দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আরও কঠোর নিরাপত্তার আয়োজন করছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার তুলনায় ৭০ কোম্পানি বেশি আধাসেনা মোতায়েন করা হবে। অন্যদিকে, নন্দীগ্রামে বহিরাগত ইস্যুতে ফের মমতাকে তোপ দাগেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, জিতলে আবারও চলে যাবেন মমতা। তখন সবাইকে সুফিয়ানের বাড়িতেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। রামচকের সভা থেকে একথাই বললেন তিনি।
শুভেন্দুর সভার আগেই নন্দীগ্রামের ঠাকুরচক থেকে নাম না করেই অধিকারীদের একের পর এক নিশানা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেদিন ওরা সিপিএমকে ডেকে এনেছিল, পুলিশকে ডেকে এনেছিল । সিপিএমের ক্যাডাররা পুলিশের ড্রেস পরে গুলি চালিয়েছিল। আজও তাই করছে। পুলিশের ড্রেস কিনে ক্যাডারদের সাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ভয় দেখাবে, বলবে বিজেপিকো ভোট দো।”
প্রচারের আর মাত্র দু’দিন বাকি। তার আগে রোড শো আর সভায় কার্যত ঝড় তুলছেন মমতা-শুভেন্দু।
গড়বেতায় প্রথম দফার ভোট মিটতেই সুশান্ত ঘোষের (Sushanta Ghosh) এজেন্টের পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। সুশান্তর এজেন্ট ঘরে না থাকায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে গড়বেতা থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ।
সবিস্তারে পড়ুন: সুশান্ত ঘোষের এজেন্টের স্ত্রী-বোনকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে
বাংলায় বিভাজনের রাজনীতির জন্য দায়ী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার ঢোলাহাটে সংযুক্ত মোর্চার নির্বাচনী জনসভা থেকে এমনই মন্তব্য করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)। এদিন তিনি ফের তৃণমূল (TMC) ও (BJP)-র গোপন বোঝাপড়ার দিকে আঙুল তুলে বলেন,”তৃণমূলে ভোট দিলে গিয়ে পড়বে বিজেপিতে। আর বিজেপিকে ভোট দিলে তৃণমূলের হাতকেই শক্ত করা হবে।”
বিস্তারিত পড়ুন: ‘হঠাৎ করে বলল মহরমের দিন দুর্গাপুজো বন্ধ থাকবে’, বিজেপির হাতিয়ারে শান দিয়ে কটাক্ষ সিদ্দিকির
আত্মহত্যা করেছেন দিনহাটার বিজেপি নেতা (BJP Leader) অমিত সরকার (Amit Sarkar)। তাঁর মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনে এমনই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বহুদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অমিত সরকার। তবে বিধানসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে আরও অবসাদে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেই হতাশা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাছাড়া প্রণয়ঘটিত কারণও থাকতে পারে জানিয়েছে রিপোর্ট। এই প্রেক্ষিতে সোমবার মৃত বিজেপি নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন দিনহাটার বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)।
বিস্তারিত পড়ুন: টিকিট না পেয়ে আত্মঘাতী? বিজেপি নেতার মৃত্যু রহস্যের তদন্ত চান উদয়ন
একুশের বিধানসভা ভোটে (West Bengal Assembly Election 2021) আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মোহন শর্মার সদলবলে বিজেপিতে যোগদান এখন সময়ের অপেক্ষা। এর মধ্যে মোহনবাবুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অসীম মজুমদার বলে দিয়েছেন তারা আর তৃণমূলে থাকছেন না। দু-একদিনের মধ্যেই নতুন দলে যোগ দেবেন। যার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠল এবার কি মালদহের পর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদও হারাতে চলেছে তৃণমূল (TMC)?
বিস্তারিত পড়ুন: মালদহের পর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ হাতছাড়া? তৃণমূলের জন্য অশনি সংকেত
বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি বাদে মোটের উপর শান্তিপূর্ণই হয়েছিল প্রথম দফার ভোট। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে (Second Phase Election) সেই বিক্ষিপ্ত অশান্তিটুকুই চাইছে না কমিশন (Election Commission)। যে কারণে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত আরও কড়াভাবে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, প্রথম দফার ৩০ টি আসনে যত সংখ্যক আধাসেনা (Central Forces) মোতায়েন করা হয়েছিল, তার তুলনায় এ বার আরও বেশি পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী ৩১ টি আসনে ভোটের জন্য মোতায়েন করছে কমিশন।
বিস্তারিত পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় একটি অতিরিক্ত আসন, বাড়তি ৭ হাজার সেনা পাঠাল কমিশন
খুন হয়নি, আত্মহত্যাই করেছেন দিনহাটার মৃত বিজেপি (BJP) কর্মী অমিত সরকার। নির্বাচন কমিশনে (Election Commission) জমা দেওয়া রিপোর্টে এ কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে (Vivek Dubey)। ফলে এই রিপোর্টে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস কার্যত ‘রেহাই’ পেয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
সবিস্তারে পড়ুন: খুন নয়, আত্মহত্যাই করেছেন দিনহাটার বিজেপি কর্মী, বিবেক দুবের রিপোর্ট কমিশনে
বিজেপির মোট ১২ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে, যার মধ্যে চার বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটেছে। অন্যদিকে ৩ জন তৃণমূল কর্মীও জখম হয়েছেন বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী।
বিস্তারিত পড়ুন: শুভেন্দুর রোড শো-তে যোগ দেওয়ার পরই হামলার অভিযোগ, মাথা ফাটল চার বিজেপি কর্মীর
নন্দীগ্রামে (Nandigram) দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল (TMC) নেতারা। শাসকদলের দাবি, বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে ভোট করাতে ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের একাধিক হোটেলে আশ্রয় নিয়ে সমাজবিরোধীরা। এর দ্বারা নির্বাচন বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ কমিশনের দফতরে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শশী পাঁজা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর বেরিয়ে আসনে তাঁরা।
বিস্তারিত পড়ুন: শুভেন্দুর হয়ে ভোট করাতে নন্দীগ্রামে সমাজবিরোধীদের আখড়া! কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূল
‘আগামী ১ তারিখ জনগনের হাতে হতে হবে বন্দি। পয়লা এপ্রিলে এপ্রিল ফুল তো করতেই হবে।’ সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনসভা থেকে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জনসভা থেকে বিজেপি (BJP)- কে উদ্দেশ্য করে অভিষেকের হুঁশিয়ারি, “এখনও সাত দফা ভোট বাকি। আট দফায় এদের দফারফা করতে হবে। প্রথম দফায় বহিরাগতদের মানুষ গণতান্ত্রিক ভাবে হাত ভেঙে দিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় পা ভাঙবে। তৃতীয় দফায় ঘাড় ভাঙবে। চতুর্থ দফায় কোমর ভাঙবে, পঞ্চম দফায় ভাঙবে হাঁটু। ষষ্ঠ সপ্তম ও অষ্টম দফায় বাকি যেগুলো অবশিষ্ট আছে সেগুলো ভেঙে আগামী ২ তারিখ বহিরাগদের খাটে তোল বলে বিসর্জনটা করে দেবে বাংলার মানুষ।”
বিস্তারিত পড়ুন: প্রথম দফায় হাত ভেঙেছে, দ্বিতীয় দফায় পা, তৃতীয় দফায় ভাঙবে ঘাড়: অভিষেক
দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে অব্যাহত রাজনৈতিক অশান্তি। বিজেপির (BJP) অস্থায়ী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কোচবিহার (Coochbihar) মাথাভাঙায়। অভিযোগের তির তৃণমূলের (TMC) দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিস্তারিত পড়ুন: খোলার তিন দিন বাদেই পুড়িয়ে দেওয়া হল বিজেপির কার্যালয়
নন্দীগ্রামে আশ্বততলায় শুভেন্দুর গাড়ির উপর হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এদিন আশ্বততলায় সভা শেষ করে বেরনোর সময় নন্দীগ্রামের (Nandigram) বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকজন। এমনকি শুভেন্দুর গাড়ি তাড়া করে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, এই আক্রমণ করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
বহিরাগত ইস্যুতে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী। শেষবেলার প্রচারে নন্দীগ্রামের ভোটারদের মনে করিয়ে দিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতলে আবার ফিরে যাবেন।’ মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের কথা উল্লেখ করে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘মমতা চলে গেলে আপনাদের সুফিয়ানের জাহাজ বাড়িতেই আত্মসমর্পণ করতে হবে।’ নন্দীগ্রামের ঠাকুর চকের সভা থেকে এই বার্তাই দিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু।
জানুয়ারি মাসে আমি যখন এসেছিলাম, বললাম কী আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়াব, চ্যাংড়ামো মেরে। সবাই দেখলাম নাচতে শুরু করল। ভাবলাম, বেশ মানুষ যখন চায়। পরে শুনছি বলছে, উনি মিথ্যা কথা বলেছেন। উনি দাঁড়াবেন না। উনি দু’টো জায়গা থেকে দাঁড়াবেন। আরে আমি কথা দিলে কথা রাখি। দাঁড়াব এখানে, জিতব এখানে, লড়ব এখানে, সরকার গড়ব এখানে।
কাল প্রচার হয়ে যাওয়ার পর ওরা একটু বাইরে থেকে গুন্ডাটুন্ডা দিয়ে এসে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। ভয় পাবেন না। সব মহিলারা এক হয়ে হাতাখুন্তি নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন। আমিও দেখি উত্তর প্রদেশ, বিহারের গুন্ডাদের শক্তি বড়, না আমার মা বোনেদের। ফলস বন্দুক কিনেছে। আর মুঙ্গের থেকে এনেছে। টুকটাক একটু করবে, ভয়টয় পাবেন না। নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম নন্দীগ্রাম।
আমি সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম নিয়ে ২৬ দিন ধরে অনশন করেছি। আন্দোলনকে জয়ী করিয়েছি। বাংলা, বাংলার সংস্কৃতিকে লুঠ করতে দেবেন না। ১ এপ্রিল ভোট আমিও লড়ছি, ইভিএমে আমার চিহ্ন ২ নম্বরে থাকবে। বিজেপি টাকা দিলে খরচ করবেন, বিজেপির কথা শুনে কাজ করবেন না। সবাই মাস্ক পরে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। দিল্লির কিছু পুলিশ কিন্তু ভোট দিতে দিচ্ছে না। তাড়িয়ে দিচ্ছে। নতুন মেশিন আনছে, যাতে আপনি বিরক্ত হয়ে চলে যান। যাবেন না। দু’বার অন অফ করে তার পর ভোট দেবেন। ভিভিপ্যাট দেখে নেবেন। কাউন্টিংয়ের দিন কারও কাছ থেকে বিড়ি সিগারেট খাবেন না। এই গরীব দিদি যা দেবে তাতেই খাবেন। এক মাস পাহারা দেবেন মেশিন।
যদি আমাকে কেউ ধরে দিতে পারেন কোন গুন্ডা টাকা দিচ্ছে, কোন গুন্ডা হামলা করছে, আমি তাদের পুরস্কৃত করব। মা-বোনেরাও তৈরি থাকবেন। গুন্ডারা গুন্ডামি করলে হাতা খুন্তি, ঘরের ঝাড়ু দিয়ে একটু আদর করে দেবেন। নন্দীগ্রামে আমি একটা অফিস করব। গুন্ডারা এলেই তেড়ে দেবেন। এখন গণহত্যাকারীদের নিয়ে গুন্ডামি করতে বেরিয়েছে। নবকুমার সামন্ত নাকি আপনাদের ভোট কেড়ে নেবে। ভাইবোনেরা দেবে? যেই দেখবে গুন্ডা আসছে মা বোনেদের ডাকবে। একটা করে হাতার বারি দেবে না গালটা ফুলে টুসটুস হয়ে যাবে। একটা করে খুন্তির বারি দেবে না একেবারে গালটা লাল টুকটুকে হয়ে যাবে। মনে হবে ফেস পাউডার মেখেছে।
দল তৈরির পর ভোট হল, অখিল গিরি প্রার্থী ছিল। তখন ওনারা দাঁড়াননি, ওনারা কংগ্রেস করতেন। তখন ওনারা তৃতীয় হয়ে ছিলেন। ছাগলের তৃতীয় ছানা হয়ে ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয় হয়েছিল, সিপিএম ভোট দখল করে এক হয়েছিল। তারা ছিলেন না তৃণমূলের জন্মের সময়। আমি কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছি। তরমুজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। সেই দলটাই আমি করি। আমি আগেও ওকে অনেকবার লড়াই করিয়েছি, এগরা-পটাশপুর সম্ভবত। হেরেছে, পর পর হেরেছে। তারপর তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর জিততে শুরু করল। আর হঠাৎ গেরুয়া পোশাক পরে , কপালে তিলক কেটে কত বড় মহাপুরুষ হয়ে গিয়েছে। বাপরে বাপরে। এমন একটা দিন আসবে, না ঘরকা না ঘাটকা হয়ে ঘুরে বেড়াবে। এত বড় সাহস, জানে আমি নন্দীগ্রামে লড়ছি, আমি গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ, ঝামেলা পছন্দ করি না, আমি ছুটে আসছি গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করি বলে, হয়তো সবটা পারব না। আর এরা বাইরে থেকে গুন্ডা আনছে। কাঁথিতে উত্তর প্রদেশের গুন্ডা ধরা পড়েছে কি পড়েনি দেখুন খোঁজ নিয়ে।
কতগুলো ছেলেকে শিখিয়ে দিয়েছে হিন্দু-মুসলমান করে দাও নন্দীগ্রামে। শিখিয়ে দিচ্ছে, যাও গিয়ে হিন্দু মন্দিরে মাংস ফেলে এসো যাতে দাঙ্গা লাগানো যায়। কেন করবে। আমরা হিন্দু নই? নন্দীগ্রামে যখন আন্দোলন হয় কেউ শাঁখ বাজিয়েছে, কেউ উলু বাজিয়েছে, কেউ আজানের ধ্বনি দিয়েছে। একসাথে কাজ করেছে। তখন তো এই ভেদাভেদ ছিল না। আজ কেন, দাঙ্গা করতে হবে? আমরা সবধর্ম করি। আমরা স্লোগান দিয়ে বলি, হরে কৃষ্ণ হরি হরি আসুন মানুষের কাজ করি। বিজেপির গুন্ডারা বলে হরে কৃষ্ণ হরি হরি পেছন থেকে লুঠ করি।
আচ্ছা এটা কি সত্যি? সুফিয়ান, মহাদেবরা আমাকে একটু কনফার্ম করো তো, যারা ভূমি আন্দোলন করেছিল তাদের সবার বিরুদ্ধে কোর্টে কেস দিয়েছে। যারা মারা গিয়েছে, খুন করেছে তাদের কিছু হয়নি। সেই কেসটায় স্টে ছিল। কদিন আগে হাইকোর্টে গিয়ে স্টে-টাকে ভ্যাকেট করেছে। আমরা আবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সুফিয়ানের কেসটাকে স্টে করিয়েছি। বাদবাকি যারা আছে আন্দোলনকারী তাদের কেসটাও আমরা করছি লিগালি, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মতো। তা সবাই যদি ভূমি আন্দোলন করে অন্যায় করে, সবার বিরুদ্ধে সিপিএম কেস দিয়েছিল এই গদ্দারবাবুর বিরুদ্ধে কোনও কেস দেয়নি। কেন দেয়নি। কারণ, ছিলই না ও সেখানে। ও সিপিএমকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। পুলিশকে ডেকে নিয়ে এসেছিল সেদিন। মনে আছে সেদিন পুলিশের ছেলেমেয়েরা নয়, সিপিএমের ক্যাডাররা পুলিশের ড্রেস পরে গুলি চালিয়েছিল। হাওয়াই চটি পরে ধরা পড়েছিল। পুলিশের ড্রেস পরে এসেছিল। আজও তাই করছে। আমার কাছে খবর আছে, বাজার থেকে পুলিশের ড্রেস কিনে বিজেপির ক্যাডারদের সাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ভয় দেখাবে, বলবে বিজেপিকো ভোট দো। বিহার পুলিশ, উত্তর প্রদেশ পুলিশ সাজাবে। ওরা পুলিশ নয় ফুলিশ।
অত্যাচার করবার পরে বলছে আমায় ভোট দিন। উত্তর প্রদেশের গুন্ডা এনেছে, বিহারের গুন্ডা এনেছে। আমি শুনছি এখানে কী একটা আইটিআই আছে সেটাও নাকি তাদের, পেট্রোল পাম্প কোথায় আছে, সেটাও নাকি তার বন্ধুর। সব পেট্রোলপাম্প সাতটায় বন্ধ হয়ে যায়। সেটা নাকি সারারাত চলে। এরকম অনেক কেস আছে। ট্রলার থেকে শুরু করে, বাড়ি-হোটেল থেকে শুরু করে কী নেই ভাই। শুধু নেই মনুষ্যত্ব। বিশ্বাস করুন এটা আমার দোষ। আমি কোনওদিন ভাবতেও পারিনি, যে ছেলেটাকে আমি ইরিগেশন মিনিস্ট্রি দিয়েছি, আমি এনভায়রন মিনিস্ট্রি দিয়েছি, আমি ট্রান্সপোর্ট মিনিস্ট্রি দিয়েছি, ভাইকে কাঁথি মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান করেছি, একাধিক ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান। একজনের ১০টা পোস্ট। এত কিছুর পর এখন অনেক টাকা হয়ে গিয়েছে। এখন বিজেপি ধরছে। ওরা তো বলছে, হয় বিজেপি কর, না হলে গলায় দড়ি দিয়ে মরো। তো দেখল কী আর হবে, টাকা তো বাঁচাতে হবে। এখন টাকা চাই টাকা, তাই বিজেপি বড় বন্ধু হয়েছে।
এখন সব ফেক নিউজ করে ভেক নিউজ করে। সংবাদমাধ্যমের লোগো নকল করে মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। এই সব করে করে ডার্টি গেম করছে। কী করেছে এরা বলুন তো? আমি কী দিই নি? নন্দীগ্রামটা আমি লড়াই করতে দিয়েছিলাম, আমার প্রিয় বলে। নন্দীগ্রামে যখন প্রথম আন্দোলন হয়, কে ছিল আপনাদের সঙ্গে, কারা ছিল। বাপ-ব্যাটাকে ১০-১৫ দিন দেখা যায়নি। পরে জুটেছে। যখন সব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। নব সামন্ত এখানকার হার্মাদ ছিল। ওকে বিজেপিতে জয়েন করিয়েছে। যারা ভূমি আন্দোলনে আপনাদের উপর অত্যাচার করল, ২৪-২৫ জনকে খুন করল তারা বিজেপির নেতা। আর গদ্দার তাদের নেতা।
নির্বাচন কমিশনের আওতায় ল’ অ্যান্ড অর্ডার। তাদের আওতায় পুলিশ নাকি কাজ করছে। আমাদের তিন কর্মী মারা গিয়েছে। খুন হয়েছে বিজেপির হাতে। বিজেপির একজন সুইসাইড করেছিল কোচবিহারে। তাই নিয়ে মিথ্যা কথা বলে ১০ কিলোমিটার মিছিল করল। আর আমাদের যে তিনজন কর্মী মারা গেল তার কোনও বিচার হল না। আজ অমিত শাহ, হোম মিনিস্টার, আমি জানি না যদি কোনও বোন মারাও যায়, জানি না কেন মারা গিয়েছে, কী ভাবে মারা গিয়েছে, কোনও মৃত্যুই দুঃখের। মা-বোনেদের উপর অত্যাচার কখনও পছন্দ করি না। টুইট করে বলছে, বেঙ্গল কা ক্যায়া হাল হ্যায়। তুমহারা উত্তর প্রদেশ কা ক্যায়া হাল হ্যায়। হাথরসকা, দিল্লি কা ক্যায়া হ্যায়। তখন কি অমিত শাহ মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বসে থাকে! নাকি ঠুঁটো জগন্নাথের মতো ঠুঁটকা হয়ে বসে থাকে। মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না। আর বাংলায় কিছু হলেই টুইট করে। জীবনে টুইট মানেই জানত না।
৮ কিলোমিটার রোড শো করে ঠাকুরচকের সভা পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রাম। সেই নন্দীগ্রামে এবার তৃণমূলের প্রার্থী মমতা। এরপর আরও দু’টি জনসভা রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর।
শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021)। প্রথম দফার ভোট শেষে এখন সবাই দ্বিতীয় দফার দিকে তাকিয়ে। আর দ্বিতীয় দফায় গোটা রাজ্যের নজর থাকবে নন্দীগ্রামে। প্রতিপক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। লড়াই ছাড়া এতটুকু জমিও ছাড়তে রাজি নয় কোনও পক্ষই। একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে গিয়ে একের পর এক তোপ দাগছেন প্রতিপক্ষকে। অন্যদিকে সব রকমের সতর্কতা নিয়ে প্রস্তুত বিজেপি ও। নন্দীগ্রামে ৪১ জনের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে কমিশনে চিঠি দিয়েছে বিজেপি।
বিস্তারিত পড়ুন: ভোটের আগে শেখ সুফিয়ান সহ ৪১ জনের গ্রেফতারি চেয়ে কমিশনে চিঠি বিজেপির
ভোটের আর মাত্র হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। তার আগে নন্দীগ্রামে প্রচারের খামতি রাখতে চাইছে না কোনও পক্ষই। রবিবার নন্দীগ্রামে সভা করেছেন তিনি। সোমবারও জারি থাকবে সেই প্রচার। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সকাল ১১ টায় রোড শো শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুইল চেয়ারে ৮ কিলোমিটার রোড শো করবেন তিনি। এরপর পরপর তিনটি জনসভায় থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রেয়াপাড়া ক্ষুদিরাম মোড় থেকে ঠাকুরচক পর্যন্ত রোড শো।