কলকাতা: বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহার (সংকল্পপত্র) প্রকাশ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার ইজেডসিসিতে এই সংকল্পপত্র প্রকাশিত হয়। সংকল্পপত্র প্রকাশ করে অমিত শাহ বলেন, বিজেপির কাছে ইস্তাহার সবসময় একটা আলাদা গুরুত্ব রাখে। এটা আমাদের সংকল্প। তাই আমরা ঘোষণাপত্র না বলে একে সংকল্পপত্র বলি। এটা শুধু ঘোষণা নয়, এটা প্রতিশ্রুতি। ইস্তাহারের উপর নির্ভর করেই বিজেপি সরকার চালায়। ভবিষ্যতে কী রাজ্য চলবে তার রূপরেখা থাকে এই সংকল্পপত্রে। বিজেপি সবসময় এই ইস্তাহারকে গুরুত্ব দিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি বাস্তবায়ন হওয়ার ফলে ৭৫ লক্ষ কৃষকদের বার্ষিক আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি হয়ে ১০,০০০ হবে বলে ইস্তাহারে দাবি করেছে বিজেপি। গত তিন বছরে বাস্তবায়িত না হওয়া প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধির আওতায় ৭৫ লক্ষ কৃষককে এককালীন ১৮,০০০ টাকা বকেয়া দেওয়া হবে বলেও ইস্তাহারে উল্লেখ। কৃষক সুরক্ষা যোজনায় সকল ভূমিহীন কৃষক এবং ভাগচাষীদের প্রতি বছর ৪,০০০ টাকা দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদনের সঠিক মূল্য পাবে তা নিশ্চিত করার জন্য ৫,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের আশ্বাস। আলু চাষিদের অবস্থার উন্নতি করতে ৫০০ কোটি টাকার পটেটো ইন্সেন্টিভ প্যাকেজ। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক, ভূমিহীন কৃষক এবং জেলেদের জন্য ৩ লক্ষ টাকা অবধি বিনামূল্যে দুর্ঘটনা বিমা, জেলে সুরক্ষা যোজনায় প্রতি মৎস্যজীবীদের প্রতি বছরে ৬,০০০ টাকা প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইস্তাহারে।
আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ইস্তাহারে কল্পতরু বিজেপি। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করা হবে। চা বাগান শ্রমিকদের প্রতিদিনের মজুরি বেড়ে ৩৫০ টাকা করা হবে। ১১টি ভারতীয় গোর্খা উপজাতিদের তফসিল উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। দার্জিলিং পাহাড়, শিলিগুড়ি, তরাই এবং ডুয়ার্স অঞ্চলের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের কথাও বলা হয়েছে ইস্তাহারে। সঙ্গে দার্জিলিংয়ে গোর্খা স্বাধীনতা সংগ্রামে উজ্জ্বল যোদ্ধাদের জন্য মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা। অন্যদিকে জঙ্গলমহল উন্নয়ন বোর্ড, সুন্দরবন উন্নয়ন বোর্ড তৈরির কথাও রয়েছে ইস্তাহারে। আয়লা, বুলবুল এবং আমপানে বিধ্বস্ত অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ৬,৫০০ কোটি বিনিয়োগ প্রস্তাব ইস্তাহারে।
বিজেপি ইস্তাহারে বলেছে, কলকাতা হবে আর্থিক পরিষেবার প্রধান কেন্দ্র। প্রতি বাড়িতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছবে। কেবল ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারে নিঃশুল্ক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এসি ও নীচু মেঝেযুক্ত বাসের সংখ্যা বেড়ে ৩০০০ হবে। কলকাতাকে এক বিশ্বমানের শহর বানাতে ২২,০০০ কোটি টাকার কলকাতা উন্নয়ন তহবিল তৈরি করা হবে। পার্কিংয়ের সুবিধার জন্য সমস্ত ভারী যানজট অঞ্চলে ১০টি বহুতল পার্কিং তৈরি করা হবে। ইউনেস্কো হেরিটেজ সিটির মর্যাদা পাওয়ার জন্য কলকাতায় ৫০০ কোটি বিনিয়োগ করা হবে। বায়ু দূষণ প্রতিরোধে শহরে ১০টি স্মগ টাওয়ার বসানো হবে। স্বচ্ছ কলকাতা মিশন চালু করতে ১,৫০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হবে। কলকাতার সঙ্গে শহরতলির দ্রুত যোগাযোগ বাড়াতে কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণ হবে শ্রীরামপুর, ধূলাগড়, কল্যাণী পর্যন্ত। কালীঘাটে আদি গঙ্গার অতীত গৌরব ফেরাতে সমস্ত নর্দমা ও আবর্জনা পরিষ্কার করা হবে।
নমামি গঙ্গে প্রকল্পে বরানগর, বালি এবং হাওড়ার কাজ দ্রুত শেষ হবে, আশ্বাস বিজেপির ইস্তাহারে। একইসঙ্গে ঘাটাল, কান্দি এবং উত্তরবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ৫০০ কোটি ফ্লাড কন্ট্রোল এন্ড ম্যানেজমেন্ট মাস্টার প্ল্যানের কথা।
* প্রান্তিক কৃষকদের সন্তানদের নিখরচায় শিক্ষা
* চাষিদের ফসল কেনা হবে। ৫০০০ কোটি টাকার intervention fund
* মৎস্যজীবীদের ৩ লক্ষের বীমা
* কিষাণ ক্রেডিট কার্ড আপডেট করে রূপে কার্ড
* ১০০% নৌকা যন্ত্রনির্ভর
* পাঁচটি মেগা দুধ প্রসেসিং ইউনিট রাজ্য জুড়ে
* কাদম্বিনী গাঙ্গুলি হেল্প infrastructure fund
* আশা কর্মীদের বেতন ৪৫০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা।
* ২০২৫ অবধি নার্সিং ও মেডিক্যাল কলেজের সিটের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে।
* প্রতি ব্লকে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বিপিও।
* ২০০০০ কোটির ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ফান্ড, স্কুলের নবীকরণ।
* কুর্মালি, সাঁওতালি, রাজবংশী ভাষায় জোর
*রাজ্য সরকারের চাকরির জন্য কমন এলিজিবিলিটি টেস্ট।
*প্রতি বছর সোনার বাংলা খেল মহাকুম্ভ। শৈলেন মান্না স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি।
*আম্পান, আয়লার টাকা অবৈধভাবে যারা নিয়েছে, তাদের তদন্তে টাস্ক ফোর্স
*কয়লা পাচার, বালি পাচার, গরু পাচার তদন্তে বিশেষ দল
*ইজ অফ ডুইং বিজনেসে বাংলাকে ১-৩ স্থানের মধ্যে নিয়ে যেতে চাই
*MSME কে ১০ বছরের বিনা গ্যারান্টি লোন
*১৫০০ কোটি ফান্ডে জুট মিলের আধুনিকীকরণ
*বাগডোগরা বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
*পুরুলিয়ায় ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট
*৪৬০০ কোটি টাকায় বিভিন্ন বাস টার্মিনাল
*গুরুদেব সেন্টার ফর কালচার
*কলকাতার সঙ্গে শহরতলির দ্রুত যোগাযোগ বাড়াতে কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণ শ্রীরামপুর, ধুলাগড় এবং কল্যাণী পর্যন্ত করার প্রস্তাব সংকল্পপত্রে।
*১০০০ কোটির starting fund পর্যটনে জোর
*রাজ্যজুড়ে অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন, ৫ টাকায় দিনে তিনবার খাবার
*কেজি প্রতি ১ টাকায় গম, ৩০ টাকায় ডাল, ৩ টাকায় নুন, ৫ টাকায় চিনি
*এসসি এসটি সার্টিফিকেটের জন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যম
*সাঁওতাল, ওরাও ডেভলপমেন্ট বোর্ড, টি ডেভলপমেন্ট বোর্ড
*চা শ্রমিকদের জন্য ৩৫০ টাকা প্রতিদিন
*জঙ্গলমহলে রঘুনাথ মুর্মু ইউনিভার্সিটি
*২২০০০ কোটি টাকায় কলকাতা বিকাশ ফান্ড
*বরানগর, বালি আর হাওড়ায় নমামি গঙ্গা
*রাজ্যে পুরোহিত কল্যাণ বোর্ড করে সব পুরোহিতদের মাসিক ৩০০০ টাকা। কীর্তনিয়াদের ৩০০০ টাকা।
*ধার্মিক স্থান/ মন্দিরের নবীকরণে টাকা
*রাষ্ট্রসংঘে বাংলা ভাষাকে অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ করতে জোর
*সোনারপুরে মহানায়ক উত্তম কুমার ফিল্ম সিটি
*পরাক্রম দিবস উদযাপনে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কমিটি
*যে কোনও মাধ্যম হোক বাংলা পড়াতে হবে, সব কোর্সে বাংলায় জোর
*কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
*বাংলা ভাষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যে কোনও মাধ্যমেই বাধ্যতামূলক বাংলা।
*টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
*স্কুলে ক্লাস ১০ পর্যন্ত বাংলা বাধ্যতামূলক।
*১০০০ কোটি টাকা বাংলায় পর্যটনের উন্নয়নে।
*বোলপুরের উন্নয়নে ১৫০ কোটি টাকা।
*৬৭৫ কিমি নেতাজি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হবে।
*পুরুলিয়ায় নতুন বিমানবন্দর।
সরকারি বাসে বিনা খরচে মহিলাদের যাতায়াতের সুবিধা মিলবে বিজেপি ক্ষমতায় এলে। সঙ্গে মৎস্যজীবীদের বছরে ৬ হাজার টাকা অনুদান, অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করা হবে, ৫ হাজার কোটি ইন্টারভেনশন ফান্ড, শরণার্থী পরিবারকে বছরে ১০ হাজার টাকা, দুর্নীতি রুখতে বিশেষ হেল্পলাইন, বিধবাদের মাসে ৩ হাজার টাকা পেনশন, রাজ্যে আরও তিনটি AIIMS, আশা কর্মীদের ভাতা বেড়ে ৬ হাজার টাকা- ঘোষণা বিজেপির সংকল্পপত্রে।
প্রথম মন্ত্রিসভায় কার্যকর হবে সিএএ। শরণার্থীদের দেওয়া হবে নাগরিকত্ব। সংকল্পপত্র প্রকাশ করে বললেন অমিত শাহ।
রাজ্য সরকারের চাকরিতে ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ। প্রণয়ন করা হবে জাতীয় শিক্ষানীতি, কিসান নিধি, আয়ুষ্মান ভারত। বাড়ানো হবে সীমান্ত নিরাপত্তা। সবরকম পুজো করা যাবে এ রাজ্যে। তার জন্য কারও অনুমতি নিতে হবে না। উল্লেখ রয়েছে বিজেপির সংকল্পপত্রে।
এই সংকল্পপত্র আমাদের কাছে প্রকৃতপক্ষেই সংকল্প। আমরা পশ্চিমবাংলাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই এখানে তারই প্রতিফলন থাকবে। মানুষের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে এই সংকল্পপত্র তৈরির আগে। প্রতি বিধানসভা এলাকায় গাড়ি ঘুরেছে বিজেপির। গত এক মাস ধরে এই সমীক্ষারই প্রতিফলন রয়েছে বিজেপির সংকল্পপত্রে। আমাদের যে সরকার হবে সেখানে আমারও অক্লান্ত পরিশ্রম থাকবে : দিলীপ ঘোষ
কিসান সম্মান নিধি প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কেন আয়ুষ্মান ভারতের টাকা বাংলার মানুষকে পেতে দেননি, এই প্রশ্নও সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে ছুড়ে দেন স্মৃতি ইরানি।
পূর্ব মেদিনীপুর: ‘আমি একটা বড় গাধা জানেন তো’। অধিকারী গড়ে দাঁড়িয়ে ‘গদ্দার’দের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে গিয়ে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এগরার সভামঞ্চ থেকে অধিকারী পরিবারকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেই একের পর এক বাণ ছুড়েছেন তিনি। সভামঞ্চ থেকেই তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে আত্মসমালোচনার সুরও। মমতা বললেন, “নির্বাচনের সময় দেখবেন, কাউকে ৫০০ টাকা, কাউকে ১,০০০ টাকা দিচ্ছে। গদ্দারদের অনেক টাকা তো। করে খেয়েছে, আমি বুঝতে পারিনি। আমি একটা বড় গাধা জানেন তো। আমি নিজেই নিজেকে গাধা বলছি, কারণ আমি বুঝতেই পারিনি ওদের এত গুণ। লুঠ-দাঙ্গা-মানুষ ওদের এত গুণ আমি বুঝতে পারিনি।”
বিস্তারিত পড়ুন: ‘গদ্দারদের হটাতে হবে, তবেই মেদিনীপুরের মানুষ নতুন করে স্বাধীন হবেন’ অধিকারী গড়ে তোপ মমতার
অবশেষে পদ্মপাতায় শিশির বিন্দু। তবে টলমল। বাকি ১০ জনের মতো হাতে পতাকা তুলে নিলেন না তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisisr Adhikari)। যদিও রইলেন বিজেপিতেই।
বিস্তারিত পড়ুন: পতাকা না ধরেই পদ্মযোগ শিশিরের, সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে যাওয়ার ইঙ্গিত?
রবিবার সকাল থেকে ডানকুনি বাজারে প্রচারে মহঃম্মদ সেলিম। ডানকুনি রেললাইনের পশ্চিম পাড় থেকে হেঁটে প্রচার শুরু করেন তিনি। ডানকুনি স্টেশন বাজার রেল ওভার ব্রিজের নিচে অটো টোটো স্ট্যান্ডে ব্যবসায়ী থেকে পথচারী সবার সঙ্গে দেখা করেন।
বিধান নগর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু লেকটাউন শ্রীভূমি থেকে প্রচার শুরু করলেন বিবেকানন্দর মূর্তিতে এবং নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান করেন এবং বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে শ্রীভূমি থেকে পদযাত্রা শুরু করেন সুজিত বসু। শেষ করেন বাঙ্গুর এলাকায়। সুজিত বসু বলেন, “এর আগেও মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করেছে। আমি সব সময় ভাল কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস মানুষ এইবারেও আমাকে আশীর্বাদ করবে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে পারব।”
পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ সভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পূর্ব মেদিনীপুরে আজ তিনটি জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পূর্ব মেদিনীপুরে নির্বাচনী প্রচার করবেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের বৃন্দাবনচক ও জামবাড়িতে দুটি পথসভা করার কথা রয়েছে শুভেন্দুর।
বাংলায় ফের আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাঁকুড়ায় সভা করবেন মোদী, এগরায় সভা রয়েছে অমিত শাহের। এদিন বিকেলেই বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশিত হওয়ার কথা।