AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

এক্সক্লুসিভ: নবান্নে মমতা, ‘খুশি’ দীপ্সিতা-সৃজনরা

দীপ্সিতা বলেন, "এরপরও যাঁরা তৃণমূল-বিজেপিতে ভোট দিয়েছেন, রাতের বেলা প্রয়োজনে আমাদেরই ফোন করবেন।"

এক্সক্লুসিভ: নবান্নে মমতা, 'খুশি' দীপ্সিতা-সৃজনরা
গ্রাফিক্স- অভিজিৎ বিশ্বাস
| Updated on: May 03, 2021 | 1:38 AM
Share

কলকাতা: শ্বেত পতাকার লাল তারারা কেউই ভোটে জেতেননি। এ বারের বঙ্গযুদ্ধে কার্যত অস্তিত্ব সঙ্কটে বামেরা। একটিও আসন নেই হাতে। ৩৪ বছরের স্বর্ণালী সফর আগেই শেষ হয়েছে। বিধানসভাতে প্রতিনিধিত্ব পর্যন্ত থাকল না। কিন্তু ভোটের ফলে ‘খুশি’ সিপিএমের (CPIM) তরুণ ব্রিগেড। নবান্ন তৃণমূলের দখলে যাওয়ার খবরও ‘ভাল’ বলছেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক তথা সিঙ্গুরের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। কিন্তু পরাজয়ে কেন খুশি তাঁরা?

উত্তর এক প্রসঙ্গ দু’টি। প্রথমত ‘সাম্প্রাদিয়ক’ বিজেপি বাংলা দখল করতে পারেনি, দ্বিতীয় বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বামেদের ভোট শতাংশ বেড়েছে। সিঙ্গুরের ভোট গণনা পর্ব শেষ হতেই টিভি নাইন বাংলাকে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সৃজন জানান, হেরে একেবারেই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েননি তিনি। বরং চেষ্টা করছেন বাকিদের চাঙ্গা করার। সিঙ্গুরে বেচারাম মান্নার কাছে হেরেছেন তিনি। লড়াইয়ে হার জিত থাকেই, তবে এ বার অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়াটাকেও ‘ভাল খবর’ বলছেন সৃজন ভট্টাচার্য। হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “অ্যাপারেন্টলি একটা ভাল খবর একটা খারাপ খবর। ভাল খবর হল সাম্প্রদায়িক শক্তি হেরেছে, আর খারাপ খবর সাম্প্রদায়িক শক্তিকে যারা বাংলায় বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছে তারা জিতেছে।” তবে রুটি-রুজির লড়াইকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফিরিয়ে আনার লড়াই তাঁরা চালিয়ে যাবেন বলেই জানান সৃজন। কিন্তু একাধিকবার তৃণমূল সাম্প্রদায়িক বলে অভিযোগ করে বামেরা। তাহলে তাঁদের কথামতো তৃণমূলও সাম্প্রদায়িক, সেই জয়ে কেন ‘খুশি’ সৃজন? এই প্রশ্নের উত্তরে সিঙ্গুরের বাম প্রার্থী জানান, ‘ওপেনলি সাম্প্রদায়িক শক্তি’ হেরেছে আর যারা এই ‘মেজরিটি’ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বাংলায় বেড়ে ওঠার জায়গা করে দিয়েছে তারা জিতেছে। তাই বাংলা যে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হল এমনটা ভাবার কোনও জায়গা নেই। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সৃজনের এই বক্তব্যে প্রশ্ন তুলছেন তাহলে কি তিনি তৃণমূলকে ‘মাইনর সাম্প্রদায়িক’ বোঝাতে চাইছেন?

বালি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের রাণা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গিয়েছেন বামেদের তরুণ প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। ভোটের গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়েই প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বালির বামপ্রার্থী দীপ্সিতা ধর জানান, আগের থেকে ভোট শতাংশ বেড়েছে। তিনি বলেন, “যে অভিযোগ আসত বামের ভোট রামে যাচ্ছে, তা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আগামিদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। মানুষের কেন মনে হল চোর-ডাকাতদের আর একবার সুযোগ দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে।” তবে জয়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানান দীপ্সিতা। গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়েই তাঁর অভিযোগ তৃণমূলের কর্মীরা, কমরেডদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালাচ্ছে, সেখানেই যাচ্ছেন তিনি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর অনুরোধ, “যেন আমাদের কর্মী সমর্থদের বাড়ি ঘরে আক্রমণ না হয়।” এ বারে নিশ্চিহ্ন হয়ে কি বঙ্গ রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল সিপিএম? সে বিষয়ে দীপ্সিতা বলেন, “একেবারেই না। এরপরও যাঁরা তৃণমূল-বিজেপিতে ভোট দিয়েছেন, রাতের বেলা প্রয়োজনে আমাদেরই ফোন করবেন।”

জামুড়িয়া বিধানসভায় গতবারের জেতা আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন ছাত্রনেত্রী ঐশী ঘোষ। তৃণমূলের হরেরাম সিংয়ের কাছে তিনি হেরেছেন। পরাজয়ের পর তিনি বলেন, “মেরুকরণের রাজনীতি হয়েছে। ৫০০ কোটির কর্পোরেট সংস্থা নেমেছিল তৃণমূলের হয়ে। তবে বামেদের লড়াই মাঠে ময়দানে।” হেরে যাওয়া কারণ হিসেবে এই ‘মেরুকরণকেই’ দুষছেন দীপ্সিতা ও সৃজনও। তাঁদের মতে, মানুষ তৃণমূলকে রোখার জন্য বিজেপিকে ও বিজেপিকে রোখার জন্য তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। তাই খাতা খুলতে পারেনি বামেরা।

আরও পড়ুন: শতরূপ-ঐশী-মীনাক্ষী, তরুণ ব্রিগেডও অক্সিজেন জোগাতে পারল না সিপিএমকে