মোদী কি ‘সুপারহিউম্যান’? নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে জোরাল সওয়াল মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবিধানকে হাতিয়ার করে পালটা দাবি করেন, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করছেন প্রধানমন্ত্রী। কেননা মুখ্যমন্ত্রীর উপরে উঠে রাজ্যের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে সংবিধান দেয় না।
কলকাতা: রাজ্যে এসে নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকে সরকারি আধিকারিকদের উদ্দেশে একাধিক ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। যা নিয়ে এ বার জোরাল আক্রমণে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার একাধিক সভার মঞ্চ থেকে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানায় নিতে শোনা যায়। তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি সংবিধানকে হাতিয়ার করে পালটা দাবি করেন, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করছেন প্রধানমন্ত্রী। কেননা মুখ্যমন্ত্রীর উপরে উঠে রাজ্যের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে সংবিধান দেয় না।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। রাজ্যে সভা করতে এসে ‘কার্যত’ সরকারি আধিকারিকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, “যেখানে যেখানে ভোট হয়ে গিয়েছে সেখানে ফল বেরনোর আগে আধিকারিকেরা কৃষকের তথ্য সংগ্রহ জোগাড় শুরু করুন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখে আধার নম্বর লিখে নিন। গত ১০ বছর ধরে তো শুয়ে থাকার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। এ বার আর শুয়ে না থেকে কাজে নেমে পড়ুন। দুর্গাপুজোর আগেই যেন কৃষকেরা যেন কেন্দ্রের দেওয়া টাকা পেয়ে যান। বাংলার কৃষকদের দিদি যা যা দেননি সেই ১৮ হাজার টাকা তাঁদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে নিশানায় নিয়ে ঝাঁঝালো মন্তব্য করেন মমতা। খানাকুলের সভা থেকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে কীভাবে বলতে পারেন যে রাজ্য সরকারের অফিসাররা তৈরি থাকুন, ডেটা তৈরি করুন, আমি ক্ষমতায় আসব, কী কী কাজ করব। ওঁ তো নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছেন। আমার রাজ্য সরকারকে কোনও নির্দেশ দেওয়ার অধিকার আপনার নেই। এটা অসাংবিধানিক, এটা অনৈতিক। আর ইউ গড, আর ইউ সুপারহিউম্যান?” তৃণমূল নেত্রীকে আরও বলতে শোনা যায়, “আমার রাজ্য সরকারের অফিসারদের নির্দেশ দিচ্ছে! লজ্জা করে না। তুমি কে নির্দেশ দেওয়ার? যাও আগে নিজের অফিসারদের সামলাও।”
আরও পড়ুন: তৃণমূলের হয়ে প্রচারে আসছেন ‘বাংলার মেয়ে’ জয়া বচ্চন
সোনারপুরে দক্ষিণে এসে তাঁর ঝাঁঝ আরও বেড়ে যায়। মমতা বলেন, “দু’ দফা ভোট হয়েছে, বলছে হাম জিত গিয়া। অর্ডার দিচ্ছে প্রাইম মিনিস্টার, অফিসার সব ঠিক করে রাখো, এই এই করতে হবে। এটা মাথায় বুদ্ধি আছে। এরা পাগল না ছাগল। না হলে প্রাইম মিনিস্টার কখনও রাজ্য সরকারের অফিসারকে বলতে পারে। আরে আই অ্যাম দ্য চিফ মিনিস্টার। রাজ্যকে কিছু বলতে হলে আমি আছি। সংবিধান সে অধিকার আমাকে দিয়েছে। আপনার কেন্দ্র নিয়ে আপনি কথা বলবেন।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, প্রধানমন্ত্রী বস্তুত সরকারি আধিকারিকদের একটা প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক বার্তা দিতে চেয়েছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে রাজ্যে এ বার বিজেপি সরকার গঠন করতে চলেছে। তাই সরকারি আধিকারিকরাও যেন প্রস্তুত থাকেন। তবে যেহেতু তাঁর এই মন্তব্য কিছুটা ‘নির্দেশের’ মতো শুনিয়েছে, সে কারণে এ বার একপ্রকার তেড়েফুঁড়ে মাঠে নেমে পড়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন: ৯০০ কোটির স্ক্যাম! অভিষেকের বাড়িতে মাসে ৩৫-৪০ কোটি টাকা পাঠাত লালা, বিস্ফোরক দাবি বিজেপির