‘বাবা, তুমি এটা কী করে পারলে’! রঞ্জিতের কোন কাজ মানতেই পারেননি কোয়েল?
Koel Mallick: হরনাম চক্রবর্তীর ছবি 'নাটের গুরু' দিয়ে অভিনয় শুরু হয়েছিল কোয়েলের। বাবা রঞ্জিত মল্লিক, তাই কাজ পেতে অসুবিধে হয়নি।

রঞ্জিত মল্লিক– এতদিনের দীর্ঘ কেরিয়ারে তাঁকে নিয়ে নেই কোনও রটনা নেই। আদ্যপ্যান্ত সাংসারিক মানুষের কাছে পরিবারের গুরুত্ব আজও আছে প্রথমে। জীবনের আদর্শ মেনে চলেন তিনি। এমনকি নিজের মেয়ের ক্ষেত্রেও হয় না নিয়মের হেরফের! চারিদিকে নেপোটিজম নিয়ে যখন এত কথা, তখন কোয়েলের কেরিয়ার শুরু হওয়ার পর রঞ্জিত মল্লিক হেঁটেছিলেন একেবারে অন্য পথে। মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, হতে পারেন তিনি রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে, কিন্তু দিনের শেষে, ‘বাবা-ফাবা দিয়ে কিচ্ছু হবে না’। টিভিনাইন বাংলার এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেতা।
হরনাম চক্রবর্তীর ছবি ‘নাটের গুরু’ দিয়ে অভিনয় শুরু হয়েছিল কোয়েলের। বাবা রঞ্জিত মল্লিক, তাই কাজ পেতে অসুবিধে হয়নি। তবে কষ্ট ছাড়াও কেষ্ট মেলায় ঘোর আপত্তি ছিল রঞ্জিতের। তাঁর কথায়, “হর যখন ‘নাটের গুরু’তে ওকে নিল, আমি পরিষ্কার করে হরকে বললাম, “হর দু’দিন দেখবেন, যদি দেখেন পারছে না তাহলে ওকে বাদ দিয়ে অন্য মেয়েকে নিয়ে নেবেন।” বাবা হয়ে যে এমনটা কেউ বলতে পারে, ধারণাই ছিল না কোয়েলের! নিজের মেয়েকেই নাকি বাদ দিয়ে দিতে বলছেন পরিচালককে! রঞ্জিত যোগ করেন, “কোয়েল তো বিশ্বাসই করতে পারেনি। বলে বাবা, তুমি কী করে পারলে এটা! বাদ দেওয়ার কথা বলেছিলাম দু’টো কারণে। একটা ফিল্ম তৈরিতে অনেক টাকা লাগে। তাই নতুন মেয়ে যদি ঠিক করে টানতে না পারে। আর দুই, যদি কোনও কারণে রিজেক্টেড হয়ে যায় পরে বাবা হিসেবে আমারও তো খারাপ লাগবে। তাই আগেই বলেই রেখেছিলাম বাজে করলে বাদ। কিন্তু কোয়েলের ভাগ্য ভাল। সবটা ভাল হয়েছিল।”
সেদিন বাবার এই কথা নিয়ে খানিক অভিমান করলেও কোয়েল পরবর্তীতে বুঝেছিলেন বাবা নেহাতই ভুল কিছু বলেননি। ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য একাগ্রতার যে কোনও বিক্লপ নেই। রঞ্জিত মল্লিক যে তাঁকে বুঝিয়েই দিয়েছিলেন, “একটা কিংবা মেরকেটে দু’টো ছবিতে লোকে তোমায় পাঠ পাইয়ে দেবে রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে। অনেকের কৌতুহল থাকবে, যাই দেখে আসি, রঞ্জিত মল্লিকে মেয়ে কী অভিনয় করেছে। কিন্ত থার্ড ছবি থেকে নয়। ওটা তোমাকে নিজেকে প্রমাণ দিতে হবে। বাবা-টাবা দিয়ে চলবে না। এটাই নিয়ম। শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়। সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাবা দিয়ে হয় না। নিজে যদি মনযোগী না হও।”
