নন্দীগ্রামে মমতার হার হবে, কোচবিহারের শীতলকুচির ময়দানে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন অমিত শাহ। তিনি বললেন, “উত্তরবঙ্গের সঙ্গে অন্যায় করেছেন, তাই এখানকার মানুষকে ভয় পাচ্ছেন মমতা।” সোনার বাংলার স্লোগান চড়ালেন শাহ। শীতলকুচির সভা সেরেই সোজা চলে যান কালচিনিতে। সেখানেই শাহ সুর চড়ান, ‘উত্তরবঙ্গে দিদিকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’ আর উত্তরবঙ্গবাসীদের উদ্দেশেই বলে যান, ‘আপনাদের একটা কথা এখানেই বলে যাচ্ছি, কাউকে বলবেন না…’ এক নজরে দেখে নিন অমিত শাহ কী কী বললেন…
আরামবাগে রোড শো শুরু করলেন অমিত শাহ। তিনি বললেন, “সকাল সকালে বন্ধু, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গিয়ে পদ্ম ফুলে ভোটটা দিয়ে আসবেন। দিদির গুন্ডারা আপনাদের খুব কষ্ট দেয় না। এই বার কোনও গুন্ডা আসবে না, এটা বলে দিলাম। দিদির গুন্ডারা নন্দীগ্রামেই কিছু করতে পারেনি।”
দ্বিতীয় দফায় ভোটের (West Bengal Elections 2021) পর ফের নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূল কংগ্রেস। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কমিশনেই স্মারকলিপি জমা দিলেন দলীয় প্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীকে প্রভাবিত করছেন। শুক্রবার সাত সদস্যর প্রতিনিধি দল যায় কমিশনে। ছিলেন যশবন্ত সিংহ, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, দোলা সেন, নাদিমূল হক, ডেরেক ও’ব্রায়েন। পরবর্তী ছয় দফার ভোট যাতে সুষ্ঠু ও অবাধ হয়, সে দাবিতেই এদিন কমিশনে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
বিস্তারিত পড়ুন: বাহিনীকে প্রভাবিত করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কমিশনে অভিযোগ তৃণমূলের
দ্বিতীয় দফার ভোটের পরের দিন তৃণমূলের (TMC) পর এ বার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল বিজেপিও (BJP)। মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধেই নালিশ নিয়ে আজ কমিশনে যায় বিজেপি। নন্দীগ্রামে বয়ালের ৭ নম্বর বুথে যেভাবে তৃণমূল নেত্রী ঘণ্টাদুয়েক বসেছিলেন, সেই কারণে নন্দীগ্রামে ২ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি। জেড প্লাস নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে ওই বুথে বসেছিলেন, তাতে ১৪৪ ধারাও জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপির দাবি।
বিস্তারিত পড়ুন: মমতার ‘বুথ-ধর্নার’ জেরে ২ শতাংশ ভোট কমেছে নন্দীগ্রামে, কমিশনে নালিশ বিজেপির
বারুইপুরে রোড শো শুরু করলেন অমিত শাহ। কয়েক হাজার কর্মী সমর্থকের ভিড়। TV9 বাংলাকে অমিত শাহ বললেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে ভূমিপুত্রই। তবে কোনও ভাইপো মুখ্যমন্ত্রী হবে না।” আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তোপ দাগেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে দিদিকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আমি একটা গোপন কথা বলে যাচ্ছি। দিদি নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন। কালকে নন্দীগ্রামের যে দৃশ্য আপনারা দেখেছেন, তাতে স্পষ্ট দিদি নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন। কিন্তু আপনারা এখনই কাউকে বলবেন না।
গোর্খা, রাজবংশী, আদিবাসী ভাইদের দীর্ঘদিন ধরে অন্যায় সহ্য করতে হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। লোকসভায় আপনারা মোদীজির ওপর ভরসা রেখেছিলেন। কিন্তু এখানে মোদীজি একা কিছু করতে পারবে না। এখানে এমন সরকার চাই, যাঁরা মোদীজির হাত শক্ত করবে।
অপরাধ খুন করে কেউ পার পাবে না। ২ মে ক্ষমতায় আসার পর যারা বিজেপি কর্মীদের খুন করেছে, তারা প্রত্যেকে জেলের ভিতরে থাকবে। কয়লা, বালি মাফিয়া, গরুপাচারকারীরা কেউ পার পাবে না। অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে। অনুপ্রবেশকারীরা গরিব মানুষদের চাল নিয়ে চলে যায়। দিদি অনুপ্রবেশ রুখবে না। আমরা এমন বাংলা গড়ব, যে পাখিও ঢুকতে পারবে না। প্রত্যেক শরণার্থীদের সম্মানের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে: কালচিনির সভায় শাহ
এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল অনুপ্রবেশ। ক্ষমতায় এলেই বিএসএফের সঙ্গে বসে অনুপ্রবেশ ১০০ শতাংশ বন্ধ করা হবে। আগের দু’দফার নির্বাচনেই পদ্ম ফুটেছে। ৬০ টার মধ্যে ৫০টার বেশি আসনে জিতে গেছে বিজেপি। দিদি নিজেই নন্দীগ্রামে হেরে যাবেন। উত্তরবঙ্গের একটিও আসন দিদির হাতে যাওয়া চলবে না।
বাগডোগরা বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করা হবে। দিদির মনে আপনাদের জন্য চিন্তা নেই, ভাইপোর জন্য চিন্তা আছে। ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। আর মোদীজি উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করতে চায়।
দিদি বাংলায় থ্রি টি মডেলে সরকার চালান। তিনটে ‘টি’ মডেল হল, তানাসাহি, তোলাবাজি, তুষ্টিকরণ। মোদীজি থ্রি-বি মডেলে সরকার চালায়। বিকাশ, বিশ্বাস, ব্যাপার-তিন ‘বি’র ওপর ভিত্তি করেই বাংলায় বিকাশ ঘটাব আমরা।
২ মে দিদি যাচ্ছেন। উত্তরবঙ্গে আচ্ছে দিন আসছে। বাংলায় হিংসার শেষ হবে। নন্দীগ্রামে হেরে গেছেন মমতা। এবার মোদীজিকে সুযোগ দিন। ২ হাজার কোটি টাকা উত্তরবঙ্গের বিকাশের জন্য: শীতলকুচিতে অমিত শাহ
শীতলকুচিতে সভা রয়েছে অমিত শাহের। পরের সভা আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে। দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে তাঁর কর্মসূচি একাধিক রোড শো। প্রথম রোড শো করবেন বারুইপুরের ফুলতলা থেকে পদ্মপুকুর পর্যন্ত, বিকেল সাড়ে ৪টেয় দ্বিতীয় রোড শো হবে আরামবাগ গ্রাউন্ড স্ট্যান্ড থেকে গৌড়হাটি মোড় পর্যন্ত।