান, ভোটমুখী উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব দেবেন তিনিই। তবে তিনিই উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কি না, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন হরিশ রাওয়াত। শুক্রবারের বৈঠক শেষে তাঁকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা বলেন, “এখনই, আমার মন্তব্যকে বিকৃত করবেন না।” মুখ্যমন্ত্রীর মুখ কে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
মাস খানেক পরেই উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন। দেবভূমিতে নিজেদের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে পদ্ম শিবির। পিছিয়ে থাকতে চাইছে না কংগ্রেস নেতৃত্বও। তাই তড়িঘড়ি হরিশ রাওয়াতের ক্ষোভ প্রশমনের জন্য বৈঠকে বসেন রাহুল গান্ধী। কয়েক দিন আগেই হরিশ রাওয়াতের টুইট ঘিরে বিতর্ক দানা বেধেছিল। বিতর্কিত ওই টুইটে হরিশ রাওয়াত লিখেছিলেন, “আশ্চর্যের বিষয় হল অধিকাংশ জায়গাতেই প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বদলে মুখ ফিরিয়ে দাড়িয়ে থাকে বা নেতিবাচক কোনও ভূমিকা পালন করে। আমাকে নির্বাচনের সমুদ্রের সাঁতার কাটতে হচ্ছে। যাদের নির্দেশে আমি সাঁতার কাটছি, তাদের সঙ্গীরাই আমার হাত-পা বেঁধে দিচ্ছে। আমার মাথায় অনেক চিন্তাভাবনা আসছে, আমার ভিতর থেকেই একটা ডাক শুনতে পাচ্ছি। অনেক হয়েছে হরিশ রাওয়াত। এবার তোমার বিশ্রাম করার সময়। আমি গভীর সংশয়ের মধ্যে রয়েছি। আশা করছি নতুন বছর আমায় পথ দেখাবে। আমার বিশ্বাস রয়েছে, এই কঠিন পরিস্থিতে বাবা কেদারনাথ আমায় পথ দেখাবেনই।”
হরিশ রাওয়াতের এই টুইটের প্রেক্ষিতে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং খোঁচা মেরে বলেছিলেন, “যে বীজ বপন করবেন, সেই রকমই ফসল পাবেন! আপনার আগামিদিনের প্রচেষ্টার জন্য শুভকামনা রইল (যদি কোনও প্রচেষ্টা থাকে)।” অন্য়দিকে, উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা তিরথ সিং রাওয়াতও টিপ্পনি করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, “যখন হরিশ রাওয়াত কিছু বলছেন, তার মানে নিশ্চয়ই ভুল কিছু হয়েছে। এটা কংগ্রেসের অভ্য়ন্তরীণ বিষয়, দলের অন্দরেই কোন্দল চলছে”।
সামনেই উত্তর প্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election 2022) রয়েছে। তার আগেই বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের অন্তর্কলহ উঠে আসছে। বিগত কয়েক মাস ধরেই উত্তাল পঞ্জাব কংগ্রেস। প্রথমে অমরিন্দর সিং বনাম নভজ্যোত সিং সিধু, পরে সিধুর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য নেতাদের ক্ষোভ, এই সবকিছুই সামাল দিয়েছিলেন হরিশ রাওয়াত। উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনী ভারও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। পঞ্জাব থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সেই ক্ষোভের আগুন বেশি ছড়ানোর আগেই ব্যবস্থা নিল কংগ্রেস হাই কমান্ড।