‘ভাল থেকো পার্থদা…’, পরিচালকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ঋতুপর্ণা
সোমবার সকালে হৃদ্রোগে প্রয়াত হন পরিচালক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মুম্বইয়ের মাধ আইল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী গৌরী ঘোষ।

সোমবার সকাল থেকেই সিনেদুনিয়ায় শোকের ছায়া। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৯০-এর দশকের হিন্দি চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় পরিচালক পার্থ ঘোষ। সোমবার সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন পরিচালক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মুম্বইয়ের মাধ আইল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী গৌরী ঘোষ। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত খবর পাওয়া মাত্রই গৌরী দেবীর সঙ্গে কথা বলেন। জানান, পরিচালকের স্ত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
১৯৮৫ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে বলিউডের সফর শুরু করেন পার্থ ঘোষ। ধীরে ধীরে থ্রিলার ও ড্রামা জ্যঁরে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। ১৯৯১ সালে ‘১০০ ডেজ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়সড় সফলতা পান, যেখানে অভিনয় করেছিলেন জ্যাকি শ্রফ ও মাধুরী দীক্ষিত।
১৯৯২ সালে তিনি নির্মাণ করেন ‘গীত’, যেখানে অভিনয় করেছিলেন দিব্যা ভারতী ও অবিনাশ ওয়াধাওয়ান। তবে ১৯৯৩ সালের ‘দলাল’ তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। মিঠুন চক্রবর্তী ও আয়েশা ঝুলকা অভিনীত এই ছবিটি কৌশল ভারতীর একটি ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল এবং সে বছরের অন্যতম বড় হিট হয়।
সেই ছবির কাজ করার সময়ই তিনি আবিষ্কার করেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। সেই থেকে পরিচয়। নায়িকাকে নিয়ে পর পর বেশ কয়েকটি হিট ছবিও তৈরি করেছিলেন তিনি। পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগও রেখে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এদিন সকালে পরিচালকের প্রয়াণের খবরে শোকস্তব্ধ অভিনেত্রী।
ঋতুপর্ণা বললেন, “পার্থদা একজন দারুণ মানুষ ছিলেন। খুব শান্ত-ঠাণ্ডা মানুষ ছিলেন। অন্যের সমস্যায় সবসময় পাশে থাকতেন। যে কোনও ক্ষেত্রেই তিনি সমস্যা দেখলে এড়িয়ে যেতেন না। বলতেন, ‘বসে কথা বলে দেখা যাক’। এই মায়া, এই ভালবাসাটা ওঁর মধ্যে বরাবর ছিল। আমি যখন চেন্নাইতে একটা বাংলা ছবির শুট করছিলাম, উনি আমায় খুঁজে নিয়েছিলেন। মিঠুন দার (মিঠুন চক্রবর্তী) সঙ্গে তখন ‘দালাল’ ছবির শুটে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। তখন আমি সবে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। পার্থদা আমায় দেখেছিলেন। এরপর যখন আমি কলকাতায় ফিরি, তখন তাঁর টিম থেকে আমায় জানানো হয়, আমি ওঁর সঙ্গে ছবি করছি। তখন আমি সম্পূর্ণ নতুন। প্রত্যেক ভীষণ ভাল ব্যবহার করেছিলেন আমার সঙ্গে।… মাঝে মধ্যেই আমাদের কথা হতো। যোগাযোগ ছিল। আচমকাই এই খবরটা পেলাম। পার্থদার স্ত্রী সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন। …আমি আশা করব পার্থদা যেখানেই আছেন ভাল আছেন। শান্তিতে আছেন। একজন দারুণ মনের মানুষ। আমি আশা করব, তুমি আবার যখন জন্ম নেবে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিহাস গড়বে। ভাল থেকো পার্থদা।”
২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মওসাম ইকরার কে, দো পাল পেয়ার কে’ ছিল তাঁর শেষ পরিচালিত ছবি। এই রোম্যান্টিক কাহিনিতে অভিনয় করেছিলেন মুকেশ জে. ভারতী, মাদালসা শর্মা ও অবিনাশ ওয়াধাওয়ান।
বলিউডে থ্রিলার এবং মনস্তাত্ত্বিক গল্প বলার ধরনে পার্থ ঘোষ রেখে গেলেন নিজস্ব ছাপ। তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
