‘নক্ষত্রপতনের শব্দ শোনা যাচ্ছে, স্বাতীদিও…’, মন ভাল নেই টলিপাড়ার
থিয়েটার ব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদারের মনে পড়ে যাচ্ছে নান্দীকারে তাঁর প্রথম দিনের কথা, অডিশন নিয়েছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। অন্যদিকে অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যরও আজ মন খারাপ। বেলাশুরু-- আর একসঙ্গে দেখা হল না তাঁর।
নেই স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। বুধবার শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। আচমকা এই মৃত্যুর খবরে স্তব্ধ টলিউড। স্তব্ধ বঙ্গ থিয়েটার জগৎ।
থিয়েটার ব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদারের মনে পড়ে যাচ্ছে নান্দীকারে তাঁর প্রথম দিনের কথা, অডিশন নিয়েছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। অন্যদিকে অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যরও আজ মন খারাপ। বেলাশুরু– আর একসঙ্গে দেখা হল না তাঁর। টিভিনাইন বাংলার কাছে সেই মনখারাপের কথা শেয়ার করলেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। কী বললেন তাঁরা?
দেবশঙ্কর হালদার- আমার থিয়েটার জীবনের শুরু ওঁর হাত ধরেই। নান্দীকারে আমরা যখন ট্রেনিং করতে গিয়েছিলাম প্রথম দিন যাঁর কাছে পরীক্ষা দিয়েছিলাম তিনি স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। উনি আমাদের অভিভাবক যেমন ছিলেন, তেমনি বন্ধু ছিলেন আবার আত্মীয়ও ছিলেন। এই যে ছিলেন বলছি এতেই আমার কেমন একটা লাগছে। মনে হচ্ছে উনি মেকআপ রুমে বিশ্রাম নিচ্ছেন। একটু পরেই স্টেজে ঢুকে পড়বেন…”।
কৌশিক সেন- কোনও কারণেই হোক আমার একটা নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। শিবুর যে ছবিটার দ্বিতীয় পার্ট হল (বেলাশুরু) সেখানে আমি অভিনয় করেছিলাম ওঁর সঙ্গে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তখন বেঁচে। আমরা শান্তিনিকেতন গিয়েছিলাম। আর থিয়েটারের স্মৃতি তো অসংখ্য। কিছুদিন আগে পর্যন্ত অভিনয় করেছেন। আমার দলের থিয়েটার নিয়মিত দেখতে এসেছেন। নিশ্চয়ই খুব অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু কখনও কখনও যুক্তিগুলো কাজে দেয় না। ডায়ালিসিস চলছিল, অসুস্থ ছিলেন…সবই মানছি। কিন্তু এটাও ওঁর চলে যাওয়ার সময় ছিল না।
আরও পড়ুন প্রয়াত স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, শোকের ছায়া শিল্পীমহলে
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়- তাঁর অভিনয়ের বড় আকর্ষণ ছিল আমার। অনেকদিন পর আলাপ হয়েছিল আমার। নিজে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। মঞ্চে সেটা বাজাতেন। আমরা যে এতটা ছোট আমাদের কাজ নিয়েও খবর রাখতেন। একটা আফসোস রয়ে গেল। বেলা শুরু এবং বেলা শেষে এই দুই ছবিরই টাইটেল ট্র্যাক আমার করা। ভেবেছিলাম সবাই মিলে হইহই করে ছবিটি দেখব। কিন্তু বেলা শুরু ‘শুরু’ হওয়ার আগেই থাকলেন না স্বাতীদিও। ওই যে ‘নক্ষত্রপতনের শব্দ শোনা যায়…”।
অপরাজিতা আঢ্য- বেলাশুরু এবং বেলাশেষে এই দুই ছবিতেই আমি স্বাতীদির সঙ্গে কাজ করেছি। অসাধারণ অভিনেত্রী। কিন্তু এত মিষ্টি ব্যবহার। আমায় দেখতে পেলেই হাতটা ধরে বলতেন, ‘অপা তুমি কী ভাল অভিনেত্রী, কী ভাল লাগে তোমার অভিনয় কিন্তু তোমায় কোনওদিনও মঞ্চে দেখলাম না।’ আর আমি ততবারই বলতাম, “ও দিদি, আমার মঞ্চে অভিনয় করতে খুব ভয় লাগে, মনে হয় ডায়লগ ভুলে যাব…।” সৌমিত্র বাবুও চলে গেলেন, স্বাতীদিও চলে গেলেন। বেলাশুরুটা আর সবাই মিলে একসঙ্গে বসে দেখা হল না…।
আরও পড়ুন- ‘স্বাতী কাকিমাও চলে গেলেন…ভালবাসাগুলো কার কাছে পাব আর?’ সৌমিত্র কন্যা পৌলমীর গলায় আক্ষেপের সুর