অভিষেক বচ্চনের কোন কোন সিক্রেট শেয়ার করল ইনায়ৎ?
TV9 বাংলা ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দেবে বলে বাড়ির সোফায় গা এলিয়ে স্মার্টফোন কানে নিল ইনায়ৎ...
“এটা তোমার প্রথম কিডন্যাপিং কেস, তাই না?”
খুনের চেষ্টার অভিযোগে ছ’বছর জেল খেটে বেরনোর পর বটুকেশ্বর বিট্টু তিওয়ারিকে সম্প্রতি এই প্রশ্ন জিগ্য়েস করেছে নিজেই নিজের ‘কিডন্য়াপিং কেস’ সাজানো মিনি।
বটুকেশ্বর বিট্টু তিওয়ারি অর্থাৎ অভিষেক বচ্চন (Abhisekh Bachchan)। আর মিনি অর্থাৎ ইনায়ৎ ভর্মা (Inayat Verma)। অনুরাগ বসু (Anurag Basu) পরিচালিত ‘লুডো’ (Ludo) যাঁরা নেটফ্লিক্সে দেখেছেন, তাঁরা দৃশ্যটা মনে করতে পারছেন নিশ্চয়ই। লুধিয়ানার বাসিন্দা সেই খুদে ইনায়ৎ শেষ নভেম্বরের দুপুরে খাওয়ার পর TV9 বাংলা ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দেবে বলে বাড়ির সোফায় গা এলিয়ে স্মার্টফোন কানে নিল…
হ্যালো..
হ্যালো দিদি…
কেমন আছ তুমি?
আমি ভাল আছি, তুমি কেমন আছ?
আমিও ভাল। তুমি তো দারুণ কাজ করেছ। ‘লুডো’তে খুব ভাল হয়েছে পারফরম্যান্স…
থ্যাঙ্ক ইউ….। তুমি দেখেছো শুনেই আমার ভাল লাগছে।
(উত্তর শুনেই মনে হল, বয়সে ছোট হলেও মননে পরিণত অভিনেতার সাক্ষাৎকার নিচ্ছি)
তোমার বয়স কত?
এই তো আট বছর। তবে ‘লুডো’র শুটিং যখন করেছিলাম, তখন ছ’বছর ছিল।
আরও পড়ুন, বিয়ের দিন ঠিক করে ফেললেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা?
আচ্ছা। বাড়িতে কে কে রয়েছেন?
আমি, ইনায়ৎ ভর্মা। মাম্মা, মণিকা মাম্মা। পাপা, মোহিত পাপা। দাদু, সেলিন্দর দাদু। নানি, হানি নানি। দাদি, জুলমি দাদি। পিসি, আয়না পিসি। আর একজন পিসি, গুড়িয়া পিসি। কাকা, রোহন কাকা। কাকি, রিতা কাকি। (একটু দম নিয়ে) আর আমার ডগি, ডগি প্রফেসর। (ঠিক এভাবেই পরিবারের সকলের নাম বলেছে ইনায়ৎ)
তোমার ডগির নাম প্রফেসর? হ্যাঁ, ও হল প্রফেসর।
তোমার ডাকনাম কী? আমার তো অনেক ডাকনাম আছে। কোনটা বলব?
সবকটাই শুনি.. দাদি বলে, সন্ত্রী ফারোজি, বাবা বলে ইনু-মিনু। মুম্বইয়ের সবাই ইনু বলে। কিন্তু অনুরাগ দাদা বলে ইনু-মিনু। অভিষেক ভাইয়া ইনায়ৎ বলে। কখনও-কখনও আবার ইনু-মিনুও বলে। মা আর স্কুলের টিচাররা, মানে বন্দনা ম্যাম, নিনা ম্যাম, প্রীতি ম্যাম আমাকে মোটো বলে।
মোটো কেন ?
এমনিই। ওরা ভালবেসে ডাকে বলে আমার মনে হয়।
অভিষেক বচ্চন তোমার কাছে অভিষেক ভাইয়া। তুমি কখনও ওঁকে আঙ্কল বলোনি?
এ তুমি কী বলছ (বিস্মিত হয়ে)? ও কি আমার আঙ্কল?
আরও পড়ুন, নতুন লড়াইয়ের গল্প নিয়ে আসছে ‘অপরাজিত অপু’
না না, আমি জানতে চাইলাম, তুমি প্রথম থেকেই ভাইয়া বল?
হ্যাঁ…। যখন থেকে ছবির শুটিং করছি, শাহরুখ খান ভাইয়া, ইমরান ভাইয়া। সবাইকে তো ভাইয়াই বলি, তাই অভিষেক ভাইয়া। আর অ্যাকট্রেসদের দিদি বলি।
আচ্ছা। অভিষেকের সঙ্গে অফস্ক্রিনে কীভাবে সময় কাটাতে?
তুমি যেমন মুভিতে দেখেছ, ঠিক তেমনই। অভিষেক ভাইয়ার চুল ধরে টানছি, পোজ দিচ্ছি…। দারুণ মজা করেছি। অভিষেক ভাইয়ার সিগনেচার ক্ল্যাপ রয়েছে, জানো তো তুমি?
হুম..
সেটা করত অফস্ক্রিনেও। একবার সেটে পুরো জল ঢেলে দিয়েছিল। তারপর ওখানে যারা ছিল, মানে রুডি ভাইয়া, ফারহান ভাইয়া- ওদের অভিষেক ভাইয়া বলে রেখেছিল, ‘মেরে ইনু-মিনু কো কুছ মত বোল না’ (হাসি)।
তোমার পরিচালক বাঙালি। অনুরাগ দাদা। আমি অনুরাগ দাদার শহর কলকাতা থেকে কথা বলছি। জানো তো, এখানে সকলে তোমার কাজ খুব পছন্দ করেছেন।
তাই? সবাই যদি এটা পড়ে, আমি বলব, থ্যাঙ্ক ইউ সো সো সো সো মাচ।
অনুরাগ যখন তোমাকে ছবিটার জন্য ডাকলেন, কেমন ছিল সেই দিনটা?
অনুরাগ দাদা একটা ইন্টারভিউতে বলেছে, ইনু-মিনু আর আমি অনেক পুরনো বন্ধু। আসলে ‘সবসে বড়া কলাকার’ নামে আমার একটা শো ছিল। চার বছর বয়স তখন আমার। একদিন আমি শুটিং করছিলাম। অনুরাগ দাদা গেস্ট হিসেবে গিয়েছিল। আমার সঙ্গে কথা বলেছিল, কোলে নিয়েছিল। তখন থেকে অনুরাগ দাদার আমাকে ভাল লাগে। আমারও ভাল লাগত। আর ‘লুডো’র জন্য দাদা আদিত্য ভাইয়াকে নিয়েছে, ফতিমা দিদিকে ফোন করে ডেকেছে, রাজকুমার ভাইয়া, অভিষেক ভাইয়া, পঙ্কজ ভাইয়াকে ডেকে নিয়েছিল। তারপর অনুরাগ দাদার একটা বাচ্চা দরকার ছিল।
(মাঝে থামিয়ে বললাম) আচ্ছা, তাহলে তুমি বাচ্চা?
হ্যাঁ, তোমাকে বললাম না, ‘লুডো’র শুটিং যখন করেছি, তখন ছ’বছর বয়স ছিল আমার। এখনও তো ছোটই আমি।
ঠিকই…
তো… একটা বাচ্চার দরকার ছিল দাদার। তাই জন্য আমাকে ডেকেছিল। প্রথমে আমার অডিশন হয়েছিল। দাদার টিম ছিল। আরও একজন ভাইয়া ছিল। আমাকে জিগ্য়েস করেছিল, “ধরো তুমি একটা ডার্ক রুমে আছ, কীভাবে বিহেভ করবে?” আমি করেছিলাম। সেটার ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল। অনুরাগ দাদার ভাল লেগেছিল। তারপর মেকআপ করে একদিন অফিসে যেতে বলল। গিয়েছিলাম। সেখানে ওঁর স্ত্রী ছিলেন। তানি ম্যাম। ওঁর মেয়েদের সঙ্গেও দেখা হয়েছিল। সেদিন আবার কোলে নিয়ে দাদা বলেছিল, ‘সিনেমায় শুটিং করতে হবে তো!’ কিন্তু কোনও স্ক্রিপ্ট দেয়নি। বলেছিল, ন্যাচারাল অভিনয় করতে হবে। শুটিংয়ে গিয়ে ভ্যানিটিতে বসে থাকতাম। লাঞ্চ করতাম। পড়াশোনা করতাম। মজা করতাম। তারপর ক্যামেরা, লাইট, সেট হয়ে যাওয়ার পর দাদা ডেকে বলত, ‘ইনু-মিনু, এটা বলতে হবে।’ আমি পড়ে নিতাম। তারপর ডায়লগ বলে দিতাম।
অভিষেক এবং অনুরাগের কোনও সিক্রেট শেয়ার করতে পারবে?
ভাবতে দাও…। (একটু চুপ করে থাকার পর) অভিষেক ভাইয়া যখন এমনি বসে থাকত, আমি অনেকবার দেখেছি, ও সব সময় মোবাইল গেম খেলত। ওয়ার্ড তৈরির খেলা। ওয়ার্ডের মিনিং খোঁজার খেলা খেলত। আমাকেও বলত, কোন-কোন ওয়ার্ড নিয়ে খেলছে। কোন-কোন ওয়ার্ডের কী কী মানে…।
আরও পড়ুন, ছবির মুখ্য চরিত্রে ‘জিয়ন কাঠি’র ঐন্দ্রিলা
আর অনুরাগ?
অনুরাগ দাদার সিক্রেট… (পাঁচ সেকেন্ডের নীরবতা) হ্যাঁ, মনে পড়েছে। তোমাকে একটা সিক্রেট বলতে পারব। একবার অনুরাগ দাদার সামনে বসেছিলাম। আমার মা-ও ছিল। প্রোডাকশন টিমের নয়না দিদি, রুডি ভাইয়াও ছিল। অনুরাগ দাদা রুডি ভাইয়ার গলা নকল করে ফারহান ভাইয়াকে ফোন করেছিল। ফোন করে বলছে, ‘এখনই অটো চাই, অনুরাগ দাদা অটো চাইছে। তাড়াতাড়ি অটো নিয়ে চলে এস।’ তুমি নিশ্চয়ই দেখেছো, সিনেমাতে একটা অটো ছিল। (মনে আছে জেনে নিশ্চিন্ত হওয়ার পর) কিন্তু সেদিন শুটিংয়ে অটোর কোনও প্রয়োজনই ছিল না। অথচ ফারহান ভাইয়া অনেক দূর থেকে কিছুক্ষণ পরে অটো নিয়ে চলে এসেছিল। অনুরাগ দাদা পুরোটা মজা করে করেছিল (হাসি)।
ইনায়ৎ, কী খেতে ভালবাসো তুমি?
জাঙ্ক ফুড অর হেলদি ফুড।
View this post on Instagram
দুটোই পছন্দ?
না, আমি জানতে চাইছি, কোনটা বলব?
ওহ্ আচ্ছা। দুটোই বল।
জাঙ্ক ফুডে পিৎজা, বার্গার ভাল লাগে না। কখনও-কখনও খেয়ে নিই। আর ম্যাঙ্গো আইসক্রিম। স্টিকে চাই কিন্তু। আর হেলদি ফুডের মধ্যে পরোটা। তুমি নিশ্চয়ই জানো, পাঞ্জাবের পরোটা খুব ফেমাস।
মায়ের হাতের কোনও রান্না পছন্দ নয়?
আরে, মা-ই তো পরোটা তৈরি করে। আর তাছাড়া বাটার চিকেন, আলুর যে কোনও সবজি, মিক্সড ভেজ ভাল লাগে।
আর কী-কী কাজের অফার আসছে তোমার কাছে?
কোভিডের জন্য এখন তো কিছুই হচ্ছে না। তবে আরও একটা ছবির শুটিং হয়ে গিয়েছে। কবে আসবে জানি না। আমি চাই খুব তাড়াতাড়ি আসুক। ওইটাতে নুসরত দিদি। আর একটাতেও অভিষেক ভাইয়া আছে।
কোন নুসরত আর অভিষেক?
নুসরত বারুচা দিদি। আর অভিষেক ব্যানার্জি ভাইয়া।
আচ্ছা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাঙালি, জানো তো?
হ্যাঁ তো। আর একটা কথা বলবয
প্লিজ…
বাংলার একটা কথা আমি জানি।
কী কথা?
আমি ভালুমশাই।
কী, আমি কী?
আমি তোমাকো ভালুমশাই।