‘ঈশ্বরের তুলনায় মোদী ভাল!’ কেন হঠাৎ এমন বললেন জাভেদ আখতার?
গত শনিবার দিল্লির অনুষ্ঠীত এক তর্কসভায় অংশ নিয়েছিলেন জাভেদ আখতার। সেখানে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে এক হাই ভোল্টেজ তর্কে মুখোমুখি হলেন কিংবদন্তি গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার এবং ইসলামি পণ্ডিত মুফতি শামায়েল নাদভি।

নেটিজেনরা বলছেন, এ তো ভূতের মুখে রামনাম!যে জাভেদ আখতার প্রথম থেকেই গেরুয়া রাজনীতি, বিজেপির কর্মকাণ্ডে প্রশ্ন তোলেন, সেই জাভেদের মুখেই মোদীর প্রশংসা! তাও আবার শুধু প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের থেকেও তাঁকে এগিয়ে রাখলেন জাভেদ! হঠাৎ হল কি?
গত শনিবার দিল্লির অনুষ্ঠীত এক তর্কসভায় অংশ নিয়েছিলেন জাভেদ আখতার। সেখানে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে এক হাই ভোল্টেজ তর্কে মুখোমুখি হলেন কিংবদন্তি গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার এবং ইসলামি পণ্ডিত মুফতি শামায়েল নাদভি। প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাপী এই বিতর্কটি শুধুমাত্র সেই প্রেক্ষাগৃহেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আর এই বিতর্কসভাতেই মোদীকে ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনায়, প্রধানমন্ত্রীকেই এগিয়ে রাখলেন জাভেদ আখতার। সোশাল মিডিয়ায় এই মুহূর্তে ভাইরাল জাভেদের এই মন্তব্য।
‘দ্য লল্লনটপ’-এর সম্পাদক সৌরভ দ্বিবেদীর সঞ্চালনায় ‘ঈশ্বর কি আছেন?’ শীর্ষক এই বিতর্কে উভয় পক্ষই যুক্তি, নীতি এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরিখে তাঁদের অবস্থান তুলে ধরেন। প্রথাগত বিশ্বাসের বিপরীতে দাঁড়িয়ে জাভেদ আখতার তাঁর যুক্তির কেন্দ্রে রাখেন মানুষের দুর্ভোগ এবং এক সর্বশক্তিমান স্রষ্টার ধারণার মধ্যে থাকা নৈতিক বৈপরীত্যকে। গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে জাভেদ আখতার প্রশ্ন তোলেন, যেখানে ৭০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, সেখানে পরম দয়ালু এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অস্তিত্ব কোথায়? ঠিক এই প্রসঙ্গেই মোদীর প্রসঙ্গ তোলেন জাভেদ। জাভেদের কথায়, ”সেই তুলনায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক ভাল, অন্তত তিনি কিছুটা তো খেয়াল রাখেন।”
পুরো বিতর্ক জুড়েই জাভেদ আখতার বারবার ধর্মের নামে চলা সহিংসতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন সবকিছু ঈশ্বরের ধারণায় এসেই থমকে যায়? কেন আমাদের প্রশ্ন করা বন্ধ করতে হবে? আর কোন ঈশ্বর শিশুদের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন? যদি তিনি অস্তিত্বশীল হয়েও এমনটা হতে দেন, তবে তাঁর না থাকাই ভাল।”
পাল্টা যুক্তিতে মুফতি শামায়েল নাদভি মানুষের কর্মফল বা ‘হিউম্যান এজেন্সি’র ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “স্রষ্টা মন্দের সৃষ্টি করেছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি নিজে মন্দ নন। যারা তাঁদের স্বাধীন ইচ্ছার অপব্যবহার করে এই অশুভ কাজগুলি করছে, দায়ভার সম্পূর্ণ তাদেরই।”
