Nirmala Mishra Death: ঈশ্বরকে একটাই প্রশ্ন, কেন এতটা কষ্ট দিলে নির্মলাদিকে?: স্মৃতিচারণে হৈমন্তী শুক্লা

Tollywood: সঙ্গীত জগৎকে আরও একবার কাঁদিয়ে চলে গিয়েছেন কিংবদন্তী শিল্পী নির্মলা মিশ্র। তাঁকে নিয়ে TV9 বাংলার কাছে স্মৃতিচারণে হৈমন্তী শুক্লা।

Nirmala Mishra Death: ঈশ্বরকে একটাই প্রশ্ন, কেন এতটা কষ্ট দিলে নির্মলাদিকে?: স্মৃতিচারণে হৈমন্তী শুক্লা
স্মৃতিচারণে হৈমন্তী শুক্লা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 31, 2022 | 12:16 PM

এতদিনে তোতা পাখির দেখা হয়েছে হয়তো মায়ের সঙ্গে… হয়তো মুক্তো আছে এমন ঝিনুকেরও খোঁজ মিলেছে ওপারে। তবু তিনি আর নেই। গতকাল অর্থাৎ শনিবার  রাত  ১২টা ১০ মিনিটে সঙ্গীত জগৎকে আরও একবার কাঁদিয়ে চলে গিয়েছেন কিংবদন্তী শিল্পী নির্মলা মিশ্র। তাঁকে নিয়ে TV9 বাংলার কাছে স্মৃতিচারণে হৈমন্তী শুক্লা।

“আমার সঙ্গে মানুষটার সম্পর্ক বহুদিনের। আর শুধু যে সম্পর্ক তা তো নয়। সে ছিল এক বড়ই মধুর সম্পর্ক। দিদির কাছে আমি কানমলাও খেয়েছি বেশ কয়েকবার। শাসন? হ্যাঁ, তাও করেছেন দরকারে। সব সময় বলতেন, “এই ভাল গেয়েছিস একদম ভাববি না। কোথায় কোথায় তোর খুঁত আছে সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করবি।” একবার এক স্টুডিয়োতে গান রেকর্ড করতে গিয়েছি, উনিও গান গেয়ে বের হচ্ছিলেন। আমাকে দেখেই দাঁড়িয়ে পড়লেন। তারপর বললেন, “এই তুই সেদিন একটা ভজন গাইলি। ভীষণ ভাল। আমাকেও শিখিয়ে দে”। আমি ওই ওখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভজন গাইলাম। ওঁর শেখাও হয়ে গেল। পরে দেখি আবার ফোন করেছেন। ফোনে সে কী প্রশংসা আমার। বললেন, “তোর কী সুরের উপর দখল রে হৈমন্তী। খালি গলায় গাইলি কই ‘সা’ তো পাল্টে গেল না।” নির্মলাদি’র অনেক জ্ঞান ছিল। শুধু যে ভাল গাইতেন এমনটা নয়। কিন্তু সব সময় প্রকাশক করতে পারতেন না। একবার টিভিতে এক রাগপ্রধান বাংলা গানের অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন। আমি বারেবারে বলছি, “দিদি তুমি কী ভাল গাইলে গো”। আর উনি আমায় থামিয়ে দিয়ে বলছেন, “যাহ, চুপ কর, এখন আর আমার রেওয়াজ নেই”। গান ওভাবে প্র্যাকটিস করতেন না, কিন্তু হারমোনিয়াম কখনও বের হতো না। অথচ কী সুরেলা একজন মানুষ।

তবু এই মানুষটিরই শেষ সময়টা কাটল এত কষ্টে, এত যন্ত্রণায়। ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রশ্ন, কেন তুমি এত কষ্ট দিলে মানুষটাকে? বিগত চার-পাঁচ বছর ধরে সেই কষ্ট চোখে দেখা যেত না। বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না। কথা জড়িয়ে গিয়েছিল। এতগুলো সেরিব্রালে সেই নির্মলাদির শরীর একেবারে ভেঙে পড়েছিল। শেষ আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল ওঁর বাড়িতেই। আমি দেখতে গিয়েছিলাম। তখন কথাটাও জড়িয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থাতেই আমাকে দেখতে পেয়েই বললেন, “তোর জন্য একটা শাড়ি রেখে দিয়েছি, কবে নিবি রে”। আমি থামিয়ে দিয়েই বললাম, “এসব এখন ভাবতে হবে না”। মৃত্যু তো সব সময় কষ্টের হয়, কিন্তু নির্মলাদি যেভাবে ভুগছিলেন কষ্ট পাচ্ছিলেন তাতে করে উনি মুক্তি পেয়েছেন। হইহই করা এক জন মানুষ, এত ভাল স্বভাবের ওই কষ্ট দেখে মনে হয়েছে, আগে কেন ঠাকুর তাঁকে নিয়ে নিলেন না। যাই হোক এবার অন্তত তিনি শান্তি পাবেন, এবার অন্তত সব কষ্ট থেকে দূরে গিয়ে শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন।”