এগরা: অবশেষে পদ্মপাতায় শিশির বিন্দু। তবে টলমল। বাকি ১০ জনের মতো হাতে পতাকা তুলে নিলেন না তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisisr Adhikari)। যদিও রইলেন বিজেপিতেই। গতকাল রাতে শিশিরের বাড়িতে শাহি সভার আমন্ত্রণপত্র নিয়ে পৌঁছেছিলেন জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মান্ডল্য। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সকাল সকাল শান্তিকুঞ্জ থেকে এগরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। তবে শাহি মঞ্চে শুভেন্দুর মতো উন্মাদনা সে ভাবে ধরা পড়ল না শিশিরের বেলায়।
শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরোনর সময় তৃণমূলকে তোপ দেগেছিলেন শিশির অধিকারী। কাঁথির সাংসদ তথা পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের ‘অভিভাবক’ বলেছিলেন, “জোর করে ঠেলে দিল। বাঁচতে তো হবে, পলিটিকস করতে হবে।” এগরায় পৌঁছে অনেক ক্ষণ সভামঞ্চের নীচে দাঁড়িয়ে ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা তখনও এসে পৌঁছননি অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসতেই মঞ্চে উঠলেন শিশির। সৌজন্য বিনিময় হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে। তবে যেভাবে শুভেন্দুকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন, সেই ফ্রেম দেখা গেল না এগরার শাহি সভায়।
অল্প সময়ের জন্য বক্তব্য পেশ করেন শিশির। তবে সেই বক্তব্যও অনেকটাই লঘু মেজাজের। কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার গড়ার আহ্বান জানালেন কাঁথির বর্ষীয়ান নেতা। এ দিন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে জোরাল কোনও আক্রমণ এল না শিশিরের মুখ থেকে। শিশির বলেন, “ডিপ সি পোর্ট কখনওই রাজ্যের পক্ষে একা করা সম্ভব নয়।” কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার এলে তা বাংলার জন্য উন্নয়নমুখী হবে বলে আশাবাদী শিশির। তিনি আরও বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম জানি, কেন্দ্র-রাজ্যে একই সরকার হলে কী হবে।”
এরপর বক্তব্য পেশ করেন অমিত শাহ। মুখে শিশির অধিকারীর নাম নিলেন। কিন্তু তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কোনও কথাই বললেন না অমিত শাহ। শিশিরের পরিচয় দিলেন সাংসদ হিসেবেই। এরপর মঞ্চ থেকে একসঙ্গে নেমে গেলেন শিশির অধিকারী ও অমিত শাহ। সব কিছুর পরে যেন পূর্ব মেদিনীপুরবাসীর কাছে শিশিরের সক্রিয় রাজনীতি নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হল। এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ পূর্ব মেদিনীপুরের অন্যতম অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের মুখ থেকে এল না সাফ কোনও কথা। কিন্তু সভার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিশির জানালেন, পতাকা না ধরলেও তিনি ‘মনে প্রাণে’ রয়েছেন বিজেপির সঙ্গেই। তবে পদ্মে পরোক্ষ শিশির যোগের পর যেন শিশিরের সক্রিয় রাজনীতি নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হল। কিন্তু এটা ভুললে হবে না, শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরিয়েই শিশির বলেছিলেন, “জোর করে ঠেলে দিল, রাজনীতি তো করতে হবে!” তাহলে কোন রাজনীতির ইঙ্গিত দিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ?